মেদিনীপুর সংশোধনাগারে কারামন্ত্রী। ইনসেটে, ভেষজ বাগানের জমি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
কাঠের কিংবা বেকারির কাজ অথবা সরষের তেল তৈরি—সে সব জেলের অন্দরের পরিচিত ছবি। বন্দিদের হাতে বেড়ে ওঠে আনাজের বাগানও। তবে বাগান আর আনাজেই সীমাবদ্ধ নয়। এ বার বন্দিদের সাহচর্যে বেড়ে উঠবে ঔষধি গাছও। রাজ্যের মধ্যে প্রথম মেদিনীপুরে ভেষদ বাগান হচ্ছে। চাষ করবেন উৎসাহী বন্দিরাই। তাঁদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।
সার্ধশতবর্ষ পেরিয়েছে মেদিনীপুর জেল। সেখানেই তুলসী, মোরিঙ্গার মতো ঔষধি গাছ বা ‘মেডিসিনাল প্লান্ট’ চাষ হবে। খড়্গপুর সদরে বিধানসভা উপনির্বাচনের জন্য নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়েছে। তাই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে পারেনি রাজ্য সরকার। তবে শুক্রবার জেল চত্বরে গিয়ে ওই প্রকল্পের কাজকর্ম দেখেন কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। সঙ্গে ছিলেন ডিজি (কারা) অরুণ গুপ্ত। মেদিনীপুর জেল চত্বরের সামনের এক জমিতে এই বাগান গড়ে তোলা হচ্ছে। কারামন্ত্রীর দাবি, ‘‘রাজ্যে এটা প্রথম। সম্ভবত দেশেও প্রথম।’’ কারামন্ত্রী জানান, "মেদিনীপুরে আমরা পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে এই বাগান গড়ে তুলছি। দেখি কেমন কী হয়। পরে আমরা অন্যত্রও এমন বাগান করব।’’ কেন মেদিনীপুরকে বাছা হল? দফতর সূত্রে খবর, মূলত দু'টি কারণে এখানে 'পাইলট প্রজেক্ট' হিসেবে এই বাগান গড়ে তোলা হচ্ছে। এক, মেদিনীপুর জেল চত্বরে অনেকটা জমি রয়েছে। দুই, এখানকার মাটি চাষের উপযোগী।
প্রস্তাবিত বাগান পরিদর্শনের সময়ে কারামন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মেদিনীপুর জেলের সুপার সৌমিক সরকার। কোথায় কী চাষ হবে, মন্ত্রীকে তা দেখিয়ে দেন সৌমিক। মন্ত্রী কথা বলেছেন চাষের কাজে নিযুক্ত বন্দিদের সঙ্গেও। প্রথম পর্যায়ে ৩০ জন বন্দিকে চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ৩ একর জমিতে ভেষজের বাগান গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চাষ হবে সজনে, তুলসী প্রভৃতির। কারামন্ত্রী বলেন, ‘‘আপাতত আমরা তিন- চার রকম গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করেছি।’’ দফতর সূত্রে খবর, চাষের পরে গাছগুলি একটি সংস্থাকে বিক্রি করা হবে। লাভের টাকা জমা পড়বে দফতরে। ওই টাকা কীসে খরচ হবে? কারামন্ত্রী বলেন, ‘‘আবাসিকদের কল্যাণে খরচ করা হবে। তাঁদের পরিবারকে সাহায্য করা হতে পারে।’’
মেদিনীপুর জেল চত্বরে আগেই আনাজ চাষ শুরু হয়েছে। এ বার ভেষজ গাছগাছালির চাষও হবে। কারামন্ত্রী বলছিলেন, ‘‘মেদিনীপুরে অনেক আবাসিকই আনাজ চাষে পারদর্শী হয়ে গিয়েছে। আমরা নিশ্চিত, ওষধি গাছের ব্যাপারেও পারদর্শী হয়ে উঠবে।’’ মেদিনীপুর, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ার বিভিন্ন জেলের অবস্থা, বন্দিরা কেমন আছেন, সেসব নিয়েই জেলের অফিসারদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক করেন ডিজি (কারা) অরুণ গুপ্ত।