প্রতীকী ছবি।
মাসখানেক আগেও করোনার প্রতিষেধকের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ায় উদাসীন ছিলেন জেলার বহু বাসিন্দা। সরকারি পরিসংখ্যানে সেই তথ্য স্পষ্ট ছিল। কিন্তু সম্প্রতি স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং টিকাকরণ শিবিরগুলিতে দ্বিতীয় ডোজ় নিতে ভিড় বাড়ছে— সৌজন্য করোনার ওমিক্রন প্রজাতি।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলায় ১৮ বছরের ঊর্ধ্বদের মধ্যে ২৬ লক্ষ এবং নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলায় ১২ লক্ষ ১৬ হাজার বাসিন্দা মিলিয়ে গোটা জেলায় ৩৮ লক্ষের বেশি বাসিন্দাকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুরে ৩৫ লক্ষ বাসিন্দা টিকার প্রথম ডোজ় নিয়েছিলেন। কিন্তু যদিও দ্বিতীয় ডোজ় নিয়েছেন মাত্র ১৫ লক্ষ। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও অনেকে দ্বিতীয় ডোজ় নিতে আগ্রহী না হওয়ায় নভেম্বরের শেষের দিকে সার্বিকভাবে টিকাকরণের গতি কমে গিয়েছিল। কিন্তু স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝানোর পরেও অনেক বাসিন্দা দ্বিতীয় ডোজ়ের টিকা নিতে আসছিলেন না।
এমন আবহে করোনার নতুন প্রজাতি ওমিক্রন সামনে এসেছে। নতুন করে ওই ভাইরাসে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। এতেই অনেকের মনে ফের করোনার ভয় জেগেছে। তাঁদের একাংশ তাই দ্বিতীয় ডোজ় নিতে এখন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তমলুক পুরসভার স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এক আধিকারিক জানান, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ অবধি দ্বিতীয় ডোজ়ের টিকা নিতে অনেকে আগ্রহ দেখাননি। কিন্তু হঠাৎ করে গত কয়েকদিনে দ্বিতীয় ডোজ়ের টিকা নেওয়ার হিড়িক পড়েছে।
নন্দকুমার ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্মী বলছেন, ‘‘নভেম্বরের শেষপর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ় টিকা নেওয়ার আমাদের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দিনে প্রায় ২০০ জন আসতেন। এখন প্রতিদিন প্রায় ৩০০ জন করে আসছেন। কোনও কোনও দিন তা ৫০০-ও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এঁদের অনেকেরই দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেওয়ার নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গিয়েছে।’’
বিষয়টিকে ভাল চোখেই দেখছে স্বাস্থ্য দফতর। যে সব কেন্দ্র বা শিবিরে টিকা কম পড়ছে, সেখানে দ্রুত প্রতিষেধক সরবরাহ করা হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এখন দ্বিতীয় ডোজ়ের টিকাকরণের গতি অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকী, যে সব বাসিন্দারা প্রথম ডোজ়ের টিকা নেননি, তাঁরাও টিকা নিতে আসছেন।’’