তমলুক শহরে ফাইভ স্টার ক্লাবে কালীপুজোর উদ্বোধনে জমায়েত। নিজস্ব চিত্র।
কালীপুজো ও জগদ্ধাত্রী পুজোর মণ্ডপে ভিড় আটকাতে প্রশাসনকে পদক্ষেপ করতে হবে বলে বুধবার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর তমলুক শহরে বিগ বাজেটের কালীপুজো সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিভিন্ন ক্লাব। সেজন্য কালীপুজোর মণ্ডপে দর্শকদের ভিড় জমে। যদিও করোনার সতর্কতা বিধি মেনে এবার কালীপুজোয় মণ্ডপে ভিড় এড়াতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু আদালত ও পুলিশের সেই নিষেধাজ্ঞা ভেঙেই তমলুক শহরের হাসপাতাল মোড়ে ফাইভ স্টার ক্লাবের কালীপুজোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার সামিল হলেন কয়েক হাজার মানুষ।
সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খোদ রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, তমলুক পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় সহ তৃণমূলের একাধিক নেতা। ক্লাবের সভাপতি পদে রয়েছেন তমলুক শহর তৃণমূল সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া। তমলুক জেলা সদর হাসপাতাল সংলগ্ন হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের ধারে ওই কালীপুজোর উদ্বোধন ছিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। অনুষ্ঠানে রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ছাড়াও ছিলেন টিভি সিরিয়ালের এক জনপ্রিয় অভিনেতা। অভিযোগ, মণ্ডপের কাছেই ওই কালীপুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সময় কয়েক হাজার মানুষের জমায়েত হয়েছিল সামাজিক দূরত্ব বিধি ভেঙে। আর জমায়েতে হাজির অনেকেরই মুখে ‘মাস্ক’ ছিল না। যা নিয়ে শহরের বাসিন্দাদের অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
করোনার সতর্কতা বিধি ভেঙে মণ্ডপের সামনেই লোকজনের জমায়েত হওয়ার কথা অস্বীকার করে ক্লাবের সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া বলেন, ‘‘পুজোর উদ্বোধন উপলক্ষে কিছু দর্শক মণ্ডপে এসেছিলেন। তবে জমায়েত হয়নি। সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই দর্শকরা মণ্ডপের কাছে ছিলেন।’’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত তমলুক পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, ‘‘ক্লাবের আমন্ত্রণে ওই পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। তবে অনুষ্ঠান মঞ্চের সামনে এত দর্শকের ভিড় হবে জানা ছিল না। এবিষয়ে আরও সতর্ক হওয়ার জন্য ক্লাব কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’
অন্যদিকে নন্দকুমার থানার কাছেই নন্দকুমার হাইস্কুল ময়দানে ‘আলেয়া’ ক্লাবের কালীপুজো উপলক্ষে মণ্ডপের সামনেই জমজমাট মেলা বসেছে বলে অভিযোগ। মেলায় দোকানপাট ছাড়াও নাগরদোলা বসেছে। বুধবার সন্ধ্যায় ওই পুজোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছিলেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি এবং ক্লাবের কালীপুজো উৎসব কমিটির সভাপতি তথা স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার দে। এভাবে থানার কাছেই কালীপুজো উপলক্ষে নিয়ম ভেঙে মেলার আয়োজন নিয়ে বাসিন্দারা পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কালীপুজো উপলক্ষে মেলা বসানোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নন্দকুমারের ওই কালীপুজোর মণ্ডপের সামনে মেলা বসানোর অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’