রামনগরে দলীয় কর্মসূচিতে দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র kamilasuvendu21@gmail.com
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে গিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে আগাগোড়া দলের সংগঠনকে মজবুত করার নিদান দিলেন সাংসদ তথা বিজেপির র্সব ভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
‘বুথে বুথে দলীয় কর্মীদের বাড়ি গেলে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে। তাঁরা বলতেই পারেন, এতদিন কোথায় ছিলেন? যখন আমরা কেস খেয়েছিলাম। এখন দেখতে এসেছেন আমরা বেঁচে আছি, কি মরে গেছি। তখন তাঁদের বোঝাতে হবে আমিও তোমার মতো অত্যাচারিত। তবে আমি আজ তোমার বাড়ি এসেছি। তুমি কিন্তু আমার বাড়ি যাওনি। যাই হোক সকলকেই বিজেপি করতে হবে’। বৃহস্পতিবার থেকে দু’দিনের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সফরে এসে দলের নেতাদের এমনই বার্তা দিলেন দিলীপ। এদিন বিকেলে প্রথমে রামনগরে দলের কর্মীদের নিয়ে মিটিং করেন দিলীপ।
সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের পাল্টা জনসংযোগ কর্মসূচি হিসেবে 'বুথ স্বশক্তিকরণ’ কর্মসূচি শুরু করেছে বিজেপির বঙ্গ ব্রিগেড। কিন্তু বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিজের জেলাতেই সেই কর্মসূচি ধীরগতিতে চলছে বলে গেরুয়া শিবিরের একাংশের দাবি। যাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁরা ঠিকমতো তা পালন করছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে দলের অন্দরেই। এদিন সেই প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘যাঁরা বুথ স্বশক্তিকরণ কর্মসূচিতে যাচ্ছেন না। জেনে রাখুন তাঁরা আগামী দিনে পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা, কোনও ভোটেই দলের টিকিট পাবেন না। এটাই আপনাদের কাছে নিজের সাংগঠনিক ক্ষমতা দেখানোর সুযোগ। বাড়ি বাড়ি যেতে হবে আপনাদের। যাঁরা নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে দেখা করে বোঝাতে হবে।’’
শাখা সংগঠন থেকে কী ভাবে দলের নেতা হওয়া যায় তার রূপরেখা এ দিন তুলে ধরেন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘‘দুটো-চারটে ভাষণ দিলে নেতা হওয়া যায় না। আমাদের পার্টিতে অটলজী, মোদিজী অনেক ভাল বক্তব্য রাখেন। বুথের একজন নেতা সুযোগ পেলে মাইক নিয়ে ফাটিয়ে দেবেন। কিন্তু নেতা হতে গেলে বাড়ি বাড়ি জনসংযোগ করতে হবে।’’
তৃণমূলের নব জোয়ার কর্মসূচিকে কটাক্ষ করে দিলীপ বলেন, ‘‘যাঁদের দলে নেতার অভাব, তাঁরা তাঁবু খাটিয়ে আজ রাস্তায় বেরিয়েছেন।’’ এদিন দিলীপের কর্মসূচিতে রামনগর বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল এবং সিপিএম থেকে ৫০ জনের বেশি বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁদের হাতে দলের পতাকা তুলে দেন মেদিনীপুরের সাংসদ।
তবে দিলীপের বক্তব্যকে হাতিয়ার করে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূলও। তৃণমূলের কাঁথি সংগঠনিক জেলা সভাপতি তরুণ মাইতি বলেন, ‘‘দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো আমাদের দলের সবস্তরের নেতা সারা বছর সাধারণ মানুষের পাশে থাকেন। কিন্তু বিজেপি নেতাদের তো ভোটের সময় শুধু দেখা যায়। তাই দিলীপবাবু যাই বলুক না কেন তাঁর দলের নেতারা এখন বাড়ি বাড়ি গেলে প্রশ্নের মুখে তো পড়বেনই।’’