সোমবার সকাল থেকে আবার জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।
পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে উঠে গিয়েছে রেল অবরোধ। কিন্তু জাতীয় সড়ক অবরোধ এখনও অব্যাহত। সোমবার সকাল থেকে আবার অবরোধ শুরু হয়েছে।
রেল অবরোধ উঠলেও খেমাশুলিতে ‘ঘাঘর ঘেরা’ আন্দোলনে চলা জাতীয় সড়ক অবরোধ কর্মসূচি থেকে সরবে না বলে রবিবার সাফ জানিয়ে দেয় পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজ। পরে অবশ্য সুর নরম করে অবরোধ শিথিল করার করা ঘোষণা করা হয়। সন্ধ্যায় ঘোষণা করা হয়, অবরোধের সময়সীমা শিথিল করা হবে। এতদিন ২৪ ঘণ্টাই চলছিল অবরোধ। সংগঠনের তরফে জানানো হয়, রাত ১ টা থেকে সকাল ৬টা এবং সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত অবরোধ শিথিল করা হবে। কুড়মি সংগঠনের নেতা রাজেশের মাহাতো বলেন, ‘‘মানুষের অসুবিধার কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’’ সেই সিদ্ধান্ত মতোই রবিবার রাত ১টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যম্ত অবরোধ শিথিল থাকে। সকাল ৬টা থেকে আবার অবরোধ শুরু হয়।
কুড়মি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, সকাল ১০টা পর্যন্ত এই অবরোধ চলবে। তার পর তা কিছু ক্ষণের জন্য শিথিল করা হবে। অবরোধ আবার শুরু হবে দুপুর ৩টে থেকে। যা চলবে রাত ১টা পর্যন্ত।
কুড়মিদের কর্মসূচি ঘিরে টানাপড়েন চলছেই। পৃথক দুই কর্মসূচিতে নেমেছিল কুড়মিদের দুই সংগঠন। এক সংগঠনের একাংশ রবিবার সকালে পুরুলিয়ায় রেল অবরোধ তুলে নেয়। আদিবাসী কুড়মি সমাজের অন্য অংশ তখনও পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে আন্দোলনে অটল থাকে। কুড়মিদের অন্য সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজ সন্ধ্যায় জানায়, খেমাশুলিতে টানা জাতীয় সড়ক অবরোধ হবে না। এর কিছু ক্ষণ পর দেখা গেল, খেমাশুলিতে রেললাইন ফাঁকা। নেতারা উধাও হয়েছিলেন আগেই। পরে দেখা মিলল না আদিবাসী কুড়মি সমাজের আন্দোলনকারীদের। এক আন্দোলনকারী ব্যানার পতাকা খুলে বাড়ির পথে রওনা হন। রাতে রেল জানাল, উঠে গিয়েছে কুড়মিদের অবরোধ। রাত ৮টার কিছু পরে প্রথমে চলল মালগাড়ি। কিন্তু কেন এই সমন্বয়ের অভাব? পুরুলিয়ার অবরোধ ওঠার পর সেই সিদ্ধান্ত খেমাশুলিতে কার্যকর হতে কেন গড়িয়ে গেল প্রায় ১০ ঘণ্টা। আদিবাসী কুড়মি সমাজের পশ্চিম মেদিনীপুরের সভাপতি কমলেশ মাহাতো বলেন, ‘‘পুরুলিয়ায় গিয়েছিলাম। ফিরতে দেরি হয়েছে। তাই দেরি।’’
গত ৫ এপ্রিল থেকে পুরুলিয়ার কুস্তাউর এবং মেদিনীপুরের খড়্গপুরের মাঝে খেমাশুলিতে অবরোধ কর্মসূচিতে শামিল হয়েছিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ। খেমাশুলিতে রেল এবং জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। আবার গত ৪ এপ্রিল থেকে সেই খেমাশুলিতেই জাতীয় সড়ক অবরোধে নেমেছিল পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজ। নেতৃত্ব ছিলেন রাজ্য নেতা রাজেশ মাহাতো। দু’পক্ষের দাবি ছিল, কুড়মিদের তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি-সহ কয়েকটি দাবি পূরণ করতে হবে। এর জন্য রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের ‘কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট’(সিআরআই)-কে পরিমার্জিত রিপোর্ট পাঠাতে হবে। সেই রিপোর্ট না পাঠালে অবরোধ উঠবে না।