অপেক্ষায়: ঝাড়গ্রামের বাঁদরভুলা প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
দু’মাস পরে ঝাড়গ্রাম জেলায় পর্যটকদের জন্য খুলছে সরকারি অতিথিনিবাস। প্রথম পর্যায়ে আগামী ৮ জুন পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমের দু’টি প্রকৃতি পর্যটনকেন্দ্র খোলা হচ্ছে। নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন থেকেই নিগমের ওয়েবসাইটে অনলাইনে বুকিং করা যাবে। ঘর খালি থাকলে ‘স্পট বুকিং’ও করা যাবে।
ঝাড়গ্রাম জেলায় বন উন্নয়ন নিগমের তিনটি প্রকৃতি পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ঝাড়গ্রাম শহর লাগোয়া বাঁদরভুলা প্রকৃতি পর্যটনকেন্দ্র এবং ঝাড়গ্রাম ব্লকের লোধাশুলি প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রদু’টি আগামী ৮ জুন থেকে খোলা হচ্ছে। আজ, শুক্রবার, ৫ জুন ওই দু’টি প্রকৃতি পর্যটনকেন্দ্র জীবাণুমুক্ত করা হবে। বন উন্নয়ন নিগমের আর একটি প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে গোপীবল্লভপুরের হাতিবাড়ি এলাকায়। সেখানে এখন করোনা কোয়রান্টিন কেন্দ্র করা হয়েছে। তাই হাতিবাড়ি প্রকৃতি পর্যটনকেন্দ্রটি এখন খোলা সম্ভব হচ্ছে না। বন উন্নয়ন নিগমের মেদিনীপুর বিভাগের ডিভিশনাল ম্যানেজার সত্যজিৎ রায় বলেন, ‘‘আগামী সোমবার, ৮ জুন থেকে বাঁদরভুলা ও লোধাশুলি প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র দু’টি খুলছে। উপযুক্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেখানে পর্যটকেরা থাকতে
পারবেন। তবে হাতিবাড়ির প্রকৃতি পর্যটনকেন্দ্রটি কোয়রান্টিন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় সেটি এখন চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।’’
বন উন্নয়ন নিগমের লোধাশুলি বনাঞ্চলের রেঞ্জ ম্যানেজার নিখলরঞ্জন মণ্ডল জানান, প্রকৃতি পর্যটনকেন্দ্র দু’টিতে থাকার জন্য পর্যটকদের করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে। পর্যটকদের ঘর দেওয়ার আগে থার্মাল স্ক্রিনিং করা হবে। পর্যটকদের প্রত্যেককে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে হবে। পর্যটক চলে যাওযার পরে সেই ঘরটি জীবাণুমুক্ত করে তবেই অন্যকে ফের থাকতে দেওয়া হবে। নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, পর্যটকদের জ্বর-সর্দি থাকলে অবশ্য অগ্রিম বুকিং থাকলেও ঘর দেওয়ার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
পর্যটন উন্নয়ন নিগমের ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সের ম্যানেজার নিমাই ঘটক বলেন, ‘‘এখনও অতিথিশালা খোলার নির্দেশ আসেনি। তবে পুরো কমপ্লেক্স জীবাণুমুক্ত করে রাখা হয়েছে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গত ২১ মে থেকে খুলেছে কিছু বেসরকারি লজ-হোটেল। ঝাড়গ্রাম হোটেল ওনার্স ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন কর্মকার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গত ২১ মে থেকে জেলার ৪৪টি বেসরকারি লজ-হোটেলের মধ্যে ২৫টি খুলেছে। তবে লোকজন আসছেন না।’’
পর্যটন দফতর স্বীকৃতি ঝাড়গ্রাম ট্যুরিজম সংস্থার কর্তা সুমিত দত্ত জানান, দু’মাসের লকডাউনে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত জেলার প্রায় হাজার তিনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেম। সুমিত বলেন, ‘‘কলকাতা ও পার্শ্ববতী জেলাগুলিতে করোনার প্রকোপ রয়েছে। মূলত, ওই সব এলাকার লোকজন ঝাড়গ্রামে বেশি বেড়াতে আসেন। করোনার প্রকোপ কমলেই পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী।’’
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের আপত্তিতে গ্রামীণ এলাকার হোম স্টে গুলি এখনও খোলা হয়নি বলে জানা গিয়েছে।