রেলপথের প্রতিশ্রুতি বিজেপির

শুধু নতুন রেলপথই নয়, স্থানীয়স্তরে রেল সংক্রান্ত দাবি গুলিও প্রচারে আনছেন ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কুনার হেমব্রম।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৯ ০২:২১
Share:

রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়া রেলপথের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তারপর কেটে গিয়েছে আট বছর। এ ব্যাপারে প্রাথমিক সমীক্ষা হলেও ‘অলাভজনক প্রকল্পটি’ আপাতত ঠান্ডাঘরে রয়েছে। তবে এ বার নির্বাচনী প্রচারে ঝাড়গ্রাম-বান্দোয়ান রেলপথের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে বিজেপি।

Advertisement

শুধু নতুন রেলপথই নয়, স্থানীয়স্তরে রেল সংক্রান্ত দাবি গুলিও প্রচারে আনছেন ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কুনার হেমব্রম। ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপি-র সভাপতি সুখময় শতপথীর সাফ কথা, ‘‘কুনারকে সাংসদ নির্বাচিত করলে ঝাড়গ্রামের ঝাড়গ্রাম-বান্দোয়ান সমীক্ষা হওয়া রেলপথ সহ যাবতীয় রেল সংক্রান্ত দাবি বাস্তবায়িত হবে, এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। প্রচারে সেই কথাই বলা হচ্ছে।’’ সুখময়ের অভিযোগ, সাংসদের কাজ হচ্ছে এলাকার বৃহত্তর সমস্যা ও কেন্দ্রীয়স্তরে সমাধান সম্ভব এলাকাবাসীর এমন দাবি-দাওয়া সংসদে তুলে ধরা। গত পাঁচ বছরে তৃণমূলের সাংসদকে এমন কোনও সদর্থক ভূমিকায় এলাকাবাসী দেখেননি বলে অভিযোগ সুখময়ের। তাঁর দাবি, মানুষ রেল সংক্রান্ত দাবি-দাওয়া করেছেন।

পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ান বিধানসভা এলাকাটি ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। বান্দোয়ান বিধানসভা এলাকায় কোনও রে‌লপথ নেই। আশির দশকে আদ্রা থেকে বান্দোয়ান হয়ে ঝাড়গ্রাম রেলপথে দাবি উঠেছিল। আদ্রা-ঝাড়গ্রাম রেলপথ সংগ্রাম সমিতি-র এ ব্যাপারে দীর্ঘ আন্দোলনও করেছিল। । ঝাড়গ্রাম থেকে সরাসরি রেলপথে বান্দোয়ান যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। ঝাড়গ্রাম থেকে টাটানগর ও টামনা হয়ে অনেকটা ঘুরপথে পুরুলিয়া যেতে হয়। ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়ার মধ্যে হাতে গোনা এক-দু’টি লোকাল ও এক্সপ্রেস চলে। দীর্ঘপথে বিশেষত লোকাল ট্রেনে সময়ও লাগে বিস্তর।

Advertisement

বান্দোয়ান-ঝাড়গ্রামের মধ্যে রেলপথের বিষয়ে ২০১৫-১৬ সালে সমীক্ষা করেছিল দক্ষিণ-পূর্ব রেল। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম, বান্দোয়ান, ঝাড়খণ্ডের পটমদা হয়ে চাণ্ডিল পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার প্রস্তাবিত রেলপথের সমীক্ষার রিপোর্ট রেলবোর্ডে জমা পড়েছিল। রিপোর্ট পাওয়ার পরে রেল বোর্ডের তরফে দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের কাছে ওই সমীক্ষা রিপোর্ট সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল। গত বছর নভেম্বরে রেল বোর্ডের কাছে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত জবাবি-পত্র জমা পড়েছিল। রেলপথটি ‘অলাভজনক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক কর্তা বলছেন, ‘‘সরকার চাইলে কোনও এলাকার অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য ক্ষতি স্বীকার করেও নতুন লাইন অনুমোদন করতে করতে পারে। বিষয়টি এখন রেলবোর্ডের বিবেচনাধীন’’ আদ্রা-ঝাড়গ্রাম রেলপথ সংগ্রাম সমিতি-র সম্পাদক আনন্দময় সেন বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন আমাদের দাবির ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছিলেন। তাঁর হাতে আমরা দাবিসনদ দিয়েছিলাম। সমীক্ষা হলেও এখনও দাবিপূরণ হয়নি। এই রেলপথ হলে দুই জেলার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রাম জেলার ৯ট ব্লক ও পর্যটন কেন্দ্র রেলপথে জুড়বে।’’

তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা বলেন, ‘‘বিজেপি-র ভোট রাজনীতি সর্বস্ব মিথ্যা প্রচারে মানুষ মোটেই বিভ্রান্ত হবেন না। আমাদের প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement