‘নব জোয়ার’ কর্মসূচিতে জেলায় এসে এক রাত সেখানে থাকছেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
তাঁর সফর সূচিতে জায়গা করেছে নন্দীগ্রাম। ‘নব জোয়ার’ কর্মসূচিতে জেলায় এসে এক রাত সেখানে থাকছেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামে তাঁর সেই কর্মসূচিতে দেখা যাবে জমি আন্দোলনের ‘শহিদ’ পরিবারকে।
নন্দীগ্রামের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ‘শহিদ’ পরিবারগুলিকে উপস্থিতি করা চেষ্টা দেখা যায় তৃণমূল-বিজেপি উভয় যুযুধান শিবিরে। আগামী বৃহস্পতিবার বিকালে চণ্ডীপুর বাজারের ক্ষুদিরাম মোড় থেকে পদযাত্রা করে সন্ধ্যায় নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছাবেন অভিষেক। পথে চণ্ডীপুরের হাঁসচড়া বাজারে চা চক্রে যোগ দেবেন। আর নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে একটি সভা করবেন অভিষেক। ওই সভায় জমিরক্ষা আন্দোলনের শহিদদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তিনি আলাদাভাবে কথা বলবেন। ওই সভায় উপস্থিত থাকার জন্য শহিদ পরিবারের সদস্যদের তৃণমূলের তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
দলীয় সূত্রের খবর, অভিষেকের সভায় জমি রক্ষা আন্দোলনে শহিদদের পরিবারের সদস্যদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে তাঁদের জন্য পৃথকভাবে মঞ্চের ব্যবস্থা হচ্ছে। জমিরক্ষা আন্দোলনে শহিদ ৪২ জনের পরিবারের সদস্য-সদস্যাদের সেখানে উপস্থিত হওয়ার জন্য নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ এবং দলের অঞ্চল নেতৃত্ব তাঁদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা তথা দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান পীযূষ ভুঁইয়া বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রথম নন্দীগ্রামে আসছেন। তাঁকে দলের তরফে অভ্যর্থনা জানানো হবে। চণ্ডীপুর থেকে নন্দীগ্রাম পর্যন্ত অভিষেকের নেতৃত্বে ঐতিহাসিক পদযাত্রা হবে।নন্দীগ্রামে পৌঁছে সভায় বক্তৃতা করবেন। ওই সভায় জমিরক্ষা আন্দোলনের শহিদ পরিবারের সদস্যদের দেখা করে আলাদাভাবে কথা বলবেন অভিষেক। শহিদ পরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টার ওই বাসস্ট্যান্ডের ওই সভায় আমন্ত্রণ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ পুলিশি অভিযানে নিহত তথা সোনাচুড়ার বাসিন্দা সুপ্রিয়া জানার স্বামী সুকুমার জানা। তিনি বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে আসছেন। তাঁর সভায় যাওয়ার জন্য তৃণমূলের ব্লক ও অঞ্চল নেতৃত্ব আমাকে জানিয়েছেন। সভায় যাব। অভিষেককে আমাদের কিছু দাবি দাওয়ার কথাও জানাব। আশা করছি উনি আমাদের কথা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে শুনবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’’
উল্লেখ্য, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দোয়ার পরে নন্দীগ্রামে শহিদ স্মরণের মতো অনুষ্ঠান শাসক এবং বিরোধী দুই দলের তরফেই পালন করতে দেখা যায়। ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে আয়োজিত ওই দুই অনুষ্ঠানেই শহিদ পরিবারের কিছু সদস্যদের হাজির থাকতে দেখা যায়। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, পঞ্চায়েত ভোটের আগে শুভেন্দুর বিধানসভা এলাকা নন্দীগ্রাম গিয়ে অভিষেক শহিদ পরিবারগুলিকে পুরোপুরি জোড়া ফুল শিবিরে ‘আনা’র চেষ্টা করছেন। এ ব্যাপারে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে জমি রক্ষা আন্দোলনে শহিদ পরিবারের পাশে শুভেন্দু আধিকারী সব সময় থেকেছেন। নন্দীগ্রামে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসছেন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে। তৃণমূল অভিষেকের সেই রাজনৈতিক সভায় শহিদ পরিবারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, এটা লোক দেখানো ছাড়া কিছুই নয়। এতদিন উনি কোথায় ছিলেন? নন্দীগ্রামে রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে এসে শহিদ পরিবারের কথা মনে পড়ল? নন্দীগ্রামের মানুষ এর জবাব দেবেন।’’