লাইফ জ্যাকেট ছাড়া দিঘিতে নৌকাবিহার। নিজস্ব চিত্র
সবাই চেনে বড় দিঘি নামে। আনলক পরিস্থিতিতে মহিষাদল রাজবাড়ির জানকীনাথ মন্দিরের কাছে এই দিঘিতেই এখন বিনোদনের নামে জীবন ঝুঁকি নিয়ে নৌকাবিহার শুরু হয়েছে। নিরাপত্তার নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে চলছে বোটিং-বিনোদন। প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনিক নজরদারি নিয়ে।
সোমবার দেখা গেল, একটি বোটে চেপেছেন ছয় জন। তার মধ্যে দুই নাবালকও রয়েছে। অথচ বোটিং স্থলে স্পষ্ট সতর্কবার্তা রয়েছে, ‘একটি বোটে চাপবেন চারজন। সঙ্গে অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট নিতে হবে। আর নিতে হবে বাঁশি। বিপদে পড়লে বাঁশি বাজাতে হবে’। কুড়ি মিনিট চাপলে কুড়ি টাকা। কিন্তু কোথায় কী! বিনা লাইফ জ্যাকেটেই বোটিং করতে দেখা গেল লোকজনকে। কেন লাইফ জ্যাকেট দিচ্ছেন না? দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মী জানালেন, অনেকেই এ সব পরতে চান না। নিয়ম না মেনেই কি তবে বোটে বসা যায়? নিরুত্তর ওই কর্মী।
বোটিং-এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘জয় রাইড’। পর্যটন দফতরের উদ্যোগে বছর দুই আগে এই ব্যবস্থা চালু হয়।গোটা বিষয়টির ব্যবস্থাপনায় রয়েছে মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতি। মহিষাদল রাজবাড়িতে যে সব পর্যটক ঘুরতে আসেন তাঁরা এখন রাত্রিবাস করতে পারেন এখানে। রয়েছে রাজবাড়ির মিউজিয়ামের আকর্ষণ। তার সঙ্গে বাড়তি পাওনা হিসেবে যুক্ত হয়েছে বড় দিঘিতে বোটিং। কিন্তু সেখানে নিরাপত্তার এমন হাল নিয়ে প্রশ্ন এই বিষয়ে মহিষাদলের বিডিও যোগেশচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘মাত্র কয়েকদিন হল এখানে দায়িত্ব নিয়েছি। বিষয়টি অবশ্যই খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘করোনার কারণে দীর্ঘ দিন এ সব বন্ধ ছিল। সম্প্রতি খোলা হয়েছে। লাইফ জ্যাকেট নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করা হয়। তবু অনেকেই করোনার কারণে পড়তে চান না।’’ স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ বাগের কথায়, ‘‘আমরা স্থানীয়রা জানি কতটা গভীর এই বড় দিঘি। শীতের শুরুতেই বহু মানুষ এখানে বেড়াতে আসেন। বোটিং করেন। এভাবে চললে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রশাসনের অবশ্যই এটাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার। প্রয়োজনে সিভিক ভলান্টিয়ার রাখতে হবে।’’