প্রতীকী ছবি।
দল বিরোধী কার্যকলাপ এবং শাসকদলের সঙ্গে আতঁতের অভিযোগে বহিষ্কার করা হল হলদিয়ার বাম বিধায়ক তাপসী মণ্ডলকে। তারই প্রতিক্রিয়া হিসাবে শুক্রবার তাপসী যে মন্তব্য করেছেন, তাতে তাঁর বিজেপি’তে যোগ দেওয়ার সম্ভবনাও বেড়ে গেল। অথচ চলতি মাসের শুরুতেই এই তাপসী নিজের বিধায়ক ‘প্যাডে’ লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন যে, এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যমে তাঁর বিজেপি’তে যোগদান নিয়ে মিথ্যা খবর পরিবেশন করছে।
বামফ্রন্ট সূত্রের খবর, বেশ কয়েকদিন ধরেই দলের কোনও কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছিল না তাপসীকে। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি অনুপস্থিত থাকতেন। একাধিক কর্মসূচিতে অনুপস্থিতিতে বিধায়কের বিজেপিতে যোগদানের গুঞ্জন রটে যায়। গত ১ ডিসেম্বর অবশ্য তাপসী লিখেছিলেন, ‘আমি দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করছি সংবাদমাধ্যমগুলির এ ধরনের অপপ্রচার সর্বৈব মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’।
এর পরেও এ দিন তাপসীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সিপিআইএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডলকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দল বিরোধী কার্যকলাপ, অনৈতিক কাজ, শাসকদলের সঙ্গে আঁতাত এবং আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করা হল।’’
অবশ্য বহিষ্কারের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি তাপসীর। এ দিন তাপসী বলেন, ‘‘টিভি দেখে জানতে পারলাম দল থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আসলে দলের ভিতরে থেকে মানুষের কাজ করতে পারছিলাম না। এ নিয়ে বারবার জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েও লাভ হয়নি।’’
তাহলে এবার কি অমিত শাহের সভায় গিয়ে বিজেপি’তে যোগ দিচ্ছেন?
তাপসীর জবাব, ‘‘শনিবার মেদিনীপুরে বিজেপির সভায় যেতেও পারি। আবার নাও যেতে পারি। বিজেপিতে যদি যাই তা হলে হলদিয়া মানুষের জন্যই যাব। জেলা নেতৃত্ব যে অভিযোগ করছেন আমার বিরুদ্ধে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’’ তাপসীর এ হেন মন্তব্যে তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা আরও বাড়ল।
তবে তৃণমূলের শক্তঘাঁটি পূর্ব মেদিনীপুরে লড়াই করে হলদিয়ার মতো বিধানসভায় এলাকায় এতদিন রয়েছেন তাপসী। ২০১৬ সালে তৃণমূলের মধুরিমা মণ্ডলকে ২০ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করে তিনি হলদিয়ার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিল। এমন নেত্রীর দল থেকে বহিষ্কার এবং তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা বাড়ায় চিন্তিত দলীয় কর্মীদের একাংশ। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই সিপিএমের জোনাল সম্পাদক শ্যামল মাইতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
দলের একাংশ কর্মীর অবশ্য দাবি, তৃণমূলের সঙ্গে আঁতাত করে তাপসীর ছেলের সরকারি চাকরি হয়েছে। যদিও সে কথা মানতে নারাজ বিধায়ক। তাপসী বলেন, ‘‘যদি সরকারি চাকরি তৃণমূলের কৃপায় হত, তাহলে হলদিয়াতেই পোস্টিং থাকত। কিন্তু ছেলে থাকে কোচবিহারে। নিজের যোগ্যতায় ও চাকরি পেয়েছে।’’