প্রতীকী ছবি।
নেতাই দিবসেই কুড়মিদের ‘হুড়কা জাম’। সে দিন আবার পাঁচশো বাইকের র্যালি করবে তৃণমূল।
স্থির হয়েছে, কাল, বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তৃণমূল কর্মীরা বাইক র্যালি করে ধেড়ুয়ায় পৌঁছবেন। ধেড়ুয়া থেকে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ি ‘এসকর্ট’ করে বাইক র্যালি পৌঁছবে লালগড়ে।
কুড়মিদের বন্ধের মধ্যে তৃণমূলের র্যালি ঘিরে পারদ চড়ছে। জানা যাচ্ছে, এই র্যালির উদ্যোক্তা ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক মহাশিস মাহাতো। কুড়মি জনজাতির এক দক্ষ সংগঠক এই মহাশিস। তাঁকে সামনে রেখেই তৃণমূল সে দিনের জট সামলাতে চাইছে বলে অনুমান।
কয়েক বছর আগে খড়্গপুর গ্রামীণের খেমাশুলিতে একটি কুড়মি সংগঠনের ‘রেল রোকো’ কর্মসূচিতেও মহাশিসকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল। কুড়মি সমন্বয় মঞ্চের নেতাদের সঙ্গেও মহাশিসের ব্যক্তিগত স্তরে যোগাযোগ রয়েছে। তাই হুড়কা জাম হলেও নেতাই শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানের জন্য শেষ মুহূর্তে ছাড় পাওয়ায় বিষয়ে আশাবাদী তৃণমূল শিবির। মহাশিস বলেন, ‘‘আমি নিজে কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ। সমন্বয় মঞ্চের ন্যায্য দাবি আদায়ের লড়াইয়ে আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে রাজ্য সরকার কুড়মালিকে দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কুড়মি উন্নয়ন বোর্ড গঠিত হয়েছে। নেতাইয়ে তৃণমূলের উত্তরাধিকার দখলের অপচেষ্টা করছে বিজেপি। তাই দলের নির্দেশে বৃহস্পতিবার পাঁচশো বাইকের র্যালির আয়োজন করছি।’’ মঞ্চের আহ্বায়ক সুশীল মাহাতো অবশ্য বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার আমাদের অবরোধস্থলগুলি দিয়ে কোনও যানবাহন যেতে দেওয়া হবে না। লালগড়ে যাওয়ার অনেক পথ রয়েছে। অবরোধস্থলগুলি বাদ দিয়ে ওরা যেতে পারলে যাবে।’’
বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম-সহ জঙ্গলমহলের চার জেলায় ‘হুড়কা জাম’ বা বন্ধ ডেকেছে কুড়মি সমন্বয় মঞ্চ। মঞ্চের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই দিন জরুরি পরিষেবা বাদে কোথাও চাকা ঘুরবে না। এমন আবহে নেতাই দিসবে তৃণমূল-বিজেপি-র কর্মসূচি ঘিরে শঙ্কা ঘনিয়েছে। প্রতিবারের মতো এ বারও নেতাই যাবেন বলে জানিয়েছেন সদ্য বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী। আর তৃণমূল নেতাইয়ের দু’কিমি আগে লালগড়ের হাটচালায় স্মরণসভা করবে। দলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতোর হুঁশিয়ারি, ‘মীরজাফর’ শুভেন্দুকে নেতাইয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। বিজেপি অবশ্য জানিয়েছে, ৭ তারিখ তাঁরা রাজনৈতিক কর্মসূচি করবে না। তবে শুভেন্দু নেতাইয়ে শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন। এমন টানটান আবহে মহাশিসকে মাঠে নামানোর পিছনে তৃণমূলের জাতিসত্তার অঙ্ক রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, ‘‘কুড়মিদের আন্দোলনের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা রয়েছে। সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে আমরা সংঘাতে যেতে চাই না। নেতাইয়ে মিছিল নিয়ে যেতে কুড়মি সমন্বয় মঞ্চের কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ করেছি।’’