জীবাণুমুক্তির কাজ চলছে ঝাড়গ্রামে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ঝাড়গ্রামে। শহরের দুই ব্যবসায়ী করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলা করোনা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সূত্রের খবর, শহরের বাজার এলাকার একাধিক ব্যবসায়ীর উপসর্গ দেখা দিয়েছে। তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও জ্বর।
সংক্রমণে রাশ টানতে এই প্রথমবার জেলায় একাধিক বাজারকে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা (কন্টেনমেন্ট জ়োন) হিসেবে ঘোষণা করা হল। ঝাড়গ্রাম সদরের মহকুমাশাসক তথা পুর-প্রশাসক সুবর্ণ রায় জানান, জেলাশাসকের নির্দেশে মঙ্গলবার থেকে ১০ অগস্ট পর্যন্ত একসপ্তাহ এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। আগামী ১০ অগস্ট পর্যন্ত ওই এলাকাগুলিতে সম্পূর্ণ লকডাউন থাকবে। প্রশাসন সূত্রের খবর, এদিন জেলাশাসক আয়েষা রানির সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রশাসন-পুলিশের আধিকারিকেরা। এরপরেই শহরের জুবিলি বাজার, আদিবাসী বাজার, স্টেশন বাজার, আনাজ বাজার, কোর্ট রোডের বাজার, পণ্যবীথি মোড় থেকে মেন রেল ক্রসিং পর্যন্ত উড়ালপুলের তলায় দু’দিকের বাজার এলাকাগুলি গণ্ডিবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন জেলাশাসক।
এদিন দুপুরে মহকুমাশাসক সুবর্ণ রায় নিজে পথে নেমে গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় দোকানপাট বন্ধ করিয়ে দেন। পরে শহরের ওই সব বাজার এলাকা ও সংলগ্ন রাস্তা জীবাণুমুক্ত করা হয়। কোর্ট রোড চত্বরে রয়েছে পূর্ত বিভাগের দফতর। সেটিও বন্ধ থাকবে। এ দিন ঝাড়গ্রাম শহরের রাস্তায় পুলিশের ভূমিকা ছিল বেশ কড়া।
করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের এলাকাগুলি গণ্ডিবদ্ধ করার জন্য এর আগে বহুবার সওয়াল করেছিলেন চিকিৎসক মহলের একাংশ। কয়েকদিন আগে শহরের পুরাতন ঝাড়গ্রাম এলাকার এক মিষ্টি দোকানের মালিক করোনা আক্রান্ত হন। তারপরেও ওই এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করা হয়নি।
এদিকে, বিনপুরের একই পরিবারের ৮৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ, তাঁর স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক বৌমা সোমবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে পরীক্ষা করাতে আসেন। ট্রু-ন্যাটের প্রাথমিক পরীক্ষায় ছ’জনেরই রিপোর্ট পজ়িটিভ হয়। তাঁদের আইসোলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু রাতে ছ’জনেই নিজেদের গাড়িতে বিনপুরের বাড়িতে ফিরে যান। পরে স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশ গিয়ে মঙ্গলবার ভোরে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চূড়ান্ত আরটিপিসিআর পরীক্ষার জন্য এদিন তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ছ’জনকেই হাসপাতালের বিশেষ আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।
শহরের যে দু’জন ব্যবসায়ী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের কাপড়ের দোকান রয়েছে জুবিলি বাজারে। তাঁরা বাছুরডোবা এলাকার বাসিন্দা। এই মুহূর্তে জেলা করোনা হাসপাতালে বাছুরডোবার ওই দুই বাসিন্দা-সহ তিন জন চিকিৎসাধীন।