rape

Rape: নাবালিকা ধর্ষণ, ২০ বছর জেল

বুধবার ঝাড়গ্রাম দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালত তথা পকসো আদালতের বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায় এই সাজা ঘোষণা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২২ ০৭:৫৬
Share:

পকসো মামলায় কুড়ি বছর সশ্রম কারাদণ্ডে সাজা প্রাপ্ত সাগুন হাঁসদা। বুধবার ঝাড়গ্রাম পকসো আদালত চত্বরে। নিজস্ব চিত্র।

এই প্রথমবার ঝাড়গ্রাম পকসো আদালতে নাবালিকা ধর্ষণে এক অভিযুক্তের কুড়ি বছর সশ্রম কারাবাসের সাজা হল!

Advertisement

বুধবার ঝাড়গ্রাম দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালত তথা পকসো আদালতের বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায় এই সাজা ঘোষণা করেন। অভিযুক্ত বিনপুর থানার ছোট শিরষি গ্রামের বছর বাইশের সাগুন হাঁসদাকে কুড়ি বছর সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি নগদ পাঁচ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা, অনাদায়ে আরও পাঁচ মাস সশ্রম কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

পকসো আদালতের সরকারি আইনজীবী শুভাশিস দ্বিবেদী জানান, ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ঝাড়গ্রাম জেলার একটি গ্রামের এক তেরো বছরের স্কুলপড়ুয়া আদিবাসী কিশোরী পুকুরে হাত-পা ধুতে গিয়েছিল। পরদিন অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় কিশোরীটি বাড়ি ফিরে তার বাবা-মাকে জানায়, সাগুন তাকে পুকুর পাড় থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে সারা রাত আটকে রেখে ধর্ষণ করে। ওই দিনই ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বিনপুর থানায় সাগুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন কিশোরীর বাবা। ধর্ষণের ধারায় পকসো আইনে মামলা হয়। ওইদিনই সন্ধ্যায় ছোটশিরষি গ্রাম থেকে অভিযুক্ত সাগুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিশোরীর মেডিক্যাল পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ মেলে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নাবালিকার গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করায় পুলিশ। অভিযুক্তের তরফে একাধিকবার জামিনের আবেদন করা হলেও সেই আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। পুলিশ দ্রুত তদন্ত করে চার্জশিট দাখিল করায় ওই বছরের ১২ মার্চ পকসো আদালতে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু হয়। তবে করোনার কারণে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। চিকিৎসক, তদন্তকারী অফিসার সহ ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। এবছর ২৪ মার্চ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। মঙ্গলবার সাগুনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। বুধবার সাজা ঘোষণা করা হয়। নাবালিকার মা বলেন, ‘‘আমার মেয়ের জীবনটাই নষ্ট করে দিয়েছে সাগুন। ওর শাস্তি হওয়ায় খুশি।’’

Advertisement

সরকারি আইনজীবী শুভাশিস বলেন, ‘‘পুলিশ সঠিক তদন্ত করে দ্রুত চার্জশিট জমা দেওয়ায় নির্যাতিতা দু’বছরের মধ্যে বিচার পেল।’’ সেই সঙ্গে শুভাশিস জানাচ্ছেন, জেলার পকসো আদালতে এই প্রথমবার পকসো মামলায় কুড়ি বছরের সশ্রম কারাবাসের সাজা ঘোষণা হল। এর আগে একটি পকসো মামলায় অভিযুক্তের তিন বছরের সাজা ঘোষণা হয়েছিল। সেই দিক থেকে এদিন আদালতের রায় নজিরবিহীন বলে মানছেন আইনজীবী মহল। শুভাশিস জানান, রাজ্য সরকারের তরফে নির্যাতিতা নাবালিকাকে ৩ লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অভিযুক্তের আইনজীবী সুরজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। সাগুনকে ফাঁসানো হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত যুবক গরিব পরিবারের। তাই এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার জন্য জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সাহায্য চাওয়া হবে।’’

এর আগে গত ৭ এপ্রিল অন্য একটি পকসো মামলায় অভিযুক্তকে প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস দিয়েছিল ঝাড়গ্রাম পকসো আদালত। ঝাড়গ্রাম সিজেএম আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অনিল মণ্ডল বলছেন, ‘‘পুলিশ অভিযোগের স্বপক্ষে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ দাখিল করতে না পারলে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা কঠিন। তবে সাগুনের মামলায় বিনপুর থানার পুলিশের ভুমিকা খুবই সদর্থক।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement