মল্লিক বাড়ির প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র
দুর্গা বাড়ির মেয়ে। শিব হলেন জামাই। গোয়ালতোড়ের পিংবনির মল্লিক পরিবার দুর্গাকে মেয়ে আর শিবকে জামাই রূপে পুজো করছে ৩০৬ বছর ধরে। স্থায়ী দুর্গা মণ্ডপে একসঙ্গে শিব - দুর্গার মাটির প্রতিমা গড়ে পুজো করে মল্লিক পরিবার।
দুর্গা এখানে দ্বিভুজা। সঙ্গে থাকে কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী। দুর্গার রূপ এখানে মহিষাসুরমর্দিনী নয়। তাই মহিষাসুর, মহিষ থাকে না এই পরিবারের পুজোয়। এখানকার পুজোর আরও এক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এখানে পুজোর সময় কোনও প্রাণী, ফল বা কোনও আনাজ বলি হয় না। বলি হয় পায়েসের। সেটা কেমন? পরিবারের প্রবীণ সদস্য অশোক কুমার মল্লিক বলেন, ‘‘এই রীতি আমাদের বরাবর চলে আসছে। দেবীর যিনি ভোগ রান্না করেন তিনি ময়দা ও গুড় দিয়ে বিশেষ ধরনের একটি পায়েস করেন। সন্ধিপুজোর পর দেবীর কাছে সেই পায়েসকে পদ্ম ডাঁটা দিয়ে বলি দেওয়া হয়।’’ পরিবারের আরেক প্রবীণ সদস্য তাপসকুমার মল্লিক বলেন, ‘‘পরিবারের পুজো শুরু হয় প্রতিপদে। শেষ হয় বিজয়া দশমীতে। পারিবারিক প্রথা মেনে আমরা বাড়িতেই বিভিন্ন নাড়ু, মিষ্টি তৈরি করি। পুজোর সময় একসঙ্গে পরিবারের সকলেই মিলিত হই।’’ হুগলি জেলার শ্যামবাজারে আদি বাড়ি এই মল্লিক পরিবারের। পরিবারের বর্তমান সদস্যেরা জানালেন, তিনশো বছর আগে সম্ভবত ঈশান মল্লিক এই পুজো শুরু করেছিলেন। পারিবারিক ব্যবসার কারণে পরিবারের অনেকেই চলে আসেন গোয়ালতোড়ের পিংবনিতে। এখানেও তাঁরা শুরু করেন শিবদুর্গার পুজো।
তিনশো বছরেরও বেশি পুরনো চন্দ্রকোনা রোডের মঙ্গলপাড়ার কোলে পরিবারের দুর্গাপুজো শুরু হয়ে গেলো রক্তদান শিবিরের মধ্য দিয়ে। বৃহস্পতিবার এই শিবিরের উদ্বোধন করেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা। ছিলেন বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সমূহের নিয়ামক হরিপ্রসাদ সরকার, গড়বেতা ২ বিডিও অভিজিৎ চৌধুরী, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আকাশদীপ সিংহ, ধীমান কোলে প্রমুখ। পারিবারিক পুজোতেও দেওয়া হয় সবুজায়নের বার্তা।