BJP

BJP: মণ্ডলে রদবদল, পদ হারালেন দিলীপের ভাইও

১৮জন মণ্ডল সভাপতিদের মধ্যে পুরনো মুখ থাকলেন মাত্র তিন জন। সরলেন দিলীপ ঘোষের ভাই-সহ ১৫ জন। নামের তালিকা প্রকাশ হতে বিক্ষোভও শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২২ ০৬:১২
Share:

প্রতীকী ছবি।

গেরুয়া শিবিরেও ব্যাপক সাংগঠনিক রদবদল হল ঝাড়গ্রাম জেলাতেও। ১৮জন মণ্ডল সভাপতিদের মধ্যে পুরনো মুখ থাকলেন মাত্র তিন জন। সরলেন দিলীপ ঘোষের ভাই-সহ ১৫ জন। মণ্ডল সভাপতিদের নামের তালিকা প্রকাশ হতে ক্ষোভ-বিক্ষোভও শুরু হয়েছে। গেরুয়া শিবিরের শক্ত ঘাঁটি গোপীবল্লভপুর-১ মণ্ডলে বিদায়ী মণ্ডল কমিটির সদস্য, বিভিন্ন মোর্চা ও শক্তিকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা-নেত্রীদের একাংশ গণ-পদত্যাগ করেছেন বলে খবর। বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, সাংগঠনিক যোগ্যতার ভিত্তিতে পদ বন্টন করা হয়নি। জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠদেরই মণ্ডল সভাপতি করা হয়েছে। যদিও বিজেপির জেলা নেতৃত্বের দাবি, নতুন মণ্ডল সভাপতি হলে বুথ স্তর থেকে মণ্ডল স্তরে কমিটির পুনর্বিন্যাস করা হবে। ফলে এই পদত্যাগ অর্থহীন।

Advertisement

গত বছর মে মাসে গোপীবল্লভপুর-১ মণ্ডল সভাপতি নগেন সিং প্রয়াত হওয়ায় তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন সমরাই মুর্মু। বিজেপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছরের মেয়াদ পূরণের আগেই সেউ সমরাইকে সরানোয় ক্ষোভ রয়েছে। নতুন মণ্ডল সভাপতি করা হয়েছে তুহিনশুভ্র সাউকে। গোপীবল্লভপুর-২ মণ্ডলের সভাপতি পদ থেকে দিলীপ ঘোষের ভাই হীরক ঘোষকেও সরানো হয়েছে। তবে সেখানে নতুন মণ্ডল সভাপতি হয়েছেন ঘোষ পরিবারেরই ঘনিষ্ঠ মৃণালকান্তি সুই। মৃণালকান্তি ওই মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। হীরক বলছেন, ‘‘আমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় আমি সরেছি। জেলা কমিটির সদস্য হয়েছি। বিভিন্ন দল থেকে লোকজন আমাদের দলে এসেছেন। ফলে কারও কারও হয়তো সমস্যা হচ্ছে।’’ কেবল জেলা সভাপতি তুফান মাহাতোর ঘনিষ্ঠরাই মণ্ডল সভাপতি হয়েছেন এই অভিযোগও খারিজ করেছেন হীরক।

নয়াগ্রাম, চাঁদাবিলা, বেলিয়াবেড়া, রোহিণী, শালবনি, লোধাশুলি, লালগড়, বিনপুর, গিধনি, শিলদা, বেলপাহাড়ি, ঝাড়গ্রাম গ্রামীণ ও ঝাড়গ্রাম নগর মণ্ডলে সভাপতি পদেও নতুন মুখ আনা হয়েছে। কেবল সাতমা মণ্ডল সভাপতি পদে মুরলীধর ঘোষ, সাঁকরাইল মণ্ডল সভাপতি পদে জিতেন সিং ও জামবনি মণ্ডল সভাপতি পদে ভীম সরেন পুনর্বহাল হয়েছেন। এই তিনজনই দলের বহু পুরনো সংগঠক।

Advertisement

গত বছর বিধানসভা ভোটের আগে সুখময় শতপথীকে সরিয়ে তুফানকে বিজেপির জেলা সভাপতি করা হয়। বিধানসভায়শোচনীয় হারের পরে মণ্ডল স্তরের নেতা-কর্মীদের একাংশ তুফানের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আক্রান্ত ও ঘরছাড়া কর্মীদের পাশে জেলা সভাপতি দাঁড়াননি বলেও অভিযোগ তুফানের বিরুদ্ধে। তবে চলতি বছরের গোড়ায় তুফান ফের জেলা সভাপতি হন। ২৬ জানুয়ারি তিনি দলের নয়া জেলা কার্যকরী কমিটির তা‌লিকা প্রকাশ করতেই শুরু হয় ক্ষোভ-বিক্ষোভ। জেলা কার্যালয়ে তালা পর্যন্ত ঝোলানো হয়। ওই ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে চার নেতাকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল। এ বার মণ্ডলে রদবদল নিয়েও যে অসন্তোষ বাড়ছে তা দলেরই সাংসদ কুনার হেমব্রমের কথায় স্পষ্ট। কুনার বলছেন, ‘‘আমি তো সাংগঠনিক দায়িত্বে নেই। আমার কাছে যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁদের কথা উপর মহলে জানিয়ে দিচ্ছি।’’

তুফান এ দিন ফোন ধরেননি। তবে জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু বলছেন, ‘‘মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় দলের নিয়ম অনুযায়ী মণ্ডল সভাপতি পদ থেকে কেউ কেউ সরেছেন। ভোট পরবর্তী সাংগঠনিক ভূমিকার ভিত্তিতে নতুনদের জায়গা দেওয়া হয়েছে।’’ ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রসঙ্গে দেবাশিসের দাবি, ‘‘দু’-চারজন যাঁরা দল থেকে বহিষ্কৃত, মূলত তাঁরাই নানা অভিযোগ করছেন। ফলে তার কোনও গুরুত্ব নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement