ঝাড়গ্রাম শহরের রূপছায়া মোড়ে তৃণমূলের সহায়তা শিবিরে খাওয়াদাওয়া। বৃহস্পতিবার রাতে। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোটের জয় উদ্যাপন। লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি। এ বার একুশের সমাবেশ ঘিরে তাই বাড়তি উৎসাহ শাসক শিবিরে।
আজ, শুক্রবার, ধর্মতলায় একুশের সমাবেশে হাজির থাকতে রাত থেকেই কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা। রাতের ট্রেনে ও ছোট গাড়িতে করে তাঁরা গিয়েছেন সমাবেশে যোগ দিতে। তৃণমূল সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম দুই জেলা মিলিয়ে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ যাবেন এই সমাবেশে।
তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা থেকে অন্তত ৫০- ৬০ হাজার কর্মী- সমর্থক সমাবেশে যাচ্ছেন, দাবি দলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার। তাঁর কথায়, "অনেকে বাসে, অনেকে ট্রেনে করে যাচ্ছেন।" তাঁর দাবি, পঞ্চায়েত ভোটে বিপুল জয় পেয়েছে দল। কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা রয়েছে। যে সব বাস সমাবেশে যাচ্ছে, সেই সব বাসে তৃণমূলের স্টিকার সাঁটানো থাকছে। সেখানে লেখা থাকছে, বাসটি কোন রুটে যাবে। কলকাতায় কোথায় পার্কিং হবে। অনেকটাই কর্পোরেট ছোঁয়া। গড়বেতার তিনটি ব্লক থেকে শতাধিক ছোট-বড় গাড়ি যাবে সমাবেশে। গড়বেতা, চন্দ্রকোনা রোড থেকে রাতের ট্রেনে অনেকে গিয়েছেন। খড়্গপুর মহকুমার ব্লক গুলি থেকে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ যাবেন সমাবেশে, এমনই দাবি তৃণমূলের। বেশিরভাগটাই যাবেন ট্রেন যোগে। সবং, ডেবরা, পিংলা থেকে বেশি সংখ্যক মানুষকে সমাবেশে নিয়ে যেতে উদ্যোগী তৃণমূল নেতৃত্ব।
এ বার দু’দিন আগে থেকেই ঘাটালের রুটের গাড়ি মাঝপথে বন্ধ করে দিতে দেখা গিয়েছে। দলের যুব কর্মীরাও কলকাতার শহিদ সভায় যোগ দিবেন। তাঁদের রাস্তায় গাড়ি ঘিরতে দেখা গিয়েছে। শুধু গ্রামীণ এলাকায় নয়। ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি পুরসভার ষাটটি ওয়ার্ড থেকে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৮০টি গাড়ি যাবে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা থেকে মোট ৪০ হাজার তৃণমূল কর্মী সভায় যোগ দিবেন দাবি তৃণমূল নেতাদের। অনেকেই যাওয়ার পথে পিকনিক করার চিন্তাভাবনাও নিয়েছেন। বৃষ্টি হলে গাড়ির ভিতরেই রান্না করার ব্যবস্থা থাকছে। সকালে টিফিনের ব্যবস্থাও থাকছে। তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুতাইত বলেন, “ ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সারা। গাড়ি ছাড়ার অপেক্ষায় রয়েছেন দলের সব স্তরের নেতৃত্ব ও কর্মীরা।”
তুলনায় ঝাড়গ্রাম জেলাতে এবার একুশের সমাবেশ নিয়ে উচ্ছ্বাস কার্যত কিছুটা কম। জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মুর দাবি, ‘‘এবার জেলা থেকে ২০ হাজার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে যাওয়া হবে। তাদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা থাকবে চোখে পড়ার মত। অনেকে ট্রেনেও যাবেন। একশোর বেশি বাস ও সাড়ে তিনশো ছোট গাড়ি ভাড়া করা হয়েছে।’’ তবে শাসকদলের অন্দরের খবর, মেরেকেটে পাঁচ-সাত হাজারের বেশি লোক নিয়ে যাওয়ার মত পরিস্থিতি নেই। এক অঞ্চল সভাপতি বলছেন, ‘‘ট্রেনে যাওয়ার কথা শুনে অনেকেই যেতে চাইছেন না। ’’ ঝাড়গ্রাম শহর তৃণমূলের সভাপতি নবু গোয়ালা বলছেন, ‘‘শহর থেকে তিনটি বাস ও ১২টি ছোট গাড়ি যাচ্ছে। শহরের কর্মী-সমর্থকরা বেশিরভাগ ট্রেনে যাবেন।’’
এ বার শাসকদল বেশি বাস না নেওয়ার ফলে জেলায় তেমন দুর্ভোগের আশঙ্কা নেই বলে জানাচ্ছেন বাস মালিক সংগঠন। ঝাড়গ্রাম ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দিলীপকুমার পাল বলছেন, ‘‘শুক্রবার জেলায় অনেক রুটেই বাস চলবে। সাধারণ যাত্রীদের সমস্যা হবে না।’’