প্রতীকী ছবি।
অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে বাসে চেপে বাড়ি ফেরার পথে অসুস্থ পড়েছিলেন পাঁশকুড়ার এক পরিযায়ী শ্রমিক। গত বৃহস্পতিবার তাঁকে ওড়িশার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শুক্রবার আত্মীয়রা হাসপাতালে যান। কিন্তু সেখানে তাঁরা রোগীর দেখা পাননি। কারণ হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন ওই পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁর পরিবারের লোকের অভিযোগ, স্থানীয় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি নেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত শনিবার সন্ধ্যায় রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই শ্রমিককে। এখন কটকে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
পাঁশকুড়ার কেশাপাট পঞ্চায়েতের মালিদা গ্রামের বছর ঊনত্রিশের যুবক শঙ্কর মাইতি অন্ধ্রপ্রদেশে একটি ফুলের দোকানে কাজ করতেন। সামান্য জ্বর, মাথা ব্যথা শুরু হওয়ায় শঙ্কর বিশাখাপত্তনম থেকে গুন্টুর-বাগনান রুটের বাসে চাপেন বাড়ি ফেরার জন্য। বৃহস্পতিবার রাতে অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় ভোর ৩টে নাগাদ তিনি ওড়িশার খালিকোট বাসস্ট্যান্ডে নেমে পড়েন। সেখানে পুলিশের সহযোগিতায় একটি অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় খালিকোট মরদারাজ সানসক্রুটিকা পরিষদ (রম্ভা) পরিচালিত স্পেশাল কেবিনে। ওই সরকারি হাসপাতাল থেকে শঙ্কর হোয়াটসঅ্যাপে বাড়ির লোকেদের সব জানান। শঙ্করের দাদা মৃন্ময় মাইতি-সহ তিনজন রওনা দেন খালিকোটের উদ্দেশ্যে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ তাঁরা ওই সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে শঙ্করকে দেখতে পাননি বলে অভিযোগ। মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল।
শুক্রবার গোটা দিন শঙ্কর না ফেরায় বাড়ির লোক খালিকোট থানায় নিখোঁজ ডায়রি করতে যান। ৪৮ ঘণ্টা না হওয়ায় পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। শনিবার সন্ধ্যায় পরিজনেরা ফের থানায় যান। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফোন করে জানান, শঙ্করকে পাওয়া গিয়েছে। পরিবারের দাবি, তাঁরা এসে দেখেন অচৈতন্য অবস্থায় হাসপাতালে শুয়ে শঙ্কর। তাঁর হাত ও পায়ে ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়ে ও উপযুক্ত চিকিৎসার দাবি জানিয়ে ই-মেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছে পরিযায়ী শ্রমিক সমিতি। হোয়াটসঅ্যাপের আবেদন জানানো হয় পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসককেও। সমিতির উপদেষ্টা নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত চাইছি।’’ জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করব।’’