নন্দকুমারের একটি মাঠের বেহাল দশা। —নিজস্ব চিত্র।
খেলার মাঠে হয়েছিল পুজো। তা শেষ হয়েছে কিছু দিন আগেই। কিন্তু খোলা হয়নি এখনো মণ্ডপের বাঁশ। ফলে এখনও খেলার মাঠ ফিরে পাননি স্থানীয় কিশোরেরা। আবার কোথাও পুজোকে কেন্দ্র করে যে সব অস্থায়ী দোকানপাট বসেছিল, তাদের ফেলা আবর্জনা পরিষ্কার হয়নি এখনও। জেলার বিভিন্ন এলাকায় এই ছবি দেখা যাচ্ছে। তবে এর ব্যতিক্রমও রয়েছে।
শারোদৎসব চলতি বছরে মতো শেষ হয়েছে। এবার পালা কালী পুজোর। যে সব মাঠে দুর্গা এবং কালী পুজো উভয়ই হয়, সেখানে এখনও পুরোপরি মণ্ডপের কাঠামো খোলা হয়নি। কিন্তু এলাকার এমনই বহু পুজো কমিটি রয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, কাঠামো খোলার তেমন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। কোথাও কাঠামো খোলা হলেও ফেলে রাখা হয়েছে বাঁশ এবং অন্য সরঞ্জাম। নন্দকুমার ব্লক অফিসের কাছে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের ধারে একটি ময়দানে স্থানীয় একটি ক্লাব দুর্গাপুজো করেছিল। সেই উপলক্ষে বহু দোকানপাট এবং মেলা বসেছিল। পুজোর ক’দিন কয়েক হাজার করে দর্শকের সমাগম হচ্ছিল। তাঁদের একাংশ খাবারের প্যাকেট এবং নানা সামগ্রী ফেলেছেন মাঠে। সেই আবর্জনায় ভরে গিয়েছিল মাঠ। দুর্গাপুজো শেষে ময়দানে একাংশের আবর্জনা পরিষ্কার করা হলেও এখনও একাংশে আবর্জনা ও খুঁটি পোতার গর্ত রয়েছে।
ফের ওই ময়দানে কালীপুজোর আয়োজন হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দা নিমাই মাইতি বলেন, ‘‘হাইস্কুলের এই ময়দান এলাকার কিশোর-যুবকদের খেলাধুলার একমাত্র জায়গা। কিন্তু দুর্গাপুজো থেকে জানুয়ারী মাস পর্যন্ত কয়েক মাস ধরে পুজো এবং নানা উৎসব-অনুষ্ঠান চলে। মাঠ আবর্জনায় ভরে যায়। খেলাধুলার সমস্যায় পড়েন কিশোর-যুবকরা। পুজো ও অনুষ্ঠানের জন্য বিকল্প জায়গার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।’’ নন্দকুমার ব্লকের খঞ্চি হাইস্কুল ময়দানে দুর্গাপুজোর আয়োজন হয়েছিল। তবে পুজো শেষের পরেই ক্লাবের তরফে সেই ময়দানের আবর্জনা সাফাই করে দেওয়া হয়েছে।
পুজোর এক সপ্তাহ পরেও কাঁথিতে যে সব মাঠে মেলা বসে ছিল, তার অধিকাংশ জায়গাতেই এখনও আবর্জনা জমে। কোথাও আবার মণ্ডপের কাঠামোটুকুই খোলা হয়নি। কাঁথি শহরের কিশোরনগর গড়ের রাজবাড়ির দুর্গা পুজোকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর জমজমাট মেলা বসে। এবারেও দশমীতে সেই মেলা শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে রাজবাড়ি চত্বর এবং সংলগ্ন পুরসভার রাস্তার ধারে এখনও পড়ে রয়েছে কাগজের বাটি, পলিথিন এবং নানা রকমের বর্জ্য। মহালয়ার আগে থেকেই মেলা বসেছিল কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজের মাঠের ধারে। সেখানেও পড়ে রয়েছে নোংরা, আবর্জনা।
১১৬ বি জাতীয় সড়কের দু’দিকে কাঁথি থেকে দিঘা এবং কাঁথি থেকে নন্দকুমারগামী সড়কের ধারে বহু পুজো হয়েছিল। সেখানেও মেলা বসেছিল। সোমবার পুজো কমিটির পক্ষ থেকে চৌখালীতে মেলার মাঠ পরিষ্কার করা হয়েছে। তবে খেজুরি, রামনগর এবং ভূপতিনগরের মতন গ্রামীণ এলাকায় পুজোর পরেও মেলা চত্বর একই রকম নোংরা রয়েছে।
হলদিয়া মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় এখনও পর্যন্ত মণ্ডপ খোলার কাজ শেষ হয়নি। নন্দীগ্রাম মহিষাদল থেকে শুরু করে হলদিয়ার হাজরা মোড়, মঞ্জুশ্রী মোড়, চৈতন্যপুর এলাকার পুজোগুলিতে এখনও পর্যন্ত পরিকাঠামোর বাঁশ খোলার কাজই সম্পন্ন হয়নি। তবে বেশিরভাগ উদ্যোক্তারা নিজেদের উদ্যোগেই পুজো সংলগ্ন মাঠগুলি থেকে অন্য আবর্জনা পরিষ্কার করে নিয়েছে।