তিন থানাতেই নয়া আদালত

মঙ্গলবার খড়্গপুরের শহরের উপকন্ঠে গ্রামীণ এলাকার মীরপুরে আদালতের উদ্বোধন হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২০ ০১:১৯
Share:

উদ্বোধনের পরে নতুন খড়্গপুর মহকুমা আদালত। নিজস্ব িচত্র

পরিকাঠামোয় ঘাটতি ছিল না। অথচ আদালত চালুতে বারবার আসছিল বাধা। থানা ভাগাভাগি নিয়ে সমঝোতা করেও সুফল মেলেনি। জেলা আদালতে এখনও চলছে আইনজীবী ধর্মঘট। গত নভেম্বরে দিনক্ষণ ঠিক করেও উপ-নির্বাচনের জন্য উদ্বোধন পিছোতে হয়েছিল। দীর্ঘ টানাপড়েন শেষে মাত্র তিনটি থানা নিয়ে চালু হল খড়্গপুর মহকুমা আদালত!

Advertisement

মঙ্গলবার খড়্গপুরের শহরের উপকন্ঠে গ্রামীণ এলাকার মীরপুরে আদালতের উদ্বোধন হয়। ভিডিয়ো কনফারেন্সে আদালতের উদ্বোধন করেন কলকাতা হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করন নায়ার রাধাকৃষ্ণন। সঙ্গে ছিলেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক। খড়্গপুরের আদালত চত্বর সাজানো হয়েছিল। মঞ্চে ছিলেন জেলা বিচারক অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলাশাসক রশ্মি কমল প্রমুখ। তবে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের থাকার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। আপাতত খড়্গপুর টাউন, নারায়ণগড় ও কেশিয়াড়ি থানার নানা মামলার বিচার এই আদালতে হবে। এর জন্য এখন এই আদালতে রয়েছে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের(এসিজেএম) এজলাস। এ ছাড়াও রয়েছে সিভিল কোর্টের সিনিয়র ডিভিশন ও জুনিয়র ডিভিশন এবং দু’টি ফার্স্টক্লাস বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাস। এ দিন আদালতের উদ্বোধনের পরে ভিডিয়ো কনফারেন্সে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতি বলেন, “এই আদালত চালু হওয়ায় সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন।”

প্রথম দিনেই মদ্যপানের অভিযোগে ধৃত নারায়ণগড়ের ১০জন, কেশিয়াড়ির ৪জন ও খড়্গপুরের ৮জনকে নয়া আদালতে হাজির করানো হয়। এ ছাড়াও কেশিয়াড়ির একজন ও খড়্গপুর টাউনের একজনকে আবগারি মামলায় এসিজেএম সৌমেন গুপ্তের এজলাসে হাজির করানো হয়। তাঁদের মধ্যে মদ্যপানের অভিযোগে ধৃত ২২জন ও খড়্গপুর টাউনে মদ পাচারের মামলায় ধৃতের জামিন দিয়েছেন বিচারক।

Advertisement

এত দিন মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা আদালত ছিল খড়্গপুর মহকুমার ভরসা। ১৯৮৪ সালে দাঁতনের মুন্সেফ আদালত ফৌজদারি ও দেওয়ানি আদালতে উন্নীত হয়। যদিও গ্রেফতারের পরে মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার অভিযুক্তদের মেদিনীপুর নিয়ে যেতে সমস্যায় খড়্গপুরে মহকুমা আদালত চালুর দাবি ওঠে। ২০০৭ সালে তার অনুমোদন মেলে। পূর্ত দফতরের মাধ্যমে ২০০৮ সালে খড়্গপুরে মহকুমা আদালতের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ধীর গতিতে কাজে মাঝে দাঁতনের আদালতেই ২০১৮-এর অগস্টে চালু হয় অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাস। সেখানে মহকুমার দাঁতন, মোহনপুর ও বেলদা থানার নানা মামলায় অভিযুক্তদের এখন হাজির করানো হয়।

মহকুমার বাকি ৭টি থানার ভরসা ছিল সেই জেলা আদালত। খড়্গপুরে বছর খানেক আগে তিনতলা আদালত ভবন নির্মাণ শেষ হয়। কিন্তু উদ্বোধন তোড়জোড় শুরু হতেই আন্দোলনে নামেন মেদিনীপুরের আইনজীবীরা। ঠিক হয়, ৭টি থানার মধ্যে আপাতত মাত্র ৩টির জন্য এই মহকুমা আদালত উদ্বোধন হবে। অবশ্য মেদিনীপুরের আইনজীবীরা আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত আন্দোলন চালানোর কথা বলেছেন। তবে খুশি বার অ্যাসোসিয়েশন খড়্গপুরের ৯০জন আইনজীবী। তবে সংগঠনের সম্পাদক কুণাল দত্ত বলেন, “তিনটি থানা নিয়ে এই আদালত চালু কেন চালু হল সেটা আমরাও জানি না। এর আওতায় মহকুমার সব থানা থাকা উচিত। বিষয়টি নিয়ে পরে আলোচনা করব।” জেলাশাসক বলেন, “আপাতত ৩টি থানা রয়েছে। আগামীদিনে আমরা হয়তো বাকি থানা অন্তর্ভুক্ত করব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement