শিল্পায়ন ও কাজের দাবিতে সিঙ্গুর থেকে শালবনি পর্যন্ত বামেদের পদযাত্রার সূচনা হয়েছে শনিবার। আর আজ থেকে একই দাবিতে বামেদের পদযাত্রা শুরু হচ্ছে নন্দীগ্রামের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া থেকে। সেই নন্দীগ্রাম যেখানে কেমিক্যাল হাব গড়ে তোলার জন্য ২০০৬ সালে শিল্প প্রকল্প নিয়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বধীন তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। কিন্তু ওই কেমিক্যাল হাব প্রকল্পের বিরোধিতা করে তৎকালীন বিরোধী তথা আজকের শাসক দল তৃণমূলের নেতৃত্বাধীন ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির জমিরক্ষা আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতি। শেষ পর্যন্ত ওই কেমিক্যাল হাব তৈরির প্রকল্প থেকে পিছিয়ে আসে রাজ্য সরকার।
হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের পাশে থাকা নন্দীগ্রামে তৃণমূলের একচ্ছত্র রাজনৈতিক আধিপত্য বজায় রয়েছে। সেখানে প্রকাশ্যে বামেদের কর্মসূচি হয়নি বললেই চলে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে বামেদের এই পদযাত্রার কর্মসূচির সূচনার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে নন্দীগ্রামের পাশে থাকা হলদিয়া শিল্পাঞ্চলকে। যে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল ছিল একসময় বামেদের শিল্পায়নের শো-পিস। তাই সিঙ্গুরে টাটার অসমাপ্ত ন্যানো কারাখানার কাছ থেকে যেমন বামেদের পদযাত্রা শুরু হয়েছে। একইভাবে নন্দীগ্রামের পাশে থাকা হলদিয়া শিল্পাঞ্চল থেকে একই দাবিতে আজ পদযাত্রার সূচনা হচ্ছে। দুই পদযাত্রারই গন্তব্য
একই, শালবনি।
পদযাত্রা শুরুর জন্য হলদিয়া কেন? সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল হল হলদিয়া। কিন্তু বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলে সেখানে নতুন শিল্পায়ন তো হয়নি বরং এখানে বেশ কিছু কারখানা
বন্ধ হয়েছে। তাই পদযাত্রার শুরুর জন্য হলদিয়া শিল্পাঞ্চলকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’’
জেলা বামফ্রন্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, বেঙ্গল প্লাটফর্ম ওফ মাস অর্গানাইজেশন বা বিপিএমও’র উদ্যোগে রবিবার সকাল ৯ টায় হলদিয়া টাউনশিপে পদযাত্রা উদ্বোধন করবেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ ও সিটুর রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে থাকছেন সাংসদ মহম্মদ সেলিম, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব, গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সভানেত্রী মিনতি ঘোষ-সহ জেলা বামফ্রন্টের নেতৃত্ব। হলদিয়া শহর থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রা প্রথম দিনে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক ধরে পৌঁছবে মহিষাদলে। পথে সুতাহাটা, চৈতন্যপুর ও মহিষাদলে সভা হবে। এরপর দ্বিতীয় দিনে ওই পদযাত্রা হলদিয়া–মেচেদা রাজ্য সড়ক ধরে নন্দকুমার বাজার, তমলুক শহরের মানিকতলা হয়ে তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়ক ধরে পৌঁছাবে তমলুকের নাইকুড়িতে। তৃতীয় দিনে নাইকুড়ি থেকে তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়ক ধরে পুরুষোত্তমপুর, পাঁশকুড়া পুরাতন বাজার হয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে রাতুলিয়ায় পৌঁছাবে। ওই দিন পুরুষোত্তমপুর, রাতুলিয়ায় সভা হবে। চতুর্থ দিনে রাতুলিয়া হয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ডেবরা হয় মাদপুর পৌঁছাবে। পঞ্চম দিনে মাদপুর থেকে মেদিনীপুর শহরের কাছে ধর্মায় পৌঁছে সিঙ্গুর থেকে আসা মূল পদযাত্রার সঙ্গে
যুক্ত হবে।