রাস্তায় পড়ে রয়েছে রক্ত পরীক্ষার পর ব্যবহৃত সরঞ্জাম।
জনবহুল এলাকায় ব্যস্ত রাজ্য সড়কে যাতায়াত করছে বাস, মোটরসাইকেল-সহ নানা গাড়ি। সড়কের ধার বরাবর হাঁটছে পথচারীরা। আর সেই সড়কের একধারে রাস্তার উপরেই পড়ে রয়েছে রক্তভরা কাচের বোতল (টিউব) ও স্লাইড। একটা-দুটো নয়, প্রায় শতাধিক রক্তের নমুনা সংগ্রহের জন্য ব্যবহার করা কাচের বোতল ও স্লাইড পড়ে থাকার ছবি দেখা গিয়েছে তমলুক শহরের রাস্তায়।
রবিবার সকালে শহরের পদুমবসান এলাকায় হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের উপর পুরসভার অস্থায়ীভাবে জঞ্জাল রাখার জায়গায় এ ভাবে রক্তের নমুনা বোঝাই কাচের বোতল ও স্লাইড পড়ে থাকার ঘটনায় এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই আশঙ্কিত। তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় একাধিক নার্সিংহোম ও প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবরেটরি রয়েছে। ওই সব নার্সিংহোম ও প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ব্যবহারের পর বিভিন্ন সামগ্রী ও রক্তের নমুনা-সহ নানা বর্জ্য সংগ্রহ করার নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। বায়ো-মেডিক্যাল ওয়েস্ট হিসেবে চিহ্নিত ওই সব সামগ্রী থেকে পরিবেশে দূষণ ছড়ানো ছাড়াও রোগ সংক্রমণের মতো বিপদ দেখা দিতে পারে। তাই অন্যান্য আবর্জনার মতো এগুলি প্রকাশ্যে ফেলা নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও কী ভাবে এই সব বর্জ্য প্রকাশ্য রাস্তায় পড়ে থাকে কী করে? স্থানীয় বাসিন্দা সুরজিৎ বেরার অভিযোগ, ‘‘পুরসভার সাফাই কর্মীরা বাড়ি বাড়ি জঞ্জাল সংগ্রহ করেন এবং সে সব বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ীভাবে জমা করার পর গাড়িতে তুলে নিয়ে যান। তবে রবিবার সাধারণত জঞ্জাল সংগ্রহ করা হয় না। কিন্তু রবিবার সকালে যেভাবে প্রকাশ্য রাস্তাই রক্ত পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের বোতল ও স্লাইড পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে তাতে আমরা আতঙ্কিত। কারণ এগুলি খুবই বিপজ্জনক।’’ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘ওই সব বর্জ্য ফেলার ঘটনায় পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের নজরদারির অভাব স্পষ্ট। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরকে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
তমলুকের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘শহরে নার্সিংহোম ও প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলির আবর্জনা সংগ্রহের জন্য স্বাস্থ্য দফতরের অনুমোদিত একটি সংস্থা দায়িত্বে রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা মেনেই ওই সব আবর্জনা জমা ও সংগ্রহ করতে হয়। আমরা এ বিষয়ে নার্সিংহোম ও প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলিকে মাঝে মাঝেই সতর্ক করে থাকি। তার পরেও এভাবে কেউ রাস্তায় বায়ো-মেডিক্যাল বর্জ্য ফেলে থাকলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’
জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘নার্সিংহোম এবং প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবরেটরিগুলিকে তাঁদের বর্জ্য নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে জমা করতে হয় এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা তা নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে সংগ্রহ করে। এ ভাবে প্রকাশ্য রাস্তায় ওই সব বর্জ্য ফেলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাই কারা এ ভাবে রাস্তায় ওইসব বর্জ্য ফেলেছিল আমরা খোঁজ নিচ্ছি।’’