এখানেই জেলা পরিষদের ভবন হওয়ার কথা। নিজস্ব চিত্র।
ঝাড়গ্রাম শহরে তৈরি হবে জেলা পরিষদের নতুন ভবন। ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামের পিছনে কনকপল্লিতে হবে ওই নির্মাণ। কিন্তু যে সরকারি জমিতে ওই ভবন হওয়ার কথা সেখানে জবরদখল রয়েছে। ইতিমধ্যে ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে জবরদখলকারী সেখানে বসবাসকারী পরিবারকে সরে যাওয়ার নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই পরিবার ওঠেনি। তবে এবার ওই তাঁদের অবিলম্বে উঠে যাওয়ার নোটিস জারি করলেন ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার মহকুমাশাসক বাবুলাল মাহাতো নোটিস দিয়ে জানিয়েছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে জবরদখল সরিয়ে দিতে হবে। এই ঘটনায় প্রকাশ্যে কেউ কিছু না বললেও অস্বস্তি এড়াতে পারছেন না তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা। ঝাড়গ্রাম শহরের এক তৃণমূল নেতা বলছেন, ‘‘পুরভোটের আগে এমন উচ্ছেদের নোটিস অস্বস্তিকর। কারণে শহরে একলব্য সরণীর ধারে বিস্তীর্ণ সরকারি জমি দখল হয়ে বাড়িঘর তৈরি হয়ে গিয়েছে। প্রশাসন কাউকেই উচ্ছেদ করতে পারেনি।’’
২০১৭ সালে ৪ এপ্রিল নতুন জেলা হওয়ার পর ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদ গঠন হয়। ওই সময় জেলা পরিষদ অফিসটি চালু হয়েছিল ঝাডগ্রাম পুরসভার পাশে। দোতলা ওই ভবনটি তৎকালীন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ তৈরি করেছিল। ওই ভবন তৈরির পর একতলার অংশ ভাড়া দেয়। সেখানে বিভিন্ন দোকান রয়েছে। দোতলায় রয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের দফতর। সেখানে সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি, বিভিন্ন কর্মাধ্যক্ষরা বসেন। জায়গা ছোট হওয়ায় কোনও ঘরে চারজন, আবার কোনও ঘরে দু’জন কর্মাধ্যক্ষ বসেন। সরু জায়গায় হাঁটাচলার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। সেই জন্য ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামের পিছনে পশু হাসপাতালের পাশে কনকপল্লি এলাকায় প্রায় ২ একর সরকারি জায়গায় নতুন জেলা পরিষদ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। প্রথমে পাঁচতলা ভবন তৈরির সিদ্ধান্ত হলেও পরে তিনতলার কথা বলা হয়। এজন্য প্রশাসনিক অনুমতিও মিলেছে। কিন্তু তার আগেই তৈরি হয়েছে জট। কারণ সেখানে একটি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে।
ওই পরিবারের সদস্য বিমলা শীট ও রানু শীটের দাবি, ‘‘আমরা ২৮ বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। আমাদের পরিবারে ১৪ জন সদস্য। দিনমজুরি করে সংসার চলে। টিনের চালা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিস দিয়েছে। আমরা বেড়া খুলে দিচ্ছি। কিছু খোলা চালা সরিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু ঘরে থাকতে দিতে হবে আমাদের। না হলে এতজন মিলে কোথায় বসবাস করব!’’
জেলা পরিষদের সচিব কালীপদ সিং বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের ভবন তৈরির জন্য সরকারি অনুমোদন মিলেছে। তবে এখনও টাকা বরাদ্দ হয়নি। ওই জায়গাটির চারিদিকে জবরদখল রয়েছে। জবরদখল সরানোর জন্য মহকুমাশাসককে জানানো হয়েছে।’’
মহকুমাশাসক বাবুলাল মাহাতো বলেন, ‘‘জেলা পরিষদে ভবন তৈরির জন্য যে জমি দেখা হয়েছে তা চারিদিকে ঘেরা রয়েছে। টিনের ছাউনিগুলি খুলে দিতে হবে। সেখানে বসবাসকারী পরিবারটিকে নোটিস দিয়ে সাতদিন সময় দেওয়া হয়েছে। না সরলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’