পার্কে বিশালাকার দাবার বোর্ড। নিজস্ব চিত্র।
বিশালাকার দাবা বোর্ডে সাজানো রয়েছে দাবার ঘুঁটি। দাঁড়িয়ে রয়েছে রাজা, মন্ত্রী, হাতি, ঘোড়া আর সেনার দল— আর এভাবেই পর্যটকদের সেজে উঠছে দিঘা।
‘ইয়াস’ ঘূর্ণিঝড়ে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে লন্ডভন্ড হয়েছিল দিঘা। সেই ঝড়ের মাস কয়েক পরে বর্তমানে ধীরে ধীরে সেজে উঠছে পূর্ব মেদিনীপুরের সৈকত শহর। সৈকতাবাস লাগোয়া বিশ্ববাংলা উদ্যানের পাশের পার্কটিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বসানো হয়েছে নতুন নতুন বাতিস্তম্ভ। শিশুকর্নারে বসানো হয়েছে আধুনিক রাইড। সেখান থেকে উপভোগ করা যাবে সমুদ্রের ঢেউয়ের আনাগোনা।
গত ২৬ মে ইয়াসে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল দিঘা, মন্দারমণি, শঙ্করপুর এবং তাজপুর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে পুজোর আগে থেকেই সেই সব ক্ষত সংস্কার এবং সৈকত শহরকে নতুন রূপে সাজিয়ে তুলতে উদ্যোগী হয় ‘দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ’ (ডিএসডিএ)। তাতেই পুরো ভোল বদলে গিয়েছে সৈকত শহরের। এখন আঁচ করার উপায়টুকু নেই যে, মাস ছয়েক আগে সৈকত শহর সৌন্দর্যায়ন গ্রাস করেছিল জলোচ্ছ্বাস।
ইয়াসের পরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন তিন ধাপে দিঘাকে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলা হবে। প্রথমে সৈকতের ধারে যে সব ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করছেন, তাদের ভ্রাম্যমাণ স্টল তুলে দেওয়া হয়। তারপর ইয়াসের ক্ষত সংস্কার এবং সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হয়। এর জন্য ১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ওই টাকাতেই নতুন রূপে সেজে উঠেছে দিঘা এবং মন্দারমণি। সৈকত সরণিতে নামা ধস এবং ফুটপাতের মেরামতির কাজ করছে সেচ দফতর। বাকি রাস্তা, আলো আর সৌন্দর্যায়নের কাজকর্ম করছে ডিএসডিএ। নিউ দিঘাতেও সাজানো হয়েছে ঢেউ সাগর পার্ক। সেখানে টয় ট্রেন চালু হয়েছে। সাংস্কৃতিক মঞ্চের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বড়দিন আর ইংরাজি নতুন বছর শুরুর আগে সেজেছে দিঘা, মন্দারমণি।
শীত কিছুটা বাড়তেই উপকূলবর্তী পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে ভিড় বাড়ছে। দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আগের শনি এবং রবিবার তিল ধারনের সুযোগ ছিল না। রবিবারও বেশ ভালই ভিড় হয়েছে। বড়দিন এবং ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে কয়েকদিন সমস্ত হোটেলে বুকিং সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে আশাবাদী।’’
পর্যটকের ভিড়ে জমজমাট মন্দারমণিও। সেখানকার এক খেলনা বিক্রেতা অশোক পণ্ডা বলছেন, ‘‘জ়ওয়াদ ঝড়ের সময় বিক্রি একেবারেই ছিল না। তবে গত দু-তিন দিন ধরে প্রচুর পর্যটক এসে কেনাকাটা করছেন।’’