পূর্ণিমার কোটালের জলে প্লাবিত কোলাঘাটের নতুন বাজার।
ভরা কোটালে প্লাবিত কোলাঘাট নতুন বাজার হাট এলাকা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটু জলে দাঁড়িয়ে দুর্ভোগ পোহালেন এলাকাবাসী। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা ইংরেজ আমলের ভাঙা লকগেট মেরামতির দাবিতে সোচ্চার হলেন।
কোলাঘাটে রূপনারায়ণ নদের গৌরাঙ্গ ঘাটের অদূরে রয়েছে একটি লকগেট। ইংরেজ আমলে এই লকগেটটি তৈরি হয়েছিল মূলত এলাকার সেচ ও নিকাশি ব্যবস্থার জন্য। এক সময় এই লকগেট দিয়ে কোলাঘাট ব্লকের বড়িশা, বাড় বড়িশা, কোলা ও কুখাবাড় প্রভৃতি এলাকার বর্ষার জল বের হয়ে রূপনারায়ণে পড়ত। শুখা মরসুমে জোয়ারের জল বড় নালা দিয়ে এসে এলাকার বোরো চাষের জলের প্রয়োজন মেটাত।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, লকগেটটির একটি মাত্র বড় দরজা বছর পাঁচেক আগে ভেঙে যায়। এক সময় যে নালা দিয়ে জোয়ারের জল বাইরে বেরিয়ে যেত সেই নালাটি বর্তমানে মজে গিয়েছে। ফলে ভরা জোয়ারের সময় ওই ভাঙা দরজা দিয়ে জল ঢুকে প্লাবিত হয় কোলাঘাট নতুন বাজার হাট এলাকা। গত শনিবার সেই ভাবেই প্রায় শতাধিক দোকান ও বাড়িতে জোয়ারের জল ঢুকে বিপত্তি বাধে। সে দিন পূর্ণিমার ভরা কোটালে দিনের বেলায় জলমগ্ন হয়ে পড়ে কোলাঘাটের নতুন বাজার এলাকা। ভাটার সময় জল নামলেও রাতে ফের জোয়ারে জল ঢুকে পড়ে এলাকার দোকান ও বাড়িতে। বড় বিপত্তির আশঙ্কায় রাতভর পাহারা দেন স্থানীয়রা। এলাকারা মানুষের অভিযোগ, লকগেট মেরামতির জন্য সেচ দফতরকে বারবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মদন পড়িয়া বলেন, ‘‘লকগেটের কারণে ভরা জোয়ারের সময় দোকানে জল ঢুকে যায়। এমনিতেই লকডাউনে সমস্যায় রয়েছি। তার উপর জল ঢুকে ব্যবসাপত্তর লাটে ওঠার জোগাড়।’’ স্থানীয় বাসিন্দা অসীম দাস বলেন, ‘‘প্রায় পাঁচ বছর ধরে ভরা কোটালের সময় আমার বাড়িতে জল ঢুকে যায়। যতক্ষণ না ভাটা শুরু হয়, ততক্ষণ ঘরের বাইরে থাকতে হয়। সেচ দফতর মাঝে মাঝে পরিদর্শনে আসে। ব্যস ওই পর্যন্তই। ভাঙা লকগেট মেরামতির জন্য কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি আজ পর্যন্ত।’’
কিছুদিন পর ষাঁড়াষাঁড়ির বান। ফলে আতঙ্কে রয়েছেন রূপনারায়ণের পাড়ের বাসিন্দারা। এ ব্যাপারে সেচ দফতরের পাঁশকুড়া ১-এর এসডিও ললিত চৌধুরী বলেন, ‘‘খুব শীঘ্রই লকগেট সরানোর কাজ শুরু হবে।’’