পুরোদমে: সোমবার তমলুকে জেলাশাসকের দফতরে।
নির্দেশ মতো সোমবার থেকে পুরোদমে শুরু হয়েছে সমস্ত সরকারি অফিসের কাজ। কর্মী-আধিকারিকদের হাজির এ দিন ছিল লক্ষ্যণীয়। তাদেঁর গন্তব্য পৌঁছে দিতে রাস্তায় বেসরকারি বাসও নেমেছে অন্যদিনের থেকে কয়েকগুণ বেশি। কিন্তু সেই বাসে যাত্রীদের তেমন দেখা নেই!
এ দিন জেলার বাস মালিকদের আপেক্ষ অন্যদিনের তুলনায় হলদিয়া-মেচেদা, শ্রীরামপুর-মেচেদা, হলদিয়া-কুকড়াহাটি, গেঁওখালি-তেরপখ্যার মতো স্থানীয় রুটে কয়েকগুণ বেশি বাস চলেছে। সেই সংখ্যাটা ১৬২। কিন্তু বেশিরভাগ রুটের যাত্রী নেই। অথচ, এদিন জেলা সদর তমলুকে জেলা পরিষদ, কৃষি দফতর, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের মতো সব অফিসেই ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ করে কর্মীরা হাজির হয়েছেন। শিল্প শহর হলদিয়ার একাধিক কারখানা এবং অফিসেও হাজিরা ছিল দেখার মতো। জেলা শাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘এ দিন জেলার সব অফিসে গড়ে ৭০ শতাংশ এবং কোথাও কোথাও এর বেশি কর্মীরা এসেছেন। কর্মীদের যাতায়াতের জন্য সরকারিভাবে আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা নেই। তবে বিভিন্ন রুটে বেসরকারি বাস চলাচল করায় যাতায়াতে অসুবিধা নেই।’’
জেলাশাসক বাস বেশি চলা এবং বেশি কর্মী হাজিরার কথা জানালেও বাস মালিকদের সংগঠন জানাচ্ছে, তাদের বাসে যাত্রীর দেখা নেই। এ দিন আগের মত মাত্র পাঁচ মিনিট অন্তরের বদলে ২০-৩০ মিনিট পরপর ছাড়া বাস চালানো হয়। দিঘা-হাওড়া রুটে ৪৮টি, এগরা-হাওড়া রুটে ৪৮টি, বলাইপন্ডা-কলকাতা রুটে ৩টি হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে ১৮ টি এবং হলদিয়া মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে ৯ টি বাস চলেছে এ দিন। শুধু নন্দীগ্রাম-মেচেদা এবং তমলুক-পাঁশকুড়া রুটে বেসরকারি বাস চলাচল শুরু হয়নি।
কিন্তু যে রুটে বাস চলেছে যে রুটে যাত্রী কই! বলাইপন্ডা-মেচেদা রুটের এক বাস কর্মী বিজিত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সকাল ৭ টা ২০ মিনিটে বলাইপন্ডা থেকে বাস চালানো শুরু করেছি। প্রথম বার যাতায়াতে ৩৩০ টাকা আয় হয়েছে।’’ হলদিয়া-মেচেদা জাতীয় সড়ক রুটের বাস মালিক শম্ভু জানা বলেন, ‘‘সকালে প্রথমে মেচেদা থেকে হলদিয়া পর্যন্ত বাস চালিয়ে ৫৪০ টাকা ও হলদিয়া থেকে মেচেদা ফেরার ২৪০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে।’’ জেলা বাস ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক মহম্মদ সামসের আরেফিন বলেন, ‘‘খুব কম সংখ্যক যাত্রী উঠেছেন। ফলে বাসের যাতায়াতের খরচও উঠছে না’’
বাসে যদি যাত্রী নেই, তা হলে সরকারি অফিসগুলিতে এক কর্মী-অধিকারীক এ দিন পৌঁছলেন কী করে?
‘ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র সম্পাদক সুকুমার বেরা জানাচ্ছেন, করোনা সংক্রণের ভয়ে সকলে বাস এড়াচ্ছেন। সরকারি ও বেসরকারি অফিস কর্মীদের একটা বড় অংশ মোটর সাইকেলে যাতায়াত করছেন। হলদিয়ার বিভিন্ন কারখানার কর্মীরা সাইকেলেও যাচ্ছেন। আবার কিছু সরকারি অফিস কর্মীদের যাতায়াতের জন্য সরকারিভাবে গাড়ির ব্যবস্থা রয়েছে। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকাতেও যাত্রী কিছুটা কম বলে দাবি সুকুমারের।
সব মিলিয়ে সোমবার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিনেও অফিসের লক্ষ্যণীয় কর্মী হাজি হলেও বাস মালিকদের কপালের ভাঁজ বাড়ল!