—ছবি পিটিআই
শুভেন্দু অধিকারীর ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা এখন তুঙ্গে। পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে সদলবলে কালীঘাটে গিয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন মানস ভুঁইয়া, অজিত মাইতির মতো পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতারা। দলীয় সূত্রে খবর, সোমবার ভাইফোঁটার দিন বিকেলে দলনেত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন মানসরা। অজিতদের দাবি, বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতেই তাঁরা দলনেত্রীর কাছে গিয়েছিলেন।
সবংয়ের ভূমিপুত্র, রাজ্যসভার সাংসদ মানস বলেছেন, ‘‘তাঁর (দলনেত্রী) সঙ্গে আমরা সাক্ষাৎ করতে এসেছিলাম। নমস্কার জানালাম। তিনি আমাদের শুভেচ্ছা দিলেন। আমরা তাঁর নেতৃত্বে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কথায়, ‘‘দলনেত্রী ভালভাবে কাজ করতে বলেছেন। ওঁর নেতৃত্বে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি।’’
দলীয় সূত্রে খবর, সোমবার বিকেলে জেলার বিধায়ক, দলের কয়েকজন পদাধিকারী, শাখা সংগঠনগুলির সভাপতিদের নিয়েই কালীঘাটে দলনেত্রীর বাড়িতে গিয়েছিলেন মানস, অজিতরা। জেলার কয়েকজন বিধায়ক অবশ্য শারীরিক অসুস্থতার কারণে যেতে পারেননি। ওই সূত্রে খবর, জেলা থেকে একসঙ্গে এ ভাবে কালীঘাটে যাওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হন অজিতই। এর পিছনে জেলায় দলের সকলের ঐক্যবদ্ধ চেহারাটা দেখানোর কৌশল ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। শুরুতে ঠিক ছিল, রবিবার বিকেলে কালীঘাটে যাবেন অজিতরা। ওই দিন দুপুরে প্রয়াত হন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। প্রাথমিক পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়। পরে ঠিক হয়, সোমবার বিকেলে কালীঘাটে যাবেন তাঁরা। সেই মতোই সোমবার বিকেলে দলনেত্রীর বাড়িতে পৌঁছন অজিতরা। শুভেন্দুকে নিয়ে জল্পনার মধ্যে দলনেত্রীর সঙ্গে এই সাক্ষাতের বিশেষ তাৎপর্য দেখছে রাজনৈতিক মহল। মানসের অবশ্য দাবি, ‘‘অন্য কোনও পরিস্থিতি নেই। সব পরিস্থিতি মমতাময়।’’
জানা যাচ্ছে, সোমবার কালীঘাটে সাক্ষাৎ পর্বে বিধায়কদের মমতা বুঝিয়েছেন, এই সময়ের মধ্যে অনেক কাজ হয়েছে। এ বার বিধায়কদের আরও বেশি জনসংযোগে মন দিতে হবে। দলনেত্রীর বার্তা, ‘‘সবাই মিলেমিশে কাজ করো। এটাই বলার।’’
দলীয় সূত্রে খবর, খড়্গপুরের (গ্রামীণের) বিধায়ক দীনেন রায়, নারায়ণগড়ের বিধায়ক প্রদ্যোত ঘোষ, গড়বেতার বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী, দাঁতনের বিধায়ক বিক্রম প্রধান, খড়্গপুরের (সদর) বিধায়ক প্রদীপ সরকার প্রমুখের সঙ্গে কথা বলেছেন দলনেত্রী। জানা যাচ্ছে, সাক্ষাৎ পর্বে কাউকে বকাঝকা করেননি দলনেত্রী। তবে পরোক্ষে খানিকটা সতর্ক করেছেন। নাম ধরে একাধিক বিধায়ককে এলাকায় দলের সকলকে নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। দলীয় সূত্রে খবর, এই সাক্ষাৎ পর্বে একবারের জন্যও শুভেন্দু-প্রসঙ্গ ওঠেনি। তবে অন্য এক প্রসঙ্গে কারও নাম না- করেই দলনেত্রী না কি একবার বলেছেন, "জন্মদাত্রী মায়ের সঙ্গে কখনও বেইমানি করতে নেই।’’
সোমবার ভাইফোঁটা ছিল। দেখা করতে যাওয়া সকলকেই মিষ্টির প্যাকেট দিয়েছেন মমতা। 'দিদি'র দেওয়া মিষ্টির ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী।