Suvendu Adhikari

TMC-BJP: একদিনের পুরপ্রধানের পদত্যাগ

পদত্যাগ করলেন খড়ার পুরসভার পুরপ্রধান অদ্যুৎ মণ্ডল। বৃহস্পতিবার ঘাটালের মহকুমা শাসকের দফতরে এসে ইস্তফাপত্র জমা দেন অদ্যুৎ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২২ ০৯:০৭
Share:

মহকুমাশাসকের দফতরে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে আসছেন অদ্যুৎ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই পদত্যাগ করলেন খড়ার পুরসভার পুরপ্রধান অদ্যুৎ মণ্ডল। বৃহস্পতিবার ঘাটালের মহকুমা শাসকের দফতরে এসে ইস্তফাপত্র জমা দেন অদ্যুৎ।

Advertisement

ইস্তফাপত্রে অদ্যুৎ লিখেছেন, ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করছেন তিনি। তবে পেশায় অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক অদ্যুৎ সাংবাদিকদের সামনে বললেন, ‘‘আমি একদিনের পুরপ্রধান ছিলাম। দলকে শিক্ষা দিতেই এমন রূঢ় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’’ সত্যি কি দলকে শিক্ষা দিতে পারলেন অদ্যুৎ? তৃণমূলের অন্দরে আলোচনায় আতসকাচের নীচে আসছে নেতাদের ভূমিকাও। কারণ, বুধবার বোর্ড গঠনের দিনে উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সভাপতি, সাংসদ প্রতিনিধি, ব্লক সভাপতি-সহ নেতৃত্বেরা। তা হলে কী ভাবে অদ্যুৎ বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপির সাহায্যে পুরপ্রধান হলেন? তা হলে কি অদ্যুৎ-এর পরিকল্পনায় নেপথ্যে মদত ছিল কারও? অপ্রিয় প্রশ্ন ঘুরেফিরে আসছে বারেবারে।

অদ্যুৎ সবক দিতে পারুন বা না পারুন তাঁর কাজকর্মে আলোড়ন পড়ে তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে। বুধবার রাতেই তৎপর তাঁরা। দলের কাউন্সিলদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। দফায় দফায় হয় বৈঠক। পাশাপাশি দলের ঘনিষ্ঠদের নিয়ে বৈঠক করেন অদ্যুৎ। এ দিন তিনি পুরসভায় যাননি। মহকুমা শাসকের দফতরে গিয়ে ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে দেন তিনি। তৃণমূলের বিক্ষুদ্ধ তিন কাউন্সিলর ও বিজেপির দুই কাউন্সিলরের সাহায্যে বুধবার পুরপ্রধান হয়েছিলেন তিনি। ভোটাভুটিতে তৃণমূলের ঘোষিত প্রার্থী সন্ন্যাসী দোলইকে ৬-৪ ভোটে হারিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এ দিন অবশ্য অদ্যুতের সঙ্গে দল বা বিজেপির কোনও কাউন্সিলর ছিলেন না। বরং এ দিন দুপুরে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরেরা পৌঁছে যান দলের ঘাটাল ব্লক কার্যালয়ে। তাঁরা লিখিত ভাবে জানান, বুধবার দলের ঘোষিত প্রার্থীর বিরুদ্ধাচারণ করায় তাঁরা ক্ষমাপ্রার্থী। বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের পক্ষে কল্যাণী সিংহ, রাজীবলোচন কোলারা বলেন, “আমরা ভুল পথে পরিচালিত হয়েছিলাম।”

Advertisement

‘একদিনের পুরপ্রধান’ ইস্তফা দিয়েছেন। এরপর কী? ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, “খড়ার পুরসভা পুরপ্রধানের ইস্তফাপত্র জমা পড়েছে। খড়ার পুরসভায় নতুন বোর্ড গঠনের পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, ফের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। সভা ডেকে পুরপ্রধান, উপপ্রধান নির্বাচন করা হবে। পুরো বিষয়টি আগামী ১০ দিনের মধ্যে মিটিয়ে ফেলতে চায় প্রশাসন।

এ দিন সাংবাদিকদের সামনে অদ্যুৎ-কে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমার কাছে বহু তথ্য আছে। ঘাটালের বেশ কয়েকজন নেতা আমাকে টাকা চেয়েছিলেন। পুরসভার কাজের কমিশন দিতে বলেছিলেন। সব রেকর্ড রয়েছে। সরাসরি দলেকে সব জানাব।” কিন্তু তাঁর কথা শুনছে কে? আপাতত যে দল সাসপেন্ড করেছে তাঁকে। তৃণমূলের জেলা কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, ‘‘দলের কাউন্সিলরদের ভয় দেখিয়ে ভোট দিতে বাধ্য করেছিলেন। এর খেসারত দিতে হয়েছে। দলের সঙ্গে কেউ ব্ল্যাকমেল করলে দল ছেড়ে কথা বলবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement