Kumorpara Contai

বাড়তি বায়নায় দুর্ভাবনার মেঘ কেটে আলো কুমোরপাড়ায়

মৃৎশিল্পীরা জানাচ্ছেন, এ বার বায়না এতটাই বেশি এসেছে যে, হাতে আর সময় না থাকায় অনেককেই বেশ কিছু বায়না ফিরিয়ে দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:০৭
Share:

খারাপ আবহাওয়ার আশঙ্কায় আগেভাগে বিশ্বকর্মার মূূর্তি গড়ার কাজ চলছে জোরকদমে। কাঁথিতে। —নিজস্ব চিত্র।

বাতাসে একটু-একটু করে দুর্গাপুজোর গন্ধ আসা শুরু হয়েছে। তার আগেই আবার রয়েছে গণেশ ও বিশ্বকর্মা পুজো। তাই কুমোরপাড়ায় ব্যস্ততা তুঙ্গে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে দিনরাত জেগে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা।

Advertisement

দুর্গা পুজোর ‘হেরিটেজ’তকমা বাড়তি মনোবল জুগিয়েছে জেলার মৃৎশিল্পীদেরও। করোনা পরিস্থিতির জেরে গত তিন বছর তেমন বাড়তি জাঁকজমক ছাড়াই অধিকাংশ জায়গায় পুজো হয়েছে। এ বার শারদোৎসবে ফের পুরনো তাক লাগানো আয়োজন ফিরে আসবে বলে অনেকেই আশাবাদী। এ বছর বেড়েছে প্রতিমা বায়নার সংখ্যাও।

মৃৎশিল্পীরা জানাচ্ছেন, এ বার বায়না এতটাই বেশি এসেছে যে, হাতে আর সময় না থাকায় অনেককেই বেশ কিছু বায়না ফিরিয়ে দিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই মৃৎশিল্পীদের পাড়ায় খুশির হাওয়া। শুধু অল্প ভাবনা কাঁচা মালের দাম নিয়ে। ২০২০ সাল থেকে কোভিড আতঙ্ক থাবা বসিয়েছিল মৃৎশিল্পীদের কাজের উপর। দুশ্চিন্তার ছবিটা দু’-তিনটি বছর বদলায়নি। মৃৎশিল্পী চতুর্ভুজ বারিক বলছেন, "গত বছর ১৭টি প্রতিমা তৈরি করেছিলেন। এ বার ১৯টি প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। ঝাড়খণ্ডের মতো অন্য রাজ্য থেকে এবং পাশের জেলা ঝাড়গ্রাম এমনকি কলকাতার তপসিয়া থেকেও কাজ পেয়েছি।’’চতুর্ভুজের আরও বলেন, "গত কয়েক বছর শুধু স্থানীয় উদ্যোক্তাদের প্রতিমা বানিয়েছিলাম। খরচ অনুপাতে অর্থ মেলেনি। সহযোগীদের টাকা মেটাতে বাধ্য হয়ে আমাকে নিজের বাড়ি পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছিল। এ বার এত বায়না যে, মাটি জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছি।"পুজোর আর মাত্র মাস দেড়েক বাকি। তাই এখন মৃৎশিল্পীদের কারখানায় ব্যস্ততা তুঙ্গে। শেষ বেলায় অনেকেই কম উচ্চতার প্রতিমা তৈরীর বরাত দিতে আসছেন। আর এক মৃৎশিল্পী জয়দেব বর্মন বলছেন, "কলকাতার দুর্গা পুজোকে ইউনেস্কো ‘হেরিটেজ’ স্বীকৃতি দেওয়ায় শিল্পীদের ভাগ্য ফিরেছে। এ বছর আমরা অনেক বায়না পাচ্ছি। পরপর তিনটে পুজো কমিটির বায়না এসেছে।’’তবে বায়না বেশি সংখ্যায় মিললে ও দুর্গা প্রতিমা তৈরির খরচ অনেকটাই বেড়েছে বলে দাবি মৃৎশিল্পীদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, "প্রতিমা তৈরির জন্য মাটি, গহনা আর কাপড়, রঙ—সব কিছুই দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে। তা ছাড়া, হাতে সময় কম থাকায় বাড়তি লোকের দরকার। কিন্তু এই পেশাতে নতুন প্রজন্ম আর আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ফলে সহযোগী শিল্পী বা কারিগর মিলছে না।’’দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিমা তৈরির সঙ্গে যুক্ত শিল্পী সৌমেন মাইতি বলছেন, "গোটা সেপ্টেম্বর মাসের আবহাওয়া কেমন থাকে, এখন সে দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে। চলতি বছর সে রকম বৃষ্টি হয়নি। সেপ্টেম্বরের আবহাওয়া কতটা খামখেয়ালিপনা দেখাবে, বোঝা দায়। বৃষ্টি মানেই সমস্যা। তাই দ্রুত কাজ সারতে হচ্ছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement