Nabanna

Jangal Mahal: ক্ষোভের বীজ কি দুর্নীতিতে? নবান্নর নজর জঙ্গলমহলে

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে জেলার ৭৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ২৫টিতে জিতেছিল গেরুয়া শিবির। একটি পঞ্চায়েত পেয়েছিল বামেরা।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২২ ০৭:২৭
Share:

পাশাপাশি। কৃষ্ণচূড়া ও রাধাচূড়া। মেদিনীপুর আদালত চত্বরে। নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েত স্তরে ও নেতৃত্বের একাংশের দুর্নীতির কারণেই কি জঙ্গলমহলে দানা বাঁধছে অসন্তোষ? সরাসরি খোঁজ নিচ্ছে নবান্ন।

Advertisement

সূত্রের খবর, রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ স্তরের নির্দেশে প্রতিনিধি পাঠিয়ে চলছে সুলুক সন্ধান। ইতিমধ্যে নবান্নের কয়েকজন প্রতিনিধি দু’দফায় ঝাড়গ্রাম জেলায় এসে পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে গিয়েছেন। কয়েকজন নেতা, নেত্রী ও জনপ্রতিনিধির সম্পর্কে তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলা ও ব্লকস্তরে তৃণমূলের দলীয় পদে রদবদলের সম্ভাবনা রয়েছে।

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে জেলার ৭৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ২৫টিতে জিতেছিল গেরুয়া শিবির। একটি পঞ্চায়েত পেয়েছিল বামেরা। বাকি ৫৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করেছিল তৃণমূল। পরে দল ভাঙিয়ে ও অনাস্থা এনে বেশিরভাগ গ্রাম পঞ্চায়েতের রাশই এখন তৃণমূলের হাতে। তবে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে পঞ্চায়েতস্তরে পরিষেবা দানে খামতির অভিযোগ রয়েছে। নেতা-জনপ্রতিনিধিদের আচরণ নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ। দুর্নীতি ও স্বজনপোষণেই গত পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলের খারাপ ফলের ব্যাখ্যা দলীয় পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছিল। তবে গত বছর বিধানসভা ভোটে জেলার চারটি আসনেই তৃণমূল বড় জয় পেয়েছে। ভোটের পরে জেলা সভাপতি পদ থেকে দুলাল মুর্মুকে সরিয়ে সেই পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দেবনাথ হাঁসদাকে। কিন্তু শাসকদলের গোষ্ঠী বিভাজন ও নেতা-নেত্রীদের পারস্পরিক দ্বন্দ্বে সাংগঠনিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে বলে খবর।

Advertisement

রয়েছে দুর্নীতির নানা অভিযোগও। বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে অস্থায়ী কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য টাকা লেনদেনের অভিযোগও উঠেছে। পাশাপাশি বেআইনি বালি ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন শাসকদলের কেউ কেউ। বিরোধী দলের লোকজনও বালি-কাণ্ডে যুক্ত বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে কাজের লোকেদেরই বেছে নিতে চান তৃণমূলের শীর্ষমহল। সূত্রের খবর, সংগঠনে রদবদলের আগে জেলার প্রকৃত চিত্রটা নিজস্ব নেটওয়ার্কে দেখতে চান স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী। এবং তিনি যে সন্তুষ্ট নন, সেটা বুধবার নবান্নের সভাঘর থেকে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলার সময়ই স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর তথ্যের সঙ্গে প্রশাসনের তথ্যের ফাঁক রয়েছে বলে জানান তিনি। জঙ্গলমহলে মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টারের পিছনে অবশ্য বিজেপিকে অভিযুক্ত করেছেন মমতা।

রাজ্য তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, ‘‘জঙ্গলমহলকে ভাল রাখতে মুখ্যমন্ত্রী সব সময়ই তৎপর। তাই জঙ্গলমহল সম্পর্কে তিনি নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন।’’ জেলা তৃণমূলের এক নেতাও মানছেন, ‘‘কিছুদিন আগে নবান্ন থেকে কয়েকজন প্রতিনিধি জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে গিয়েছেন বলে শুনেছি। পরে আরও এক-দু’জন এসেছিলেন। যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা সরাসরি সরকারি আধিকারিক নন। তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব পেয়ে এসেছিলেন বলেই জানি।’’ তৃণমূলের এক সূত্রের খবর, জেলার সাংগঠনিক রদ বদলের বিষয়টি স্বয়ং নেত্রী দেখছেন। ঝাড়গ্রাম সফরে আসার আগে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement