জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিকের ক্লাবের এই অসম্পূর্ণ পুজো মণ্ডপ উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।
ঢের কাজ বাকি মণ্ডপের। অথচ সেই অসম্পূর্ণ পুজো মন্ডপ উদ্বোধন ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে উদ্বোধন করে দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেটাও আবার পিতৃপক্ষে অমাবস্যা তিথিতে!
কেন মুখ্যমন্ত্রী তড়িঘড়ি একাধিক মণ্ডপ এ ভাবে উদ্বোধন করলেন, তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে নানা মহলে। কটাক্ষ করেছে গেরুয়া শিবির। স্থানীয় বিধায়ক তথা বিজেপির কাথি সংগঠনিক জেলার সভাপতি অরূপ কুমার দাস বলেছেন,"মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়ে গিয়েছেন। পাছে অন্য কেউ পুজোর উদ্বোধন করে দেন, তাই দেবীপক্ষ শুরু হওয়ার আগে অমাবস্যাতেই তড়িঘড়ি উদ্বোধন করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’
উল্লেখ্য, বুধবার মহালয়া উপলক্ষে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে দুর্গা পুজা মন্ডপ উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধনের তালিকায় ছিল জেলার ১৫ টি দুর্গা পুজো। সেই তালিকায় ছিল কাঁথি শহরের তিনটি দুর্গা পুজো—ক্লাব চৌরঙ্গি, ক্লাব ইউথ গিল্ড, এবং সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। এই প্রত্যেকটি পুজোই শাসকদলের নেতাদের মাধ্যমে পরিচালিত। এবং তিনটি ক্লাবের পুজা মণ্ডপের এখনও কাজ ঢের বাকি।
ক্লাব চৌরঙ্গির মাথায় রয়েছেন খোদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক।উত্তম লছেন," জেলার পুজো মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে উদ্বোধন হওয়া একটা আলাদা আবেগের, গর্বের বিষয়। আমরাও তাই মুখ্যমন্ত্রীর হাতে মণ্ডপের উদ্বোধন করিয়েছি। তবে দুর্যোগের কারণে কিছুদিন শিল্পীরা কাজ করতে পারেনি বলে হয়তো কিছু কাজ বাকি ছিল।"
সেখান থেকে কিছুটা দূরে সাধু জানার পুকুর পাড়ে ইউথ গিল্ড ক্লাবের পুজো মণ্ডপ। বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালি এরও উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার ওই পুজো মণ্ডপে গিয়ে দেখা গেল, চলেছে রঙের কাজ। পুজো মণ্ডপ অসম্পূর্ণ থাকার কথা মানছেন ইউথ গিল্ডের অন্যতম কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ মাইতি। তিনি দাবি করেন, "সামান্য বাকি।"
প্রতিটি জেলার জেলাশাসকদের জানানো হয়েছিল, নবান্নে জেলার কোনও পুজোর উদ্বোধনের অনুরোধ এলে তা প্রথমে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের কাছে পাঠানো হবে। তিনি জেলা পুলিশ সুপার বা পুলিশ কমিশানরের সঙ্গে কথা বলে সেই পুজোর সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নেবেন। এর পর জেলাশাসক পুজোর তালিকা চূড়ান্ত করে নবান্নে পাঠাবেন। মুখ্যমন্ত্রী জেলাশাসকের তৈরি করা তালিকায় উল্লেখ থাকা পুজোগুলোরই উদ্বোধন করবেন।
পূর্ব মেদিনীপুরে ওই তালিকায় বাদ গিয়েছে কাঁথি শহরের রাজাবাজার এলাকার মহিলা পরিচালিত দুর্গা বাড়ির পুজো মণ্ডপ। এই পুজো কমিটির মাথায় রয়েছেন কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবল মান্না। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের দেওয়া ৮৫ হাজার টাকার অনুদান ফেরত দিয়েছে ওই পুজো কমিটি। তার জেরে এই পুজোকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের একাংশ সূত্রের খবর।