Lights and Occassion

আলো আমার, আলো ওগো

উৎসবে আলো সাজানো ছাড়াও, আঠারো শতকের কলকাতায় আর এক ধরনের ‘আউটডোর ইলুমিনেশেন’-এর খবর পাওয়া যায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:২৪
Share:

উৎসবের মরসুম চিনিয়ে দেয় আলো। শহরকে আলোয় সাজানোর এই চল দেখা যায় আঠারো শতকেই। ফারাকটা উপকরণে, তখন উৎসবের সময় এদেশীয় ধনী ও সাহেবদের হাতে-গোনা ইমারতগুলি সাজানো হত তেল বা মোমের বাতি দিয়ে। ১৭৮৯-এর জুলাইয়ে ইংল্যান্ডের রাজার রোগমুক্তি উদ্‌যাপন করতে লর্ড কর্নওয়ালিস কলকাতার শ্বেতাঙ্গ সমাজের জন্য বিরাট বিনোদনের ব্যবস্থা করেছিলেন। বিরাট ভোজসভা, প্রায় লাখখানেক বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছিল হোয়াইট টাউন থেকে দৃশ্যমান সাবেক গভর্নমেন্ট হাউসের দক্ষিণ অংশটি। ঝড়-বাদলে সেই আলো নিভে গিয়ে আক্ষরিক অর্থেই জলও ঢেলে দিয়েছিল সাহেবি উচ্ছ্বাসে। নতুন গভর্নমেন্ট হাউস বা আজকের রাজভবন তৈরি হওয়ার পর লর্ড ওয়েলেসলির দেওয়া ভোজ উপলক্ষেও আলোকসজ্জার আয়োজন হয়।

Advertisement

উৎসবে আলো সাজানো ছাড়াও, আঠারো শতকের কলকাতায় আর এক ধরনের ‘আউটডোর ইলুমিনেশেন’-এর খবর পাওয়া যায়। সাধারণত কোনও বাগানে সাহেব-মেমদের সান্ধ্যভ্রমণের সঙ্গে বিশেষ বিনোদনের আয়োজন হত। ‘ভক্সহল’ নামের এই অনুষ্ঠানে বিশেষ সঙ্গীকে নিয়ে গ্লাস ল্যাম্পের আলোয় হালকা বাজনার সুরে বাগানে বেড়াতেন তাঁরা। বিলেত থেকে আমদানি এই সামাজিকতার অনুষঙ্গ ছিল আলোকসজ্জা। সে কালের ক্যালকাটা গেজ়েট-এর বিজ্ঞাপন তার সাক্ষী।

বাঙালি ধনীরাও দুর্গাপুজোয় আলো দিয়ে বাড়ি সাজানোয় পিছিয়ে ছিলেন না। চৌরাস্তার প্রবেশতোরণ থেকে দেওয়ান শান্তিরাম সিংহের বাড়ির পর্যন্ত, জোড়াসাঁকোর রাস্তার দুই দিকে বসানো আলো দেখে দর্শনার্থীদের ঠাকুরদালান পর্যন্ত পৌঁছনোর সুবিধার খবর ছেপেছিল ১৮২৯ সালের বঙ্গদূত সংবাদপত্র। এই ধরনের ‘বাঁধা রোশনাই’ তখন ছিল বিয়ের অনুষ্ঠানের গৌরব।

Advertisement

উনিশ শতকের সত্তর ও আশির দশকে বৈদ্যুতিক আলো নিয়ে কলকাতায় নানা সফল পরীক্ষা শুরু হল। বাইরের আলোকসজ্জার জন্য তার ব্যবহারও শুরু হল। এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখল বাঙালির সংস্থা দে শীল অ্যান্ড কোম্পানি। কলকাতায় কংগ্রেস সদস্যদের সান্ধ্য পার্টির মতো কয়েকটি সফল আয়োজনের পর, ১৮৮৭ সালের ১৭ জানুয়ারি মহারানির জুবিলি উপলক্ষে মিডলটন স্ট্রিটে দারভাঙার মহারাজার প্রাসাদ-সহ কয়েকটি বাড়ির আলোকসজ্জায় বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা করে প্রশংসিত হয় এই সংস্থা।

১৮৯২-এ হ্যারিসন রোড জুড়ে বৈদ্যুতিক আলো বসানোর কাজ শেষ হল। কয়েক বছরের মধ্যেই পাকা হল বাড়িতে বিদ্যুৎ পরিষেবার ব্যবস্থা। ১৮৯৯-এ লর্ড কার্জন তাঁর উত্তর ভারত সফর থেকে ফেরার আগেই লাটভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ শেষ হল জরুরি ভিত্তিতে। ১৯১১-র ডিসেম্বরে রাজা পঞ্চম জর্জ ও রানি মেরির কলকাতা সফরের সময় জিপিও ও রয়্যাল ইনশিয়োরেন্স বিল্ডিং-সহ লালদিঘি চত্বর সাজানো হয়েছিল আলোর মালায়। বিশ শতকের শুরুতে বৈদ্যুতিক আলো এল সাধারণের আয়ত্তে; উৎসবে পার্বণে আলোকসজ্জার চল বাড়ল। বছরশেষের উৎসব-আবহে আজ পার্ক স্ট্রিট (ছবি) থেকে গোলপার্ক বা নিউ টাউন ঝলমলাচ্ছে, আলোর অতীত-ইতিহাসকে খানিক মনে করলে ক্ষতি কী?

অরুন্ধতী ১০০

সঙ্গীত ছিল তাঁর আনন্দের আকাশ। রবীন্দ্র-সান্নিধ্যে শৈশব, শান্তিনিকেতনে ডাকঘর-এ অমলের ভূমিকায় প্রথম অভিনয় ছ’বছর বয়সে। সঙ্গীত ভবনের পরীক্ষায় তিনিই প্রথম, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বিতীয়। পরে সিনেমার সঙ্গে ঘর করতে-করতে বহু সান্ধ্য আড্ডায় সন্তোষকুমার ঘোষ গৌরকিশোর ঘোষ তপন সিংহকে অনভ্যস্ত গলায় শোনাতেন ফেলে-আসা রবীন্দ্রগান। রবীন্দ্রনাথের মেঘ ও রৌদ্র চিত্রায়িত করে চমৎকৃত করেছিলেন বাঙালিকে। এ বছর জন্মশতবর্ষ পূর্ণ হল অরুন্ধতী দেবীর (ছবি), মৃণালিনী বাসুদেবন ও তপতী গুহঠাকুরতার রূপায়ণে কলকাতা সেন্টার ফর ক্রিয়েটিভি-তে (কেসিসি) শুরু হয়েছে প্রদর্শনী ‘তারার নাম অরুন্ধতী’, উপস্থাপনায় বেঙ্গল বিয়েনেল। চলবে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত, রোজ সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা, শুধু ২৯ ডিসেম্বর দিনটি বাদে। গতকাল তাঁর অভিনয়সত্তা নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা ছাড়াও, দেখানো হল চলাচল ছবিটি।

দু’শো বছরে

চার্চের জাতিভিত্তিক বৈষম্য নীতির বিরোধিতা করে ধর্মপ্রচারকের পদ ছেড়ে সরকারি শিক্ষা বিভাগে যোগ দেন রেভারেন্ড লালবিহারী দে। বহরমপুর কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক, পরে হুগলি কলেজে ইংরেজি পড়িয়েছেন; বাঙালি তাঁকে স্মরণ করে, লেখার মধ্য দিয়ে বাংলার জীবন ও সংস্কৃতি তুলে ধরেছিলেন বলে। উত্তরপাড়ার বাবু জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের সাহিত্য প্রতিযোগিতার জন্য লেখেন বেঙ্গল পেজ়েন্ট লাইফ, বঙ্কিমচন্দ্রের বিষবৃক্ষ-কে পেরিয়ে পুরস্কৃত হয় সেই লেখা, পরে প্রশংসা পায় চার্লস ডারউইনেরও। লিখেছেন বাংলার উৎসব, খেলা, উপকথা নিয়ে। তাঁর জন্মের দু’শো বছর পূর্তিতে গত ১৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠান হয়ে গেল, সম্প্রীতি আকাদেমি ও সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের উদ্যোগে। ছিল প্রাসঙ্গিক আলোচনা, গ্রন্থপ্রকাশ, সম্মাননা।

নাট্যস্বপ্নকল্প

“উনি অভিনেতা বা নির্দেশক ছিলেন না, কিন্তু ওঁকে ছাড়া আধুনিক থিয়েটার নির্মাণ ভাবতে পারি কি?” তাপস সেন সম্পর্কে বলছিলেন বিভাস চক্রবর্তী। তাপস সেন বাদল সরকার ও তৃপ্তি মিত্রকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাচ্ছে ‘অন্য থিয়েটার’, উপলক্ষ ওঁদের জন্মশতবর্ষ। ২০২৫-এ চল্লিশ পূর্ণ করবে নাট্যগোষ্ঠীটি, বছর জুড়ে নানা অনুষ্ঠান। তার আগে বর্ষশেষে ৩০-৩১ ডিসেম্বরে ‘চত্বারিংশ বর্ষের আগমনী অনুষ্ঠান’ যথাক্রমে অ্যাকাডেমি ও তপন থিয়েটারে সন্ধ্যা ৬টা থেকে। সোমবার নীতীশ সেনের অপরাজিতা, পরদিন উৎপল দত্তের টিনের তলোয়ার, যথাক্রমে তূর্ণা দাশ ও সুমন মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশনায়। চন্দন সেন অর্ণ মুখোপাধ্যায় সুদীপ সান্যাল সুপর্ণা দাসের সম্মাননা; সঙ্গে গ্রন্থপ্রকাশ, দেবাশিসের নাটকসমগ্র প্রথম খণ্ড।

বই ঘিরে

বইয়ের যাত্রাপথে সঙ্গী কারা? লেখক, প্রকাশক, ছাপাখানার কর্মী, প্রচ্ছদশিল্পী, বাঁধাইকর্মী, সর্বোপরি পাঠক। বাতাসে ভাসে, ই-বুক বা অন্য বিনোদনের চাপে বই পড়া কমছে: আজও খণ্ডসত্য তা। পূর্ণসত্য যেন না হয়, সে জন্যই আরও বেশি দরকার বই, বইমেলা, প্রকাশনা-শিল্পের সঙ্কট-সম্ভাবনা ঘিরে আলোচনা, লেখক পাঠক প্রকাশকের ভাবনা-বিনিময়। সেতু প্রকাশনীর আয়োজনে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মিডিয়া কমিউনিকেশন অ্যান্ড কালচার-এর সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিতা ব্যানার্জি মেমোরিয়াল হল-এ এই সবই হয়ে গেল গত ২০ ডিসেম্বর। চেন্নাই থেকে এসেছিলেন সেখানকার বইমেলা ও তামিল সাহিত্য অনুবাদ প্রকল্পের আয়োজকরা। কয়েকটি বই ঘিরে আলোচনা করলেন শোভনলাল দত্তগুপ্ত অভ্র ঘোষ ধীমান দাশগুপ্ত প্রমুখ। গ্রন্থ-সমালোচনা লিখে সম্মানিত হলেন পাঠকরাও।

দুই দেশ, এক ছবি

চার বছর আগের শীতে পঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের নেতৃত্বে হয়েছিল অবস্থান বিক্ষোভ। সে যাত্রায় রদ হয় তিন কৃষি আইন, কিন্তু ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের নিশ্চয়তা মেলেনি। সেই দাবিতে কৃষকরা আজও আন্দোলনে। চার দশক আগে রোনাল্ড রেগানের আমলে আমেরিকার কৃষিক্ষেত্র খোলা বাজারে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়, আমেরিকাতেও সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষিজীবীই ছিলেন ক্ষুদ্র পুঁজির কৃষক। কাদের লাভ হয়েছিল তাতে, কারা পড়েছিল ধ্বংসের মুখে? খুঁজতে বেরিয়ে পড়েন বেদব্রত পাইন, ১০,০০০ কিমি যাত্রায় গ্রামীণ আমেরিকা থেকে তুলে আনেন বহু ক্ষুদ্র কৃষকের বয়ান। তা-ই পরে হয়ে ওঠে ওঁর প্রথম তথ্যচিত্র, দেজা ভু। পিপল’স ফিল্ম কালেক্টিভ-এর উদ্যোগে আজ সুজাতা সদনে সন্ধ্যা ৬টায় দেখানো হবে, থাকবেন পরিচালক নিজেও।

নতুন আলোয়

১৭৮৪-র কলকাতায় এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠা, জেমস প্রিন্সেপ (জন্ম ১৭৯৯) তার থেকে বয়সে পনেরো বছর ছোট। ১৮৩০-এ তিনিই সোসাইটির সদস্য, এবং তার পর থেকে উভয়ের বন্ধনও অচ্ছেদ্য। তাঁর জন্মের ২২৫ বছর পূর্তিতে এশিয়াটিক সোসাইটি কলকাতা সম্প্রতি প্রকাশ করল তাদের জার্নালের বিশেষ সংখ্যা, ‘স্কলারশিপ ইনডেলিবল: জেমস প্রিন্সেপ (১৭৯৯-১৮৪০)’। এর আগেও সোসাইটি এই কৃতবিদ্যকে স্মরণ করেছে আলোচনায়, প্রকাশনায়। এ বারের সংখ্যাটিতে নানা পরিসরের বিশিষ্ট গবেষকদের লেখায় জেমস প্রিন্সেপের প্রতিভার মূল্যায়ন, রজত সান্যালের সম্পাদনায়। ওরিয়েন্টাল স্টাডিজ়-এর বিকাশে তাঁর অবদান, ব্রাহ্মী পাঠোদ্ধার ও প্রাচীন মুদ্রা নিয়ে কাজ, বেনারস ইলাস্ট্রেটেড-সহ জেমস প্রিন্সেপের জীবনকৃতির নব অন্বেষণ। ছবিতে বিশ শতকের গোড়ার দিকে প্রিন্সেপ ঘাট, জার্নাল থেকে।

ফিরে দেখা

শান্তিনিকেতনে নন্দলাল বসুর প্রথম দিকের ছাত্রদের অন্যতম সুধীররঞ্জন খাস্তগীর। রামকিঙ্কর বেজের সতীর্থ, তাঁরই মতো চিত্রকর ভাস্কর প্রিন্টমেকার শিক্ষক; ভাস্কর্য আপন দু’জনেরই। সুধীররঞ্জন পরে সেকালের মাদ্রাজ ও বম্বেতে ভাস্কর্যের উচ্চতর পাঠ নিয়ে কাজে যোগ দেন গোয়ালিয়রে, সিন্ধিয়া স্কুলে। পরে দেহরাদূনে কুড়ি বছর, ১৯৫৬-র লখনউতে আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ হন। অবসর-উত্তর ফের শান্তিনিকেতনে, আমৃত্যু সেখানেই। চল্লিশের দশক থেকেই চিত্রকর ভাস্কর হিসেবে খ্যাতি, মডার্নিস্ট শিল্পী রূপে আদৃত তিনি: বিখ্যাতজনের পোর্ট্রেট স্কাল্পচারে, ছবিতে নিসর্গ ও সাধারণ জনজীবনের রূপদানে তাঁর বিশিষ্টতা। তা সত্ত্বেও, সাম্প্রতিক কালে শিল্প-সমালোচনার রুচিবদলে তাঁর মূল্যায়ন হয়নি তত। ‘গ্যালারি ৮৮’-এ চলছে সুধীররঞ্জনের কাজ নিয়ে প্রদর্শনী ‘দ্য রিদমস অব রিফিউজ’, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত, রবিবার বাদে। ছবিতে তাঁর আঁকা রবীন্দ্রনাথ।

পথের শিল্প

একদা কলকাতা চলত ‘নড়িতে নড়িতে’, এখন তার দৌড় জেট গতিতে। ও দিকে মুছে যাচ্ছে জলাভূমি, গাছ, জীবিকা, মিউজ়িয়ম, সংস্কৃতিচিহ্ন। সে কথা শহরকে মনে করানোর ভার নিয়েছেন শিল্পীরা। কাজটা কঠিন, বিশেষত যে শহরে সাধারণ মানুষের শিল্প প্রদর্শনীতে যাওয়ার অভ্যাস নেই তত। তাই শিল্পকে নিয়ে শিল্পীরাই পৌঁছচ্ছেন মানুষের কাছে। গত ক’বছর ধরে শহরের সাংস্কৃতিক ক্যালেন্ডারের অঙ্গ ‘বেহালা আর্ট ফেস্ট’। ২০-২২ ডিসেম্বর বেহালা ১৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হয়ে গেল এই উৎসবের পঞ্চম সংস্করণ। ছবি, ভিডিয়ো, ইনস্টলেশন, বহুমাত্রিক উপস্থাপনায় তুলে ধরা হল বেহালা থেকে হারিয়ে যাওয়া অনেক কিছু: জলাভূমি, মৎস্যজীবী, শাকপাতা, বন্ধ হয়ে যাওয়া গুরুসদয় লোকসংস্কৃতি সংগ্রহশালা, ট্রাম। সাইকেল স্ট্যান্ডে মেয়েদের সাইকেল-সংখ্যার তারতম্যে আজকের লিঙ্গসাম্যের চেহারাটাও উঠল ফুটে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement