খসে পড়েছে পলেস্তারা।
ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। চারিদিকে ভগ্নপ্রায় দশা। অথচ সেখানেই পেটের অসুখ কিংবা কোনও জরুরি চিকিৎসা করাতে আসা রোগীকে বিছানায় শুইয়ে রাখা হয়েছে। এটা খেজুরি-২ ব্লকের জনকা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ছবি।
প্রতি মুহূর্তে বিপদের হাতছানি। অথচ সরকারি হাসপাতালের ভবন সংস্কারের জন্য স্বাস্থ্য দফতর কিংবা প্রশাসনিকভাবে কোনও উদ্যোগই নেই বলে অভিযোগ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা রোগী ও রোগীর পরিজনদের। ঝুঁকি নিয়েই রোগীদের চিকিৎসা করাতে বাধ্য হচ্ছেন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকেরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পুরনো ভবনের পাশে আরও একটি নতুন ভবন তৈরি হয়েছে। সেখানে ১০টি শয্যা রয়েছে। বহির্বিভাগের পাশাপাশি অন্তর্বিভাগেও নিয়মিত প্রচুর রোগী পরিষেবা পাওয়ার জন্য আসেন। মূলত প্রসূতিদের নতুন ভবনে চিকিৎসা করা হয়। তবে পায়খানা কিংবা বমির মতো উপসর্গে আক্রান্ত রোগীদের নতুন ভবনে শয্যা সংকুলান না হওয়ায় তাঁদের পুরনো ভবনেই চিকিৎসা করা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পুরনো ভবনটি দীর্ঘদিন ধরেই জীর্ণ। পুরুষ বিভাগে একাধিক জায়গায় ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়েছে। তা সত্ত্বেও সেখানেই রোগীর চিকিৎসা চলছে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শিল্যাবেড়িয়ায় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসকের অভাব। তা ছাড়া সন্ধ্যার পর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার বাস মেলে না। তাই ব্লকের অধিকাংশ মানুষ জনকা আলেকজান্দ্রা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক চন্দ্রশেখর মাইতি বলেন, ‘‘অবিলম্বে ভবনের সংস্কার জরুরি। অন্যথায় যে কোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। আমরা স্বাস্থ্য দফতর এবং প্রশাসনের সর্বস্তরে বিষয়টি জানিয়েছি।’’
স্থানীয় বাসিন্দা ও খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতির নারী ও শিশু কল্যাণ কর্মাধ্যক্ষ দীপান্বিতা মিশ্র বলেন, ‘‘হাসপাতালের ভবন নির্মাণ এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে একাধিকবার লিখিত আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু হাসপাতালের ভবন সংস্কার হয়নি। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই রোগীদের চিকিৎসা করাতে যেতে হচ্ছে।’’ তবে জেলা প্রশাসন সূত্রে গিয়েছে, জনকা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পুরনো জীর্ণ ভবনটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাস বলেন, ‘‘পুজোর পরেই পূর্ত দফতরের সঙ্গে কথা বলা হবে। তারপর গ্রাম পঞ্চায়েত কিংবা পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে ভগ্নপ্রায় ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে। তবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবনে চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে।’’