থার্মোকলে নয়, সরস্বতী পুজোয় খিচুড়ি খান শালপাতায়

কয়েক দিন বাদেই পুজো। দেবীর কাছে অঞ্জলি দেওয়া, জমিয়ে আড্ডা আর স্কুলের ‘ফিস্টে’ কবজি ডুবিয়ে খিচুড়ি-চচ্চড়ি-চাটনি আর পায়েস।

Advertisement

কেশব মান্না

হলদিয়া শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০১
Share:

স্কুলে স্কুলে বিলি করার জন্য শালপাতার ব্যবস্থা। নিজস্ব চিত্র

‘চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম’।

Advertisement

আর সে জন্য সরস্বতী পুজোকেই বেছে নিলেন পরিবেশ প্রেমীরা। কয়েক দিন বাদেই পুজো। দেবীর কাছে অঞ্জলি দেওয়া, জমিয়ে আড্ডা আর স্কুলের ‘ফিস্টে’ কবজি ডুবিয়ে খিচুড়ি-চচ্চড়ি-চাটনি আর পায়েস। কিন্তু এ সবের জন্য আর থার্মোকলের থালা নয়। এ বার পরিবেশ প্রেমীদের হাত ধরে পুজোর ভোজের আগেই স্কুলে স্কুলে পৌঁছে যাচ্ছে শালপাতা।

পড়ুয়াদের ফি-বছরের রীতিতে বদল আনতে এবং তাদের পরিবেশ সচেতন করতে একেবারে স্কুল পর্যায়ে প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন পরিবেশ প্রেমীরা। যে কোনও ‘ফিস্ট’ মানেই দেদার থার্মোকলের থালা-বাটি আর প্লাস্টিকের গ্লাসের ব্যবহার। ছোট থেকেই পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর এই ধরনের জিনিস বর্জন শেখাতে স্কুলই আদর্শ জায়গা বলে মত পরিবেশ প্রেমীদের।

Advertisement

উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন ধরে শিল্পতালুক হলদিয়া-সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে প্রচার অভিযান চালাচ্ছে স্থানীয় একটি পরিবেশপ্রেমী সংগঠন। ইতিমধ্যেই হলদিয়ার মনোহরপুর হাইস্কুল, দক্ষিণ চক হাইস্কুল, সুতাহাটা লাবণ্যপ্রভা গার্লস হাইস্কুল-সহ জেলার ৪১টি স্কুলে গিয়ে পড়ুয়াদের নিয়ে সচেতনতার পাঠ দিচ্ছেন সংস্থার সদস্যরা।

হলদিয়ার ওই পরিবেশ প্রেমী সংগঠনের কর্ণধার মধুসূদন পড়্য়া বলেন, ‘‘শৈশবে পরিবেশ রক্ষার পাঠ নেওয়া জরুরি। সরস্বতী পুজোয় ‘ফিস্ট’-এ যে ভাবে থার্মোকলের থালা-বাটি ব্যবহার হয়, তা পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই ছাত্রছাত্রীদের মাধ্যমে সর্ব সাধারণকে ক্ষতিকর থার্মোকলের জিনিস বর্জনের জন্য সচেতন করা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, স্কুলে স্কুলে গিয়ে শুধু থার্মোকল বর্জনের বিষয়ে নয়, বিকল্প শালপাতা ব্যবহারের উপকারিতাও বোঝানো হচ্ছে।

যদিও, পুর্ব মেদিনীপুর জেলায় থার্মোকলের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় শালপাতা ‘বাড়ন্ত’। তাই শালপাতার আকাল ঘোচাতে ঝাড়গ্রামের লোধাশুলি থেকে শালপাতা আমদানি করা হচ্ছে সংস্থার উদ্যোগে। পরিবেশ বাঁচাতে ওই সংগঠনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ছে স্কুলগুলিও। মনোহরপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রাণনাথ শেঠ জানান, প্রশংসনীয় উদ্যোগ। যে ভাবে ওই সংস্থা ছোটদের এ বিষয়ে সচেতন করতে উদ্যোগী হয়েছে তাতে পরিবেশে দূষণ যেমন কমবে, তেমনি ছোট থেকেই পরিবেশ রক্ষার পাঠ পাবে তারা। লাবণ্যপ্রভা গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কণা মণ্ডল বলেন, ‘‘প্লাস্টিক নিয়ে আমরাও চিন্তিত। তবে শালপাতা ব্যবহার শুরু হলে ভালই হবে।’’ সংগঠনের তরফে ইতিমধ্যেই একাধিক স্কুলে পরিবেশ নিয়ে নিয়মিত সচেতনতামূলক সেমিনার আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement