স্নাতকে বাতিল, স্নাতকোত্তরে পরীক্ষা-দুর্ভোগ

নন্দীগ্রাম সীতানন্দ কলেজের পোস্ট গ্রাজুয়েটের এক পড়ুয়ার পরীক্ষা ছিল বাজকুল মিলনী কলেজে। তাঁর দাবি,  ‘‘ট্রেকারে চণ্ডীপুর পৌঁছনোর পরে আধঘণ্টা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পরে একটা বাসে কোনওরকমে দাঁড়িয়ে আসার সুযোগ পাই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

নতুন নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি ইস্যুতে কয়েকদিন ধরেই অশান্তি ছড়িয়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে। তার জেরে সোমবার স্নাতক স্তরের পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদিও, পোস্ট গ্রাজুয়েট বিভাগে প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা চালু রাখা হয়েছিল। ফলে এদিন সময়মতো বাস না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হলেন বহু পরীক্ষার্থী।

Advertisement

নন্দীগ্রাম সীতানন্দ কলেজের পোস্ট গ্রাজুয়েটের এক পড়ুয়ার পরীক্ষা ছিল বাজকুল মিলনী কলেজে। তাঁর দাবি, ‘‘ট্রেকারে চণ্ডীপুর পৌঁছনোর পরে আধঘণ্টা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পরে একটা বাসে কোনওরকমে দাঁড়িয়ে আসার সুযোগ পাই। তবে পরীক্ষা শুরু হওয়ার মিনিট পাঁচেক পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে পেরেছি।’’ একই ভাবে পরীক্ষা দিতে গিয়ে রাস্তায় সমস্যায় পড়তে হয়েছে হলদিয়া গভর্মেন্ট কলেজের পরীক্ষার্থীদের। পোস্ট গ্রাজুয়েটের এক পরীক্ষার্থী বলেন। ‘‘রানিচক বাসস্ট্যান্ডে সকাল থেকেই বাস ছিল না। পরে সাড়ে দশটা বেজে গেলে আর ঝুঁকি নিইনি। কয়েকজন বন্ধু মিলে প্রাইভেট গাড়িতে চেপে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে যাই।’’ হলদিয়া গভমেন্ট কলেজের পোস্টগ্রাজুয়েট পড়ুয়াদের পরীক্ষা কেন্দ্র নির্ধারিত হয়েছিল মহিষাদল রাজ কলেজে। এদিন সকাল থেকেই হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় জাতীয় নাগরিক পঞ্জি এবং নতুন নাগরিকত্ব আইন ইস্যুতে একাধিক মিটিং মিছিল হয়। তার জেরে পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। প্রসঙ্গত, সোমবার থেকে স্নাতক স্তরে বিজ্ঞান বিভাগের পঞ্চম সিমেস্টারের পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। কিন্তু পরীক্ষার্থীরা সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারবেন না বলে আশঙ্কা করে পরীক্ষা স্থগিত রাখার নির্দেশ গত শনিবার পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ৫৪টি কলেজেকে জানিয়ে দিয়েছিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তবে পোস্ট গ্রাজুয়েটের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা চালু রেখেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে সকাল থেকে দিঘা, কাঁথি, এগরা, কলকাতা রুটে বাস অনেক কম ছিল। সপ্তাহের প্রথম দিন হলেও অন্য দিনের তুলনায় এদিন সরকারি এবং বেসরকারি বাস কম চলেছে। ফলে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে যথেষ্ট অসুবিধায় পড়তে হয় পরীক্ষার্থীদের।

Advertisement

প্রশ্ন উঠেছে, সমস্যার কথা ভেবে স্নাতকস্তরের পরীক্ষা বাতিল করা হলেও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা বাতিল করা হল না কেন? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা, স্নাতক স্তরের পরীক্ষা বিভিন্ন কলেজে হয়। ফলে যাতায়াতের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে তা স্থগিত রাখা হয়েছে। পক্ষান্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যবেক্ষণ, স্নাতকোত্তরের বেশিরভাগ পড়ুয়া মেদিনীপুর শহরেই থাকেন। দূরের পড়ুয়ারা হস্টেলে বা মেসে থাকেন। ফলে এ ক্ষেত্রে পরীক্ষা বাতিলের প্রয়োজন পড়েনি।

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক হরিপদ সরকার বলেন, ‘‘প্রাথমিকভাবে পরীক্ষায় প্রভাব পড়তে পারে বলে স্নাতক স্তরে পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছিল। তবে পোস্ট গ্রাজুয়েটের সব পরীক্ষার্থী এদিন পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পেরেছেন। তাই আগামী দিনে পরীক্ষা বাতিল কিংবা স্থগিত রাখার ব্যাপার থাকছে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement