চলছে পরিদর্শন। নিজস্ব চিত্র
খাবারের মান যাচাই করতে ঘাটাল শহরে অভিযানে নামল খাদ্য সুরক্ষা দফতর। সংশ্লিষ্ট দোকানের খাবার বিক্রির বৈধ অনুমতি রয়েছে কি না দেখা হল সেটাও। বুধবার ঘাটাল শহরের কলেজ মোড়, হাসপাতাল লাগোয়া একাধিক খাবার দোকানে অভিযান হয়। অভিযানে ছিলেন জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান, ঘাটালের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দুর্গাপ্রসাদ রাউত, ঘাটালের খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক অরুণাভ বেরা।
এ দিন দুপুরে উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নেতৃত্বে খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিকরা বিভিন্ন হোটেলের রান্নাঘর পরীক্ষা করেন। কাঁচা মাল, ও তৈরি খাবার স্বাস্থ্য সম্মত ভাবে রাখা রয়েছে কী না, ফ্রিজে কাঁচা মাংস রয়েছে কি না এসব খুঁটিনাটি বিষয় গুলিতে নজরদারি চালানো হয়। সংগ্রহ করা হয় খাবারের নমুনা। প্রশাসন সূত্রে খবর, এ দিন ৫-৭টি দোকানে পরিদর্শন হয়। কোনও দোকান মালিকই প্রয়োজনীয় নথিপত্র দেখাতে পারেননি। খাবার ও রান্নাঘরের মান দেখেও সন্তুষ্ট হতে পারেননি খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিকরা।’’ উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “খাবার বিক্রি করলে লাইসেন্স নিতেই হবে। রাস্তায় ফুচকা বেচলেও লাইসেন্স করাতে হবে।”
খাদ্য সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ঘাটাল শহরে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় চার হাজার খাবারের দোকান রয়েছে। এর মধ্যে ‘ফুড লাইসেন্স’ রয়েছে আনুমানিক মাত্র ২০০টি দোকানে। অভিযোগ, কোনও অনুমতির পরোয়া না করেই ঘাটালে চলেছে খাবারের কেনাবেচা। নিয়ম বলছে, ২০০৬ সালে খাদ্য সুরক্ষা আইন অনুযায়ী লাইসেন্স কিংবা দফতরে নাম নথিভুক্ত ছাড়া কোনও খাবার বিক্রি করা যাবে না। সে রাস্তার ধারের ছোট দোকান হোক, কিংবা বড় হোটেল, রেস্টুরেন্ট। দু’রকম ভাবে লাইসেন্স হয়। বাৎসরিক ১২ লক্ষ টাকার মধ্যে যে সব দোকানে লেনদেন তাদের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা এবং তার অধিক লেনদেন হলে ২০০০ টাকা জমা দিতে হয়। দোকানের জমির তথ্য, ট্রেড লাইসেন্স,পাসপোর্ট ছবি, ভোটার বা আধার কার্ড দিয়ে আবেদন করতে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। কেউ নিয়ম না মানলে ২০০৬ সালে খাদ্য সুরক্ষা আইন অনুযায়ী, অভিযুক্তের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা ৬ মাসের জেলের সংস্থান রয়েছে।
তবে দোকান চালাতে হলে যে লাইসেন্স নিতে হয় এমন ধারণাও নেই অনেকের। শহরের খাবার ব্যবসায়ীদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে এমনই ছবি উঠে এসেছে। ঘাটালের খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক অরুণাভ বেরা বলেন, “এবার দ্রুতই নিয়ম কানুন মানাতে বাধ্য করা হবে। প্রয়োজনে লাইসেন্স নিতে এবং সচেতনতা বাড়াতে মেলা করা হবে।” জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা রবীন্দ্রনাথ বেরার কথায়, “সমস্ত খাবার দোকানের মালিকদের লাইসেন্স বা নথিভুক্ত করতে হবে। তা না হলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ঘাটাল পুরসভার চেয়ারম্যান বিভাস ঘোষ জানান, পুরসভার নজরদারি রয়েছে। খাদ্য সুরক্ষা দফতরকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করা হবে।