রবিবারের মঞ্চে। নিজস্ব চিত্র।
শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপি যাত্রার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঝাড়গ্রামে সভা করলেন রাজ্যের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু ও রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন। সেখানে ভুল স্বীকারের সঙ্গেই মমতা-মুখেই আস্থা রাখার বার্তা দেওয়া হল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সভার মুখ্য আয়োজক ছিল দু’টি অরাজনৈতিক সংগঠন। রাজনৈতিক মহলের মতে, শুভেন্দু পরবর্তী সময়ে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন গণ সংগঠনকেও কাছে চাইছে তৃণমূল।
রবিবার বিকেলে ঝাড়গ্রাম শহরের রবীন্দ্র পার্কে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে জনবিরোধী নীতি চালুর অভিযোগে ওই সভা ডেকেছিল ‘ঝাড়গ্রাম জেলা নাগরিক অধিকার সমিতি’ এবং ‘জঙ্গলমহল উদ্যোগ’। সেখানেই জঙ্গলমহলে লোকসভার ক্ষত মেরামত করে গণ সংগঠন ও নাগরিক সমিতিগুলিকে সঙ্গে নিয়ে সার্বিক লড়াইয়ের কথা বললেন পূর্ণেন্দু ও দোলা। এ দিন মঞ্চে ঝাড়গ্রাম জেলা নাগরিক অধিকার সমিতির সদস্যদের মধ্যে তৃণমূল কর্মী দশরথ হেমব্রম, রামগড়ের তৃণমূল নেতা সাগুন হেমব্রম, জনসাধারণ কমিটির প্রাক্তন মুখপাত্র মনোজ মাহাতোরা ছিলেন। ওই সমিতির সভাপতি রঞ্জিত মাহাতোর দাবি, ‘‘আমাদের সমিতি অরাজনৈতিক। বিভিন্ন মতাদর্শী লোকজন আছেন। সমিতিগত ভাবে আমরা কেন্দ্র সরকারের জনবিরোধী নীতির বিপক্ষে।’’
দোলা এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের যদি হাজারো ভুল থাকে আমাদের কান মুলে দিয়ে শিক্ষা দিন। কিন্তু নিজের পায়ে নিজে কুড়ুল দয়া করে মারবেন না। দশ বছরের সরকারে হয়তো কিছু কাজ করা যায়নি। কিন্তু বাম জমানার তুলনায় মমতা-সরকারের আমলে এ রাজ্যে ষাট ভাগ কাজ হয়েছে। যা কাজ বাকি আছে সেটাও করে ফেলতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সকলের কাছে পৌঁছতে বদ্ধপরিকর।’’ দোলার দাবি, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেরে গেলে এই সব প্রকল্প কিন্তু বিজেপি অথবা সিপিএম-কংগ্রেস যারা আসবে তারা তুলে দেবে।’’
পূর্ণেন্দু মনে করিয়ে দেন, এই সভায় কোনও ঝান্ডা নেই। এর মানে হচ্ছে যে দলই হোক না কেন, সব মানুষ সেই দলের সদস্য হন না। দলের বাইরে অনেক মানুষ থাকেন। সেই সব মানুষ ভোট দিয়ে সরকার তৈরি করেন। তিনি জুড়েছেন, ‘‘জল-জমি-জঙ্গলের অধিকার, বাঁচার অধিকার কাউকে ঠিকা দিয়ে দেবেন না।’’ কুড়মিদের যে দাবিগুলি রাজ্যের পক্ষে মানা সম্ভব, সেগুলি মানার পক্ষে সরকার বিবেচনা করছে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। পরে শুভেন্দু প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে পূর্ণেন্দু বলেন, ‘‘প্রচার অনেক কিছু করতে পারে। যেমন আমার নামে কোনও প্রচার নেই। তার মানে কী আমি কাজ করি না? যাঁরা আস্তে আস্তে সিঁড়ি না কী সব বেয়ে-বেয়ে উঠেছেন বলছেন, তাঁদের মুখটা দেখা গিয়েছে। এবার কাজে প্রমাণ হবে জঙ্গলমহলের কত মানুষকে তাঁরা নেতৃত্ব দিতে পারেন। এটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা সাহসের সঙ্গে সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করছি।’’