ফাইল চিত্র
ক্ষমতায় আসার পর থেকে সৈকত শহর দিঘাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ধাপে ধাপে উন্নয়নের মোড়কে ঢেকে দিয়েছে রাজ্য সরকার। বড় বড় হোটেল, বিনোদন কেন্দ্র, ঝাঁ-চকচকে রাস্তাঘাট সবকিছুই হয়েছে। কিন্তু এত সবের মাঝে দিঘায় সৈকত নালার গুরুত্বকে সযত্নে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
সামান্য বৃষ্টিতেই হাসপাতাল ঘাট থেকে মাইতি ঘাট পর্যন্ত বিরাট এলাকা জুড়ে জল জমে যায়। জল না সরার কারণে ঝাউবন ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে। এলাকায় একটি খেলার মাঠ রয়েছে। কিন্তু সেখানেও জল জমে থাকায় খেলাধূলাও বন্ধ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওল্ডদিঘা থেকে নিউ দিঘার দত্তপুর পর্যন্ত সৈকতের ধার বরাবর প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ একটি প্রাকৃতিক নালা ছিল। সেই নালা দিয়ে বৃষ্টির জল গিয়ে পড়ত সমুদ্রে। কিন্তু ওল্ড দিঘায় একের পর এক হোটেল তৈরি হতে থাকায় নালার চরিত্র ও গঠনতন্ত্রটাই পাল্টে যায়। বিভিন্ন হোটেলের নোংরা জল, বর্জ্য ওই নালায় ফেলা হত বলে অভিযোগ। ক্রমশ মজে গিয়ে তা নর্দমায় পরিণত হয়। ওল্ড ও নিউ দিঘার মধ্যে মাইতি ঘাট থেকে হাসপাতাল ঘাট হয়ে জগন্নাথ ঘাট পর্যন্ত এখনও চোথে পড়বে নালার অস্তিত্ব। দিঘা মেরিন অ্যাকোয়ারিয়ামের দক্ষিণ দিকের প্রাচীর তৈরির সময় হাসপাতাল ঘাটের ব্রিজের সামনে নালার গতিপথ অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আর তাই আমপানের পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও বিরাট এলাকা জুড়ে ঝাউবনে এখনও জল দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফলে মারা যাচ্ছে ঝাউ গাছ। বন বিভাগ এবং দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের (ডিএসডিএ)এর পক্ষ থেকে সমস্যার সমাধানে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয় পরিবেশপ্রেমী সত্যব্রত দাস বলেন, ‘‘ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিজ্ঞানভত্তিক উন্নয়ন হোক। স্বল্প সময়ে অধিক অর্থ উপার্জন করতে গিয়ে দিঘার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলি হারিয়ে ফেললে সমূহ বিপদ।’’ স্থানীয়দের দাবি বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ কর্তৃপক্ষ। রামনগর-১ এর বিডিও বিষ্ণুপদ রায় বলেন, ‘‘আগামীকাল সৈকত শহরের তিনটি নিকাশি নালা সরেজমিন তদন্ত করে দেখব। নিকাশি নালাগুলি মজে গিয়ে থাকলে অবশ্যই সংস্কার করা হবে।’’