প্রতীকী ছবি।
জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়াল। মহিষাদলের কাপাসএড়্যা এলাকায় ওই স্কুলে শুক্রবার এই ঘটনায় ছাত্রের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দকুমার থানার সাওড়াবেড়িয়া জালপাই গ্রামের রাহুল গিরি নামে বছর ষোলোর ওই কিশোর জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত। বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই ছাত্রাবাসে থাকত ওই ছাত্র। বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়াদাওয়ার পরে সে ঘুমোতে চলে যায়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ এক সহপাঠীর সঙ্গে শৌচাগারে গিয়েছিল রাহুল। ফিরে এসে ফের ঘুমিয়ে পড়ে সে। ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ রুটিন মাফিক ছাত্রছাত্রীদের শরীরচর্চার জন্য মাঠে হাজির থাকতে হয়। কিন্তু রাহুল না যাওয়ায় শারীরশিক্ষার শিক্ষক ছাত্রাবাসে খোঁজ নিতে এসে দেখেন সে বেহুঁশ অবস্থায় বিছানায় পড়ে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা তাকে দ্রুত বাসুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে রাহুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে খবর পেয়ে রাহুলের বাবা হাসপাতালে যান। ছাত্রাবাসে ছেলের মৃত্যু নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন রাহুলের বাবা অমল। তিনি বলেন, “ছেলের কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না। আমাকে সকাল সাড়ে ৬ টা নাগাদ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফোন করে জানায় ছেলে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে। মহিষাদল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আমি হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারি ছেলে মারা গিয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, একজন অল্পবয়সী ছেলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যেতে পারে না। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছিল। আমি চাই প্রশাসন এই ঘটনার তদন্ত করুক।’’
বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ (প্রিন্সিপ্যাল) মুদিত সাক্সেনা বলেন, ‘‘ছাত্রাবাসে রাহুলের সাথে ২৪ জন সহপাঠী ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে অন্যদের সাথে রাহুল খাওয়ার পরে ঘরে শুতে চলে যায়। রাত ১১টা নাগাদ ‘অ্যাসোসিয়েটেট হাউস মাষ্টার’ ওদের ঘরে ভিজিটে গিয়েছিলেন। তখন রাহুল-সহ সবাই ঠিকঠাক ছিল। রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ অন্য এক ছাত্রের সাথে রাহুল শৌচাগারে গিয়েছিল। ফিরে এসে ঘুমিয়ে পড়ে। ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ রাহুল শরীর চর্চার জন্য মাঠে না যাওয়ায় শারীর শিক্ষক ছাত্রাবাসে এসে দেখেন সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে রয়েছে। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা করে রাহুল মৃত বলে জানান।’’ তিনি জানান, রাহুল গত ২৫ জুলাই বাড়ি থেকে ছাত্রাবাসে ফিরেছিল। তার শারীরিক কোনও সমস্যা ছিল না।
পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্রের মৃত্যুর কারণ জানতে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ওই স্কুলে ছাত্রাবাসে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় প্রশাসনিক স্তরেও তদন্ত হচ্ছে।