অভিযুক্তদের আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বুধবার মেদিনীপুর আদালতে। নিজস্ব চিত্র
পিটিয়ে খুনে একই পরিবারের পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। বুধবার এই সাজা শোনান মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার অভিযুক্ত পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক। বুধবার সাজা ঘোষণার দিন ছিল।
এই মামলার সরকারি আইনজীবী দেবাশিস মাইতি বলেন, ‘‘যে পাঁচজনের সাজা হয়েছে তারা মৃতের পরিবারেরই লোক।’’ দেবাশিস বলেন, ‘‘বিচারক মঙ্গলবার ওই পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। বুধবার তিনি সাজা ঘোষণা করেছেন।’’ তিনি জানান, পারিবারিক বিবাদের জেরেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছিল।
মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলাটি চলছিল। এই মামলায় ১২ জন সাক্ষী ছিলেন। ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর ঘটনাটি ঘটেছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের আনন্দপুরের করঙ্গপোতায়। ওই দিন বছর ছাপান্নর পূর্ণ ঘোষকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ করেছিলেন পূর্ণর ছেলে শ্যামল ঘোষ। অভিযোগ পেয়ে মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। খুনে অভিযুক্ত ছিলেন পূর্ণরই দুই ভাই আনন্দ, নন্দদুলাল, আনন্দর স্ত্রী পার্বতী, মেয়ে সমাপ্তি, নন্দদুলালের স্ত্রী পুষ্পরানি।
পুলিশ সূত্রে খবর, জমিজমা সংক্রান্ত পারিবারিক বিবাদের জেরেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছিল। মঙ্গলবার ৩০২ ধারা সহ ফৌজদারি দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক। বুধবার ছিল সাজা ঘোষণার দিন। পূর্ণর ছেলে শ্যামল বুধবার মেদিনীপুর আদালতে এসেছিলেন। শ্যামল বলেন, ‘‘ঘটনার সময়ে আমি বাড়িতে ছিলাম না। বাড়ির সামনেই বাবাকে খুন করা হয়েছিল।’’ দোষীরা তো আপনাদের পরিবারেরই? শ্যামল বলেন, ‘‘ওরা আমাদের পরিবারেরই। দুই জেঠু, দুই জেঠিমা এবং তাদের এক মেয়ে খুনের ঘটনায় যুক্ত ছিল।’’ শ্যামল বলেন, ‘‘বাবার সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত ছোট বিবাদ হয়েছিল ওদের। সেই কারণেই ওরা বাবাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করেছে। আদালতের রায়ে আমরা খুশি।’’
সাজাপ্রাপ্তদের অবশ্য দাবি, তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মেদিনীপুর আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে যাবেন বলেও তারা জানিয়েছেন। সাজা শুনে আদালত থেকে পুলিশি প্রহরায় লকআপে যাওয়ার পথে আনন্দর স্ত্রী পার্বতী দাবি করেন, ‘‘আমার ছেলে নেই। মেয়ে আছে। তাই সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।