অধুনা পাকিস্তানের গাহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মনমোহন সিংহ। —ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করল পাকিস্তান। পাক সরকারের তরফে সে দেশের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইশাক ডার শোকপ্রকাশ করেছেন। ‘ঘরের ছেলে’কে হারিয়ে মনখারাপ পাকিস্তানে মনমোহনের গ্রামেরও। সেখানে শুক্রবার একটি শোকসভার আয়োজন করা হয়েছিল।
১৯৩২ সালে অবিভক্ত ভারতের গাহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মনমোহন। গ্রামটি এখন পাকিস্তানের অন্তর্গত। রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে মনমোহনের গ্রাম। সেখানেই তাঁর ছোটবেলা কেটেছিল। বৃহস্পতিবার রাতে মনমোহনের মৃত্যুসংবাদ শোক বয়ে এনেছে সেই গ্রামে। তাঁরা বলছেন, ‘ঘরের ছেলে’কে হারানোর মতোই অনুভূতি হচ্ছে!
পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শুক্রবার লিখেছেন, ‘‘ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের মৃত্যুর খবরে আমি দুঃখিত। পাকিস্তানের চকওয়াল জেলার গাহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। ছিলেন অসাধারণ অর্থনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক নেতা। নিজের জ্ঞান এবং শান্ত স্বভাবের কারণে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’’
পাকিস্তানের মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘অর্থনীতির ময়দানে সাফল্যের পাশাপাশি আঞ্চলিক শান্তির প্রসারেও আগ্রহী ছিলেন মনমোহন। তিনি বিশ্বাস করতেন পারস্পরিক আলোচনা, সহযোগিতার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। বিভিন্ন আঞ্চলিক সমস্যার সঙ্গে তিনি যে ভাবে যুঝেছেন, তা তাঁর এই বিশ্বাসের পরিচয় বহন করে। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। পাকিস্তানের মানুষ এবং পাকিস্তান সরকার ওঁর পরিবারের প্রতি, ওঁর দেশের মানুষের প্রতি এবং ভারত সরকারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে।’’
পাকিস্তানের যে গ্রামে মনমোহনের জন্ম, সেই গাহতে শুক্রবার গ্রামবাসীরা মিলে একটি স্মরণসভার আয়োজন করেছিলেন। মনমোহনকে স্মরণ করা হয় নানা স্মৃতিচারণার মাধ্যমে। তাঁর সঙ্গে একই স্কুলে পড়েছেন, এমন অনেকে এখনও আছেন গাহতে। তাঁদের কথায়, ‘‘সারা গ্রাম শোকস্তব্ধ। আমাদের মনে হচ্ছে, আমরা যেন নিজেদের পরিবারের কাউকে হারিয়ে ফেলেছি। ভারতে গিয়ে ওঁর শেষকৃত্যে অংশ নিতে পারলে ভাল লাগত। কিন্তু সেটা সম্ভব নয়।’’
২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন। বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লির এমস হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। শনিবার পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দিল্লিতে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। তাঁর মৃত্যুতে ভারত সরকার সাত দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে।