ধর্মঘটে সুনসান ঝাড়গ্রামের স্টেশন রোড। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
ধর্মঘটে পশ্চিম মেদিনীপুরের কোথাও কোথাও সাড়া মিললেও অধিকাংশ এলাকাই ছিল স্বাভাবিক। তবে বুধবার সম্পূর্ণ ভিন্ন ছবি দেখা গেল ঝাড়গ্রামে। বিনপুর ছাড়া সর্বাত্মক প্রভাব পড়েছে জেলার অন্যত্র।
ধর্মঘটের সমর্থনে পথে নেমেছিলেন বামপন্থী কর্মীরা। এদিন জেলায় বেসরকারি বাস ও যাত্রীবাহী যানবাহন চলেনি। ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল ঝাড়গ্রাম প্রধান ডাকঘরও। ঝাড়গ্রাম শহরে এবং জেলার অন্যত্র দোকান-বাজার বন্ধ ছিল। তবে সরকারি বাস চলেছে। শহরে কিছু টোটো চলেছে এদিন। সরকারি অফিস খোলা ছিল। জেলা আদালত খোলা থাকলেও কাজকর্ম হয়নি। এদিন সকালে সর্ডিহা স্টেশনে হাওড়াগামী স্টিল এক্সপ্রেসকে ঘন্টাখানেক আটকে দেন ধর্মঘট সমর্থকরা। পরে অবশ্য ট্রেনযাত্রীদের আবেদনে অবরোধকারীরা সরে যান। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘সকাল ৮ টা ১০ মিনিট থেকে ৯ টা ১০ মিনিট পর্যন্ত ঘন্টাখানেক স্টিল এক্সপ্রেস সর্ডিহা স্টেশনে আটকে ছিল।’’
এদিন ঝাড়গ্রাম শহরে জোর করে রেজিস্ট্রি অফিস বন্ধ করার অভিযোগে সিটুর জেলা কমিটির সদস্য পার্থ যাদব সহ চার বাম নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সকালে অরণ্যশহরের কলেজ মোড়ে একটি সরকারি বাস আটকে দিয়েছিলেন ধর্মঘট সমর্থকেরা। জেলার ৮টি ব্লকেও সর্বাত্মক বন্ধের চেহারা ছিল। তবে ব্যতিক্রম ছিল বিনপুর এলাকা। সেখানে দোকান-বাজার খোলা ছিল। ধর্মঘটের সমর্থনে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় মিছিল করে বামেরা। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক পুলিনবিহারী বাস্কে, সিপিআইয়ের জেলা কমিটির সদস্য তথা এআইএসএফের রাজ্য সম্পাদক প্রতীক মৈত্র। শহর জুড়ে বাইক মিছিলও করে বামেরা। শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি খোলা ছিল। যদিও গ্রামীণ এলাকায় বেশ কিছু স্কুল খুলতে পারেননি কর্তৃপক্ষ।
নয়াগ্রাম ব্লকের খড়িকামাথানিতে রাস্তায় ধর্মঘটের সমর্থকরা রাস্তায় ব্যারিকেড করার চেষ্টা করলে পুলিশ তুলে দেয়। তবে এদিন ঝাড়গ্রাম জেলায় সেভাবে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ধর্মঘট ব্যর্থ করতে সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা নেতা গৌরাঙ্গ প্রধান, শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাহাতো পথে নেমেছিলেন। তবে দোকানপাট খোলানোর চেষ্টা করেননি তাঁরা। তৃণমূলের কয়েকজন কর্মী বলেন, ‘‘দলের নেতারাই নিজেদের দোকান, পেট্রোল পাম্প এদিন খোলেননি। তাহলে কোন মুখে মানুষকে জোর করে দোকান খোলাতে যাব বলুন তো!’’ জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী বিরবাহা সরেন বলেন, ‘‘এমন অভিযোগ আমাকে কেউ করেননি। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’