বেলপাহাড়ির বোদাডিহির সাদা পাহাড়। নিজস্ব চিত্র।
বেলপাহাড়ির একাধিক জায়গায় রয়েছে সাদা পাথরের পাহাড়। দিন দিন জঙ্গলের আড়ালে সাদা পাহাড়গুলি জনপ্রিয় হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সাদা পাথরের পাহাড়গুলি সংরক্ষণ বা নজরদারির দাবি তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। দিন যত বাড়ছে বেলপাহাড়ির গতানুগতিক পর্যটন কেন্দ্র ছাড়াও ‘অফবিট’ জায়গাগুলিতে মানুষের আনাগোনা বাড়ছে। সাদা পাহাড়ের পাশাপাশি রয়েছে হলুদ ও বাদামি রংয়ের পাহাড়ও।
জানা গিয়েছে, বেলপাহাড়ির এই সাদা পাথরগুলি আদতে কোয়ার্টজাইট পাথর। এই পাথরের দাম বেশ রয়েছে। বেলপাহাড়ির পর্যটন কেন্দ্র বলতে ঘাঘরা জলপ্রপাত, লালজল গুহা, খাঁদারানি, গাড়রাসিনি পাহাড়, চাকাডোবা থেকে কাঁকড়াঝোর যাওয়ার টেকিং রুট, কাঁকড়াঝোড়ের মনোরম পরিবেশের পাশাপাশি ঢাঙ্গিকুসুমের হদহদি জলপ্রপাতে অধিকাংশ পর্যটকরা যান। কিন্তু বেলপাহাড়িতে পর্যটকদের কাছ থেকে তুলনামূলক ভাবে আড়ালে রয়েছে সাদা পাহাড়। চকচক করা সাদা পাথরের এই পাহাড় পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। বেলপাহাড়ি ব্লকের একাধিক জায়গায় রয়েছে এই সাদা পাহাড়। বেলপাহাড়ির ব্লকের বালিচুয়া এলাকায় রয়েছে চিতিপাহাড়। যা সাদা পাথরের পাহাড়। সেখানে অসংখ্য খাঁজ ও গুহা রয়েছে।
বেলপাহাড়ি ব্লকের ইন্দিরা চক থেকে চাকুলিয়া যাওয়ায় পাঁচ কিলোমিটার গেলেই পড়বে কেন্দাপাড়া গ্রাম। কেন্দাপাড়া গ্রামের উত্তরে সেখানেই রয়েছে হাঁসাডুংরি। এখানে সাদা পাথরের পাহাড় চোখ ধাঁধিয়ে দেবে পর্যটকদের। লালজল পাহাড়ের পিছনে দিকে পাথরডাঙ্গা এলাকায় সাদা পাহাড় রয়েছে। আবার ওদলচুয়া হয়ে কাঁকড়াঝোড় যাওয়ার রাস্তায় বোদাডিহি গ্রামে রয়েছে সাদা পাহাড়। বোদাডিহি গ্রামের পাহাড়টি স্থানীয় ভাবে চাতন পাহাড় নামে পরিচিত। চাতন থেকে হাতিমারা দীর্ঘ পাহাড়টি সাদা পাহাড়। বোদাডিহির পাশাপাশি জড়কডাঙা, ডমগোড়, টুরকাডাঙা গ্রাম জুড়েই রয়েছে সাদা পাহাড়। পাহাড়গুলি পর্যটকদের কাছে এখন ‘সাদা পাহাড়’ নামে পরিচিত হচ্ছে। প্রতিটি পাহাড় জঙ্গল ঘেরা। সবুজ শাল গাছে ঘেরা এই পাহাড়টির চূড়ার দিকে চোখ গেলেই পর্যটকের মন আটকে যাবে। সহজ ভাবেই উপরে ওঠা যায় সাদা পাহাড়ে। সাদা পাহাড়ে উঠলেই চোখে পড়বে বড় বড় সাদা পাথরের চাঁই। সূর্যের আলো পড়লে চকচক করে উঠে পাথরগুলি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বোদাডিহি গ্রামের এই সাদা পাথরের পাহাড়টি চাতন পাহাড় নামে অনেকে চেনেন। এই পাহাড়ে বড় বড় সাদা পাথরের চাঁই রয়েছে। পাথরগুলিতে রোদ পড়লে চকচক করে উঠে। পাহাড়গুলিকে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। বেলপাহাড়ি টুরিজ়ম অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র বিধান দেবনাথ বলেন, ‘‘যাঁরা শুধু স্পট দেখতে আসেন তাঁদের কাছে সাদা পাহাড় পরিচিত নয়। যাঁরা বেলপাহাড়িতে প্রকৃতির উপভোগ করতে আসেন, তাঁদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।’’ সাদা পাহাড় ছাড়াও বেলপাহাড়িতে বাদামি ও হলুদ রংয়ের পাহাড়ও রয়েছে। বিধান জুড়ছেন, ‘‘সাদা পাহাড়গুলি রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন। এই সাদা পাথর চুরি হয়ে যাচ্ছে। সাদা পাথরের পাহাড়কে কেন্দ্র করে রক গার্ডেন করা হলে অনেকের নানা ধরনের পাথরের সঙ্গে পরিচিতি বাড়বে।’’
এ ব্যাপারে বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‘এখন মানুষজন এ রকম অফবিট জায়গায় যেতে পছন্দ করেন। জায়গাগুলি রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ করা হবে।’’