পরীক্ষার আগে রোল নম্বর মিলিয়ে নেওয়া। তমলুক হ্যামিল্টন স্কুুলের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রে। নিজস্ব চিত্র
কর্মসূচির আগে দলীয় নেতৃত্ব জানিয়েছিলেন মাইক বা সাউন্ড বক্স বাজানো হবে না নন্দীগ্রাম দিবসে। বাস্তবে দেখা গেল উল্টো ছবি। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনেই তৃণমূলের কর্মসূচিতে মাইক বাজল। অন্যদিকে, বিজেপির কর্মসূচিতে জমায়েতের জন্য পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে যেতে গিয়ে যানজটের মুখেপড়তে হয়।
মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। এদিকে, ১৪ মার্চ নন্দীগ্রাম দিবসে প্রতি বছর তৃণমূল এবং বিজেপির তরফে শহিদ স্মরণ করা হয়। এ দিন গোকুলনগরের অধিকারী পাড়ায় সকাল ৯টা নাগাদ শহিদ বেদিতে মাল্যদান করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি তরফে সোনাচূড়ার শহিদ মিনারেও অনুষ্ঠান হয়। বিরোধী দলনেতার সঙ্গেই অন্তত ৫০ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্য এলাকায় আসে। এদিকে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয় সকাল ১০টায়। গোকুলনগররের অধিকারী পাড়ার পার্শ্ববর্তী এলাকার অধিকাংশ পরীক্ষার্থীরা শহিদ বেদি সংলগ্ন রাস্তা ব্যবহার করে কেন্দ্রে যায়। ওই সময় তেখালি-সোনাচূড়ার সঙ্কীর্ণ সড়কে অন্তত ১৫টি ট্রেকার, সংবাদ মাধ্যমের ১০টি গাড়ি, শুভেন্দুর কনভয়ের গাড়ি ছাড়াও শ’তিনেক বিজেপি কর্মী-সমর্থক সেখানে ছিলেন। ওই ভিড়ে সবমিলিয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এর মধ্যেই ঢুকে পড়ে পরীক্ষার্থীদের একটি টোটো। কিছু সময় যানজটে আটকে থাকার পর বিজেপি কর্মীদের সহযোগিতায় ওই টোটোটি বার করিয়ে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার জেলা সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে আইন মেনে আমরা শহিদ স্মরণসভা করেছি।’’
বিজেপির অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে তৃণমূলের তরফে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করা হয় এবং ভাঙাবেড়িয়াতে একটি জনসভার আয়োজন করা হয়। সেখানেও তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় মাইক বাজানো হয়েছে দাবি স্থানীয়দের। ওই কর্মসূচিতেও ভাঙাবেড়ার রাস্তায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। এর ফলে খেজুরির কিছুটা অংশ, ভাঙাবেড়া এলাকার যে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল, তারা কিছুটা সমস্যায় পড়েন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নন্দীগ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘শহিদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা আর কারও নেই। এটা একটা রাজনৈতিক লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তার ফল ভোগ করতে হয় সাধারণ মানুষকে।’’
উল্লেখ্য, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য মাইক বাজানো যাবে না বলে রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তৃণমূলের জনসভায় দেদার মাইক ব্যবহারের ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর একাংশ। তাদের অভিযোগ, পরীক্ষা চলাকালীন রীতিমত বক্স বাজিয়ে, মাইক নিয়ে তৃণমূলের অনুষ্ঠান চলছে। অথচ রাজ্য সরকারই মাইক ব্যবহার করার ব্যাপারে বিধি নিষেধ জারি করেছে। যদিও ওই অনুষ্ঠানে হাজির থাকা অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সাফাই, ‘‘মাইক ব্যবহার করা হয়নি। মাইকের চোঙ অনুষ্ঠানে ছিল না।’’