অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলার ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কয়েক জনকে আটক করল পুলিশ। —ফাইল চিত্র।
ঝাড়গ্রামে লোধাশুলি থেকে শালবনি যাওয়ার পথে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলার চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঝাড়গ্রাম থানায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশের একটি সূত্র।
‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচি নিয়ে শুক্রবার ঝাড়গ্রাম শহরে ছিলেন অভিষেক। সন্ধ্যায় রোড শো শেষে তাঁর কনভয় যখন শালবনির দিকে এগোচ্ছে, সেই সময় রাস্তার দু’পাশে কুড়মিরা স্লোগান তোলেন। তফসিলি জাতির স্বীকৃতি আদায়ের দাবিতে সম্প্রতি টানা আন্দোলন করছে ওবিসি শ্রেণিভুক্ত ওই সম্প্রদায়। তাদের আন্দোলনের আঁচে বেশ কয়েক বার ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার মতো জেলা অচল হয়েছে। বন্ধ হয়েছে ট্রেন চলাচল। শুক্রবার সন্ধ্যায় কুড়মি সম্প্রদায়ের ওই বিক্ষোভ পরে অশান্তির আকার নেয়। অভিযোগ, কনভয়ের দিকে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়।
অভিষেকের কনভয়ের শেষ গাড়িতে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। হামলায় তিনিও আহত হন বলে নিজেই জানান মন্ত্রী। তাঁর গাড়িচালকও আহত হন। তৃণমূলের অভিযোগ, অভিষেকের উদ্দেশে ‘চোর চোর’ স্লোগান দেওয়া হয়। অভিষেকের অভিযোগ, তিনি ওই বিক্ষোভকারীদের মুখে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান শুনেছেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ নিয়ে কুড়মি নেতাদের বিবৃতির দাবি করেন। তিনি বলেন, যদি তা না হয় তা হলে ধরে নেওয়া হবে তাঁরাই এই হামলার সঙ্গে যুক্ত।
শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবরে কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো-সহ মোট ১৫ জনের নামে এফআইআর করেছে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ। ধৃতদের শনিবার ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর,ধৃত চার জনের মধ্যেই তিন জনের বাড়ি গড়শালবনি এলাকায়। তাঁদের নাম অনিত মাহাতো, মনমোহিত মাহাতো এবং অজিত মাহাতো। প্রথম দু’জন পেশায় গাড়িচালক। তৃতীয় জন পেশায় চা বিক্রেতা। এছড়াও গ্রেফতার করা হয়ছে আদিবাসী নেগাচারি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি অনুপ মাহাতোকে। অনুপের বাড়ি মানিকপাড়া এলাকায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭,১৪৮,১৪৯ ,১৮৬ ,৩৫৩ ,৩৩২ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী দেবনাথ চৌধুরী বলেন,‘‘ঘটনায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ। ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এঁদের চার দিনের পুলিশি হেফাজত চাওয়া হয়। আদালতের কাছে আমরা জামিনের আবেদন জানিয়েছিলাম। তবে আদালত জামিন খারিজ করে ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।’’ এ নিয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার বলেন, ‘‘ঘটনায় তদন্ত চলছে।’’