পরিচর্যা করা হচ্ছে ম্যানগ্রোভ চারার। নিজস্ব চিত্র
ইয়াস, আমপানের মতো ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের ধাক্কা সামলাতে উপকূলবর্তী এলাকায় ম্যানগ্রোভ জাতীয় গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই মতো কাজ এগিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায়। এ বার সেই একই ধাঁচে গাছ লাগানো হবে পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকাতেও। পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে ম্যানগ্রোভ অরণ্য তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছে বন দফতর।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে এই ম্যানগ্রোভ অরণ্য তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। দিঘার সমুদ্র তট থেকে রূপনারায়ণ এবং হলদি নদীর চরেও লাগানো হবে ওই গাছ। হলদিয়া রেঞ্জের রেঞ্জার দীপক মণ্ডল বলেন, ‘‘পূর্ব মেদিনীপুরে সমুদ্র এবং নদী তীরবর্তী এলাকাগুলিতে প্রায় ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বাঁধের থেকে ম্যানগ্রোভ বেশি করে ঝড় আটকাতে পারবে বলেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ম্যানগ্রোভ অরণ্য তৈরি করতে ১০ থেকে ১২ রকমের বীজ ব্যবহার হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে বাইন, খলসি, গরান, গর্জন, সুন্দরীর মতো গাছ।’’ মাটি ক্ষয় রোধ করতেই এই পরিকল্পনা বলেও জানিয়েছেন তিনি।
পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানার অমৃতবেড়িয়ার ভোলসরায় চলছে ম্যানগ্রোভ গাছের চারার পরিচর্যা। তার তদারকি করছেন ওয়েস্টবেঙ্গল জুওলজিক্যাল অথরিটির সদস্য এবং ম্যানগ্রোভ প্ল্যান্টেশনের নোডাল অফিসার সৌরভ চৌধুরী। তিনি বলেন, “বিপজ্জনক ঝড় প্রতিরোধ করতে নদী বা সমুদ্র বাঁধ কখনও কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে না। বিপজ্জনক ঝড়ের মোকাবিলা করতে পারে একমাত্র ম্যানগ্রোভ অরণ্য।’’ তাঁর মতে, ‘‘আগামী নভেম্বরের মধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুরের ৫০০ হেক্টর উপকুলবর্তী জমিতে ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ রোপণের কাজ শেষ হয়ে যাবে। যেখানে জোয়ারের জল ওঠা-নামা করছে সে রকম জায়গার প্রকৃতি দেখে গাছের আস্তরণ তৈরি করা হচ্ছে। জানুয়ারির মধ্যেই ম্যানগ্রোভ চারাগুলি নতুন মাটির সঙ্গে মানিয়ে নেবে। এর পর ৩ থেকে ৫ বছর পরিচর্যা করতে হবে ম্যানগ্রোভকে।’’ ৮-১০ বছরের মধ্যে ওই গাছগুলি পুরোদস্তুর অরণ্যের আকার নেবে বলেও মনে করেন সৌরভ। এতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে বলেও মনে করেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।