প্রতীকী ছবি।
এ রাজ্যের বেশ কয়েকজন প্রাক্তন সাংসদ সম্পর্কিত নথি তলব করেছে লোকসভা। সেই নথির খোঁজে হন্যে প্রশাসন। শুরু হয়েছে চিঠিচাপাটি।
ওই প্রাক্তন সাংসদদের মধ্যে অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিকজনও রয়েছেন। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট নথি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যথাস্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’’ নথি কী মিলেছে? সদুত্তর এড়িয়ে ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘বিষয়টি একেবারেই প্রশাসনিক।’’ জেলা প্রশাসনের অন্য এক আধিকারিক বলেন, ‘‘একাধিক জায়গায় খোঁজ করা হচ্ছে। নিশ্চিতভাবেই নথি মিলবে।’’ বিষয়টি ঠিক কী? কেনই বা লোকসভার এই তলব?
প্রশাসন সূত্রে খবর, সম্প্রতি লোকসভা থেকে এক চিঠি এসেছে রাজ্য প্রশাসনের সদর দফতর নবান্নে। পরে নবান্ন থেকে ওই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের সদর দফতরগুলিতে। ওই সূত্রে খবর, প্রথম থেকে পঞ্চম লোকসভার মধ্যেকার সময়ে সাংসদ ছিলেন, এ রাজ্যের এমন ৫৫ জন প্রাক্তন সাংসদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কিত তথ্য লোকসভার রেকর্ডে নথিভুক্ত নেই। অর্থাৎ, তাঁরা জীবিত না মৃত, তা নথিভুক্ত নেই। ওই তথ্য নথিভুক্তির জন্যই লোকসভার চিঠি। এই সময়ের মধ্যে কয়েকদফায় লোকসভা কেন্দ্রের এলাকা পুনর্বিন্যাস হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই চিঠিতে এমন কিছু লোকসভা কেন্দ্রের নামের উল্লেখ রয়েছে, যে নামের লোকসভা কেন্দ্র এখন নেই। এলাকা পুনর্বিন্যাসের পরে ওই কেন্দ্রের নতুন নাম হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্যের ওই ৫৫ জন প্রাক্তন সাংসদের মধ্যে প্রথম লোকসভার সদস্য ছিলেন ১৩ জন। দ্বিতীয় লোকসভার সদস্য ৮ জন, তৃতীয় লোকসভার ১৩ জন, চতুর্থ লোকসভার সদস্য ৯ জন এবং পঞ্চম লোকসভার সদস্য ছিলেন ১২ জন। ওই সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, প্রথম লোকসভা গঠিত হয়েছিল দেশ স্বাধীনের বছর পাঁচেকের মাথায়, ১৯৫২ সালে। দ্বিতীয় লোকসভা গঠিত হয়েছিল ১৯৫৭ সালে। তৃতীয় লোকসভা গঠিত হয়েছিল ১৯৬২ সালে। চতুর্থ লোকসভা গঠিত হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। আর পঞ্চম লোকসভা গঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালে। ওই প্রাক্তন সাংসদদের মধ্যে অবিভক্ত মেদিনীপুরের সুবোধচন্দ্র হাঁসদা এবং অমিয়কুমার কিস্কুর নাম রয়েছে। মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে জিতে দ্বিতীয় লোকসভার সদস্য হয়েছিলেন সুবোধচন্দ্র। ঝাড়গ্রাম কেন্দ্র থেকে জিতে তিনি তৃতীয় লোকসভার সদস্যও হয়েছিলেন। সুবোধচন্দ্র ইন্দিরা গাঁধীর সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। , অন্যদিকেঝাড়গ্রাম কেন্দ্র থেকে জিতে চতুর্থ লোকসভার সদস্য হয়েছিলেন অমিয়কুমার। ওই কেন্দ্র থেকে জিতে তিনি পঞ্চম লোকসভার সদস্যও হয়েছিলেন।
সুবোধচন্দ্র এবং অমিয়কুমার, দু’জনেই প্রয়াত হয়েছেন। এঁদের মৃত্যুর শংসাপত্র জোগাড়ে পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। জানা যাচ্ছে, এ নিয়ে একাধিক দফতরের মধ্যে চিঠিচাপাটিও শুরু হয়েছে। প্রাথমিক খোঁজখবর নিয়ে প্রশাসনের এক সূত্র জেনেছে, অমিয়কুমার ১৯৮৯ সালে ও সুবোধচন্দ্র ২০০৪ সালে মারা গিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাক্তন সাংসদের মৃত্যুর শংসাপত্রের প্রতিলিপি-সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে যে রিপোর্ট পাঠানোর তা পাঠানো হবে।’’ জেলা থেকে রিপোর্ট যাওয়ার কথা নবান্নে। নবান্ন থেকে লোকসভায়।