খড়গপুরে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ। প্রতীকী ছবি।
গর্তে মিলল বৃদ্ধের রক্তাক্ত দেহ। সেই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর লোকাল থানার অন্তর্গত পলশা অঞ্চলের জগৎপুর এলাকায়। বুধবার রাতে ওই এলাকার বাসিন্দা দুর্গাপদ টুডুকে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর আত্মীয়দের অভিযোগ, আগেই ডাইনি অপবাদ দেওয়া হয়েছিল দুর্গাকে। যদিও এর পিছনে ভিন্ন কোনও কারণ রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নিহতের ছেলে অবিনাশ টুডু বলেন, ‘‘কাল রাতে বাবার বাড়ি ফিরতে দেরি হচ্ছিল। আমরা খুঁজতে গিয়ে দেখি রাস্তায় রক্ত পড়ে রয়েছে। মাছ ধরার হাঁড়িটাও দেখতে পাই। আমরা বুঝতে পারি, বাবাকে কোথাও টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর পর গর্তের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় বাবার দেহটা দেখতে পাই।’’ অবিনাশের অভিযোগ, ‘‘এই কাণ্ডের হোতা যমুনালাল সোরেন এবং সেনাপতি সোরেন। বাবাকে ওরা খুন করেছে। অতীতে পুজোকে কেন্দ্র করে আমাদের মধ্যে বিবাদ তৈরি হয়। ওরা আমাদের ডাইনি অপবাদ দেয়। আমরা তখন ওদের কাছে প্রমাণ চাই। এর প্রতিবাদ করি। ওরা জোরজুলুম করত। কিন্তু আমরা তা মানতে চাইনি।’’ একই কথা বলছেন দুর্গার এক আত্মীয় সিমনা সোরেনও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শত্রুতার কারণেই খুন করা হয়েছে। ওঁকে (দুর্গা টুডু) ডাইনি অপবাদ দেওয়া হয়েছিল।’’
নিহতদের আত্মীয়দের সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্থানীয় তৃণণূল নেতা পলাশ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘এটা ডাইনি অপবাদ দিয়ে খুন করা হয়েছে। ওখানে টুডু বনাম সোরেনদের মধ্যে সঙ্ঘাত আছে। গত দু’তিন মাস আগে ডাইনি অপবাদ দিয়ে ওদের উপর আক্রমণ হয়েছিল। সেই সময় যারা আক্রমণ করেছিল তাদেরই এ বার চিহ্নিত করা হয়েছে।’’
পুলিশ ওই ঘটনায় রহিম সোরেন, সঞ্জয় মাণ্ডি এবং গোবিন্দ মাণ্ডি নামে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, ভারী কিছু দিয়ে খুন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ তবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, খুনের পিছনে ডাইনি অপবাদ দেওয়ার কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। জমি বা পুকুরের দখল সংক্রান্ত কোনও সমস্যা থেকে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।