Elephant Attacks

হাতির তাড়া খেয়ে পুকুরে ঝাঁপ, মৃত্যু ঝাড়গ্রামের প্রৌঢ়ের! ফসল বাঁচাতে গিয়ে গেল প্রাণ

এলাকায় হাতির দল আসছে, এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই কৃষকরা ফসল বাঁচাতে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। শনিবার সন্ধ্যায় হাতে বড় টর্চ নিয়ে জমির দিকে ছুটে যান অনেকে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পরীক্ষিত মাহাতো।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:৪৮
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

হাতির হানা থেকে ধান জমি রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ দিতে হল প্রৌঢ়কে। ঝাড়গ্রামের বড় চাঁদাবিলা গ্রামের ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম পরীক্ষিত মাহাতো (৪২)।

Advertisement

স্থানীয় এবং বন দফতর সূত্রে খবর, শনিবার সন্ধ্যায় জামবনি ব্লকের ডুলুং নদী সংলগ্ন ধনিয়াপাল এলাকায় দুই-তিন দিন ধরে ৪০টি হাতি ঝাড়গ্রাম রেঞ্জের পুকুরিয়া বিটের ধান জমিতে ঢুকে পড়ে। এলাকায় হাতির দল আসছে, এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই কৃষকরা ফসল বাঁচাতে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। শনিবার সন্ধ্যায় হাতে বড় টর্চ নিয়ে জমির দিকে ছুটে যান অনেকে। একটি দলছুট হাতি পুকুরিয়া বিটের বড় চাঁদাবিলা গ্রাম সংলগ্ন একটি ক্ষেতে ঢুকে পড়ে। হঠাৎ করে হাতির দলের সামনে পড়ে যান পরীক্ষিত নামে এক কৃষক। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, পরীক্ষিত হাতির হাত থেকে বাঁচার জন্য ধান জমির পাশে একটি পুকুরে ঝাঁপ দেন। পরে হাতিটি বড় চাঁদাবিলা এলাকার ধান জমি থেকে বেরিয়ে ঝাড়গ্রাম-চন্দ্রী পিচ রাস্তা পেরিয়ে ঢেঁকিপুরার জঙ্গলের দিকে চলে যায়। কিন্তু পরীক্ষিতের আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।

রবিবার সকালে পুকুরে পরীক্ষিতের গামছা এবং টর্চ ভেসে থাকতে দেখেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা খবর দেন পুলিশে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় ঝাড়গ্রাম ব্লকের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ডুবুরিরা। রবিবার সকাল থেকে পুকুরে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। দুপুর ২টো নাগাদ পুকুর থেকে মৃত অবস্থায় পরীক্ষিতের দেহ উদ্ধার হয়।

Advertisement

পরীক্ষিতের দেহ পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসতে চাইলে তাঁর পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দেন। বন দফতরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দা কল্পনা মাহাতোর কথায়, ‘‘প্রতিনিয়ত এলাকায় হাতি ঢুকে পড়ছে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করছে। বন দফতরকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না। এ দিকে ধান জমি দেখতে গিয়ে প্রাণ হারাতে হল এক জনকে।’’

অন্য দিকে, বিকেলের দিকে বন দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্ত জমি পরিদর্শন করেন। তার পর উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যেতে দেন গ্রামবাসীরা। যদিও পরীক্ষিতের মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে বন দফতর। ঝাড়গ্রমের ডিএফও পঙ্কজ সূর্যবংশী বলেন, ‘‘পুকুর থেকে একটি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ওই ঘটনার সঙ্গে হাতির কোনও সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে জানা যাবে। সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।’’ ওই মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার বলেন, ‘‘স্থানীয়দের দাবি, হাতির তাড়া খেয়ে পুকুরের জলে পড়ে গিয়েছিলেন প্রৌঢ়। দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement