ভারতী পেলেন দলের রাজ্য সহ-সভানেত্রীর দায়িত্ব। নিজস্ব চিত্র।
দলে পদ পেতে পারেন ভারতী ঘোষ— মেদিনীপুরের রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছিলই। কানাঘুষো শোনাও যাচ্ছিল যে, মহিলা মোর্চা বা দলের অন্য শাখা সংগঠনের দায়িত্ব পেতে পারেন পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার। মঙ্গলবার জল্পনা মিটল। তবে মহিলা মোর্চা বা শাখা সংগঠন নয়, কয়েক মাস আগে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া ভারতী পেলেন দলের রাজ্য সহ-সভানেত্রীর দায়িত্ব। মঙ্গলবার এই ঘোষণা হয়েছে।
একটা সময় পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলে কটাক্ষ করা হত ভারতীকে। তিনি তখন জেলার পুলিশ সুপার। সেই পদে থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন ভারতী। পরে পরিস্থিতি বদলায়। সোনা মামলা নাম জড়ায়, যায় পুলিশ সুপারের পদও। পরে বিজেপিতে যোগ দিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধেই লড়াইয়ে নামেন ভারতী। লোকসভা ভোটে ঘাটালে প্রার্থী হয়ে দেবের কাছে হেরেছেন। তবে মাঠ ছেড়ে যাননি। বারবার এসেছেন ঘাটালে, কেশপুরে। পদপ্রাপ্তিতে তাঁর ওই লড়াইয়েরই স্বীকৃতি মিলল, জল্পনা চলছে গেরুয়া শিবিরে।
ভারতী নিজে বলছেন, ‘‘দল দায়িত্ব দিয়েছে মানে, ভরসা রেখেছে। আমি যতটা পারব স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্বটা পালন করার চেষ্টা করব।’’
যখন জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন, তাঁর দাপট ছিল সর্বজনবিদিত। বিজেপি প্রার্থী হিসেবে ভোটের প্রচারে এবং ভোটের পরেও তাঁর ‘পুলিশি’ মেজাজ দেখা গিয়েছে বারবার। কখনও কেশপুরে এসে পুলিশকে, কখনও তৃণমূলের কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এক সময় যে কেশপুর তাঁর খাসতালুক ছিল, সেখানে এসে বলেছেন, ‘‘কেশপুর আমার অগ্রাধিকার। যতটা পারব, নজর দেব। যতটা করার করব।’’
‘এলাকা হারিয়ে’ও মাটি কামড়ে পড়ে থাকা ভারতীর লড়াইটা দেখেছে জেলাবাসী। ভারতীর নামটার সঙ্গেই যেন জুড়ে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। সেই জেলার লড়াই থেকেই দলের রাজ্য সহ-সভানেত্রীর পদ পাওয়া তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শমিত দাস বলেন, ‘‘সন্ত্রাসের মধ্যেও লোকসভা ভোটে উনি যে ভাবে লড়াই করেছেন তা প্রশংসার যোগ্য। এখন উনি দলে পুরো সময় দিচ্ছেন। দল যোগ্য মনে করেছে তাই ওই দায়িত্ব দিয়েছে।’’
তৃণমূল অবশ্য এ নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কথায়, ‘‘এটা বিজেপির ভিতরের ব্যাপার। আমাদের কোনও মন্তব্য নেই।’’