Muslim Potter makes Hindu idol

প্রতিমা আনতে মুসলমান ইসমাইলের দরবারে ভিড় হিন্দুদের, ‘জাদুকর’ মৃৎশিল্পীর গড়া মূর্তিতে পুজো পান কালী

সারা বছরই মূর্তি গড়েন ইসমাইল। তবে বছরের এই বিশেষ সময়ে তাঁর ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে। ক্রেতাদের হাতে সময়ের আগে প্রতিমা তুলে দিতে নাওয়াখাওয়া ভুলে প্রতিমা গড়েন ইসমাইল এবং তাঁর পরিবার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

নাড়াজোল শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৩৫
Share:

মূর্তি গড়ছেন ইসমাইল চিত্রকর। —নিজস্ব চিত্র।

সামনেই কালীপুজো। ব্যস্ততা তুঙ্গে মৃৎশিল্পীদের। সময়ের আগে কাজ শেষ করতে রাত জেগে চলছে মূর্তি গড়া, রং করার কাজ। একই রকম ব্যস্ততা পশ্চিম মেদিনীপুরের মুসলিম ধর্মাবলম্বী এক মৃৎশিল্পীর বাড়িতেও। নাম, ইসমাইল চিত্রকর। বাড়ি, দাসপুর এক নম্বর ব্লকের নাড়াজোল এলাকায়। হাফ হাতা পাঞ্জাবি, লুঙ্গি পরে নিপুণ হাতে সারা দিন কালী মূর্তি গড়ে চলেছেন ষাটোর্ধ্ব ইসমাইল। নাড়াজোল এলাকায় এ ভাবেই প্রায় ৪৩-৪৪ বছর ধরে প্রতিমা গড়ার কাজ করে চলেছেন তিনি।

Advertisement

মুসলিম ধর্মাবলম্বী হলেও হিন্দু দেবদেবীদের মূর্তি গড়ার জন্য এলাকায় জনপ্রিয়তা রয়েছে ইসমাইলের। স্থানীয়দের কেউ কেউ বলেন, ‘‘ইসমাইলের হাতে জাদু রয়েছে।’’ তাই ছোট-বড় সব পুজোর আগেই ইসমাইলের দরবারে ভিড় জমান এলাকার অনেক মানুষ। তাঁর হাতে গড়া প্রতিমার ক্রেতার তালিকায় রয়েছে স্থানীয় কয়েকটি ক্লাবও।

সারা বছরই মূর্তি গড়েন ইসমাইল। তবে বছরের এই বিশেষ সময়ে তাঁর ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে। ক্রেতাদের হাতে সময়ের আগে প্রতিমা তুলে দিতে নাওয়াখাওয়া ভুলে প্রতিমা গড়েন ইসমাইল এবং তাঁর পরিবার। ইসমাইল জানান, পাঁচ পুরুষ ধরে তাঁর পরিবার প্রতিমা তৈরির সঙ্গে যুক্ত। তাঁর হাতেখড়ি হয়েছে বাবার কাছে। ১৬-১৭ বছর বয়স থেকে প্রতিমা গড়ার কাজে হাত লাগিয়েছেন তিনি। এখন বয়স হয়ে যাওয়ায় আগের মতো কাজ করতে পারেন না। তাই সহযোগী হিসাবে হাতে হাত লাগিয়ে কাজ করে দুই মেয়ে এবং স্ত্রী।

Advertisement

মুসলমান ইসমাইলের হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি তৈরিকে দুই ধর্মের মেলবন্ধনের এক নজির বলে মনে করেন এলাকার মানুষেরা। তাঁর হাতে গড়া লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী এবং কালী প্রতিমা ডেবরা, ঘাটাল, চন্দ্রকোনা-সহ আশপাশের বহু এলাকায় বিক্রি হয়। প্রতিমা তৈরির ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন পটচিত্র, মাটির রকমারি পুতুল, রঙিন ভাঁড়ও তৈরি করেন তিনি। ইসমাইল জানিয়েছেন, প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার সময় হিন্দু বাড়ি থেকে নেমন্তন্নের ডাকও আসে তাঁর কাছে। সেই নেমন্তন্ন রক্ষাও তিনি করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement